শিশু হঠাৎ কিছু গিলে ফেললে করণীয় কী

শিশু হঠাৎ কিছু গিলে ফেললে করণীয়
ছবি: সংগৃহীত

শিশুরা প্রায়ই এটা-সেটা মুখে দিয়ে গিলে ফেলে। ফলে আতঙ্কে থাকতে হয় বাবা-মাকে। এ অবস্থায় কী হতে পারে এবং করণীয় সম্পর্কে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি ও নিউট্রিশন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রুবাইয়াত আলম রুবা।

শিশুর হঠাৎ কিছু গিলে ফেলার ঝুঁকি

ডা. রুবাইয়াত আলম বলেন, ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুরা অনেক বেশি চঞ্চল এবং কৌতূহলী হয়। নতুন যেকোনো জিনিস শিশুরা জানতে চায়, দেখতে চায়, মুখে নিয়ে স্বাদ বুঝতে চায়। সে কারণে এই বয়সেই শিশুর হঠাৎ কিছু গিলে ফেলার ঘটনা অনেক বেশি দেখা যায়।

আমাদের শরীরের অংশ নয় এরকম যেকোনো জিনিসই হচ্ছে ফরেন বডি। যে শিশুরা ফরেন বডি খায় তার মধ্যে ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশের বয়স ৫ বছরের নিচে। শিশুরা পয়সা, পুঁতি, খেলনা, খেলনার ছোট অংশ, সেফটি পিন, ব্যাটারি, চুম্বক, গলার লকেট, মার্বেল, ফলের দানা থেকে শুরু করে নানা ধরনের দ্রব্য গিলে ফেলতে পারে। সবচেয়ে ঝুঁকির হচ্ছে ছোট ছোট গোল ব্যাটারি যেগুলো ঘড়িতে থাকে সেই বাটন ব্যাটারি, চুম্বক, যেকোনো ধারালো বস্তু গিলে ফেলা।

শিশু যদি হঠাৎ কিছু গিলে ফেলে তার প্রভাব নির্ভর করে গিলে ফেলা বস্তুটির আকার, ধরন এবং অবস্থানের ওপর। গিলে ফেলা বস্তুটি শ্বাসনালীতে চলে যেতে পারে। এছাড়া খাদ্যনালি হয়ে পাকস্থলীতে চলে যেতে পারে, অনেক সময় অন্ত্রেও চলে যেতে পারে।

গিলে ফেলা বস্তুটি যদি শ্বাসনালীতে চলে যায় সেটি সবচেয়ে ভয়ের এবং ঝুঁকিপূর্ণ। এ সময় শিশুর শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু করে শ্বাস আটকে যাওয়া বা চোকিং, ঘড়ঘড় করা, অস্থিরতা, যন্ত্রণার উপসর্গ দেখা দেয়। বস্তু শ্বাসনালীতে আটকে যাওয়ার ফলে নিঃশ্বাস আটকে গিয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এটি সবচেয়ে জরুরি অবস্থা।

খাদ্যনালীতে আটকে থাকলে খাবার গিলতে অসুবিধা হবে, কাশি হবে, মুখ দিয়ে লালা পড়বে, অনেক সময় রক্তবমি হতে পারে, গিলে ফেলা বস্তু খাদ্যনালীতে আটকে থাকার কারণেও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। যদিও খাদ্যনালীতে খুব কম অংশই আটকে থাকে।

আর গিলে ফেলা বস্তুটি খাদ্যনালী থেকে যদি পাকস্থলীতে যায় তাহলে বেশিরভাগ সময় মলের সঙ্গে বের হয়ে যায়। গিলে ফেলা বস্তু অ্যান্ডোস্কোপি করে বের করতে হয় ১০ থেকে ২০ ভাগের। বেশিরভাগই দেখা যায় মলের সঙ্গে এমনিতেই বের হয়ে যায়।

করণীয়

ডা. রুবাইয়াত আলম বলেন, শিশুরা কোনো কিছু গিলে ফেললে সাধারণত নিজে থেকে বলে না। এক্ষেত্রে বাবা-মা, পরিবারের সদস্য, কেয়ারগিভার যারা সামনে থাকে তাদের খেয়াল রাখতে হবে। শিশু যদি কোনো বস্তু গিলে ফেলে অনেক সময় লক্ষণ দেখা যায়, আবার অনেক সময় যায় না। কিছু গিলে ফেলেছে সেটা সামনে থেকে দেখলে অথবা শিশুর শ্বাসকষ্ট হচ্ছে, বমি হচ্ছে, গিলতে পারছে না, মুখ দিয়ে লালা পড়ছে এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। এক্স-রে করে দেখতে হবে গিলে ফেলা বস্তুটির অবস্থান কোথায় এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসক সিদ্ধান্ত নেবেন।

বিশেষ করে ৬ মাস থেকে ৩ বছর বয়সী শিশুদের কৌতূহল সবচেয়ে বেশি। এই সময় শিশুদের প্রতি বাবা-মা ও অভিভাবকদের বাড়তি নজর দিতে হবে, সচেতন হতে হবে। খেলার জন্য বড় জিনিস, নরম জাতীয় জিনিস দিতে হবে। যেকোনো ধারালো বস্তু, ব্যাটারি, চুম্বক, সহজে গিলে ফেলতে পারে এমন কোনো কিছুই শিশুর সামনে যাতে না থাকে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Money laundering: NBR traces Tk 40,000cr in assets abroad

The National Board of Revenue has found assets worth nearly Tk 40,000 crore in five countries which it believes were bought with money laundered from Bangladesh, said the Chief Adviser’s Office yesterday.

3h ago