চাঁদা না পেয়ে পরিবহন ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ শ্রমিক দল নেতার বিরুদ্ধে

ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ শ্রমিক দল নেতার বিরুদ্ধে। ছবি: সিসিটিভি ফুটেজ থেকে নেওয়া

ঢাকার আশুলিয়ায় চাঁদা না পেয়ে এক পরিবহন ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক শ্রমিক দল নেতা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে আশুলিয়ার সোনামিয়া মার্কেট এলাকায় ওই পরিবহন ব্যবসায়ীকে মারধর করা হয় বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আব্দুস সাত্তার।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আব্দুর রহমান ও আমি দীর্ঘ দিন যাবত আশুলিয়া এলাকায় অংশীদারত্বের মাধ্যমে কাভার্ড ভ্যানের ব্যবসা করি। গত কয়েকদিন যাবত ধামসোনা ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি জয়নাল আবেদিন, তার সহযোগী সাবেক যুবলীগ এবং বর্তমানে যুবদলের কর্মী শাহিন ও আওলাদ হোসেন আমাদের কাছে মাসিক ২০ হাজার টাকা হারে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। চাঁদা না দেওয়ায় আজ সকালে শ্রমিক দল সভাপতি জয়নালের নেতৃত্বে জয়নালসহ শাহীন, আওলাদ এবং আরও কয়েকজন আমাকে এলোপাথাড়ি মারধর করে। সেই সময় অন্যদের পাশাপাশি জয়নাল আমাকে ইট দিয়ে বেশ কয়েকবার মাথায় আঘাত করে।

'মারধরের পর তারা আমার কাছে থাকা ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে আমাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে', বলেন তিনি।

এই ব্যবসায়ী আরও জানান, চাঁদা না দিলে শ্রমিক দল নেতা জয়নাল ও তার সহযোগীরা তাকে ব্যবসা করতে না দেওয়ার পাশাপাশি এলাকা ছাড়া করার হুমকিও দেয়।

'এ ঘটনায় আমার পার্টনার আব্দুর রহমান বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন', বলেন আব্দুস সাত্তার।

ভুক্তভোগী পরিবহন ব্যবসায়ীকে মারধরের কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজ দ্য ডেইলি স্টারের হাতে এসেছে।

ফুটেজে দেখা যায়, একটি রাস্তার ওপর কয়েকজন লোক দাঁড়িয়ে আছেন। সেখানে আব্দুস সাত্তার উপস্থিত হতেই এক ব্যক্তি তাকে লাথি-কিল-ঘুষি মারতে শুরু করেন। এর পরপরই সেখানে উপস্থিত আরেক ব্যক্তি সড়কের পাশ থেকে কিছু একটা উঠিয়ে সাত্তারের মাথায় আঘাত করতে থাকেন। তাদের মধ্যে উপস্থিত একজনকে অন্যদের নিবৃত করার চেষ্টা করতে দেখা যায়।

অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে আশুলিয়ার ধামসোনা ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি জয়নাল আবেদীন ডেইলি স্টারকে টেলিফোনে বলেন, আমরা মারধর করিনি। উল্টো তারা আমাকে মারধর করেছে। তারা আওয়ামী লীগ। আমি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি। থানায় অভিযোগ করেছি।

সাত্তারকে মারধর করা হচ্ছে এমন ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে, বিষয়টি জানালে তিনি বলেন, 'সন্ধ্যায় থানার এখানে আইসেন। সাক্ষাতে কথা বলব।'

পরিবহন ব্যবসায়ীকে মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, বিষয়টি আমরা জেনেছি। দুই পক্ষই মারধরের অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাংবাদিককে হুমকি

এদিকে অভিযুক্ত শ্রমিক দল নেতা জয়নাল আবেদীনকে ফোন করার কিছুক্ষণ পর ডেইলি স্টার প্রতিবেদককে ফোন করে হুমকি দেন আশুলিয়া থানা বিএনপির সহসভাপতি নজরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, 'আপনি আমার সভাপতি জয়নালকে ফোন দিয়েছেন কেন। ওরা (মারধরের শিকার ব্যবসায়ী) আওয়ামী লীগ, আপনার কাছে অভিযোগ দেওয়ার কে। আপনি সাংবাদিক, অভিযোগ নেওয়ার কে? থানা পুলিশ কি মরে গেছে? আগের সাংবাদিকতা বাদ দেন, নতুবা সমস্যা হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Bangladeshis worry amid US immigration crackdown

The United States has deported at least 31 Bangladeshis after President Donald Trump took a tough immigration policy.

5h ago