শিক্ষার্থীদের দিকে ছোড়া সাউন্ড গ্রেনেডে আহত ৩ পুলিশ, ১০ বিক্ষোভকারী আটক
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ সারাদেশে শিক্ষার্থীদের আটক-গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে ছোড়া সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেলের আঘাতে অন্তত তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
এ ছাড়া, বিক্ষোভরত অন্তত ১০ শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ জোন) মোস্তাফিজুর রহমান।
পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নগরীর জামালখান এলাকায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ করার কথা ছিল।
এর আগে, দুপুর ১২টার দিকে ওই এলাকায় পুলিশ ও বিজিবি অবস্থান নেয় এবং সেনাবাহিনী টহল দেয়। এ ছাড়াও নগরীর বিভিন্ন মোড়ে নতুন করে তল্লাশি চৌকি বসায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এর মধ্যেই বিকেল ৩টার দিকে চেরাগীর মোড়ে জড়ো হন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল-কলেজের প্রায় ১০০ শিক্ষার্থী।
তখন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের স্থানীয় কাউন্সিলর শৈবাল দাস সুমনের নেতৃত্বে প্রায় ১০০-১৫০ ছাত্রলীগ-যুবলীগকর্মী সেখানে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়।
তারা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বিভিন্ন স্লোগান দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয় এবং একপর্যায়ে হাতাহাতিও হয়।
এসময় যুবলীগকর্মীরা ৪-৫ জন শিক্ষার্থীকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। আন্দোলরত শিক্ষার্থীরা আটককৃতদের ছুটাতে গেলে তাদের সঙ্গে পুলিশের হাতাহাতি হয়।
পুলিশ সেসময় লাঠিচার্জ শুরু করলে শিক্ষার্থীরা রাস্তার অন্য পাশে সরে গিয়ে বসে অবস্থান নেয় এবং বিভিন্ন স্লোগান দেয়।
বিকেল ৪টার দিকে পুলিশ আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ শুরু করে। এগুলো ছোড়ার সময় তিন পুলিশ সদস্য মাথায়, চোখে গুরুতর আঘাত পান।
তারা হলেন—কোতোয়ালি জোনের সহকারী কমিশনার অতনু চক্রবর্তী, এসআই মোশারফ হোসেন হাবিব ও এসআই মেহেদী হাসান শুভ।
এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে আশেপাশের অলিগলিতে ছড়িয়ে গেলে, পুলিশ সেখানে তল্লাশি চালায়। সেসময় ৬-৭ জন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়।
এরপর পরিস্থিতি শান্ত হয়ে এলে, বিকেল ৫টার দিকে পুলিশ ফিরে যাওয়ার সময় আন্দরকিল্লা মোড়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে একদল বিক্ষোভকারী।
সেখানেও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের আরেক দফা সংঘর্ষ হয় এবং পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
এরপর সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল।
জানতে চাইলে উপকমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'কারফিউ চলছে, এ অবস্থায় বিক্ষোভ মিছিল, সভা নিষিদ্ধ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
Comments