গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বৈষম্যহীন সমাজের ‘ভিশন’ বাজেটে আসেনি: নাহিদ

নাহিদ ইসলাম। ফাইল ছবি

বৈষম্যহীন সমাজের ভিশন (লক্ষ্য) বাজেটে আসেনি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বাংলামোটরে দলের অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

নাহিদ বলেন, 'জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার যখন দায়িত্ব গ্রহণ করে, বাংলাদেশের অর্থনীতি তখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ছিল। সবার প্রত্যাশা ছিল এই অর্থনৈতিক ব্যবস্থার একটা রূপান্তর ঘটবে। গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার একটা ভিশন, অর্থনৈতিক রূপান্তরের একটা নীতি এই বাজেটে মধ্যে দিয়ে পাওয়া যাবে বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু বাজেটে আগের অর্থনৈতিক কাঠামোরই ছাপ দেখা যাচ্ছে।'

তিনি বলেন, 'অন্তর্বর্তী সরকার বর্তমান সময়ের অর্থনৈতিক সমস্যাগুলো অ্যাড্রেস (নিরূপণ) করতে পেরেছে। কিন্তু এর সঠিক সমাধান-কৌশল কিংবা বৈষম্যহীন সমাজের ভিশন (লক্ষ্য) এই বাজেটের মধ্য দিয়ে আসেনি। নতুন বন্দোবস্তে অর্থনৈতিক রূপান্তরের যে আকাঙ্ক্ষা তার পূর্ণ প্রতিফলন বাজেটে ঘটেনি।'

এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, 'মানুষের আকাঙ্ক্ষা ছিল, গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তৈরি হওয়া নতুন বাংলাদেশে ধনী-গরিবের আয়বৈষম্য কমে আসবে। কিন্তু বাজেটে এর কোনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।'

তিনি বলেন, 'যেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর ফাঁকি দেয়, তাদের করের আওতায় আনার তেমন কার্যকর পদক্ষেপ নেই। এর ফলে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের ওপর করের চাপ অব্যাহত থাকবে। কিছু নিত্যপণ্যে কর কমানো হলেও নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের ওপর যে চাপ, তা গুণগতভাবে কমবে না।'

বেকার সমস্যা থেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থান শুরু হয়েছিল উল্লেখ করে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, কর্মসংস্থানের আন্দোলন থেকেই কিন্তু এই গণঅভ্যুত্থানের সূত্রপাত। ফলে তরুণদের ব্যাপকভাবে প্রত্যাশা ছিল বেকার সমস্যার সমাধান ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য উদ্যোগ থাকবে। কিন্তু সেটি বাজেটে দেখা যাচ্ছে না। গত এক বছরে ২৬ লাখ বেকার বেড়েছে। কিন্তু কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য যে বিনিয়োগ বাড়ানো প্রয়োজন ছিল, সেই নীতি গ্রহণ করা হয়নি। ফলে এই বাজেট বা অর্থনৈতিক নীতি থেকে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি হবে অথবা বেকার সমস্যা কার্যকরভাবে নিরসন হবে—এমনটি মনে হচ্ছে না।

শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং বিজ্ঞান-প্রযুক্তি খাতেও বাজেটে তেমন নতুনত্ব নেই উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, বর্তমান সময়ে শিক্ষা খাতে জিডিপির ন্যূনতম ২ শতাংশ বরাদ্দ থাকা উচিত বলে তাঁরা মনে করেন। যেটা ১ দশমিক ৭ শতাংশ আছে বাজেটে। একইভাবে স্বাস্থ্য বা অন্যান্য খাতেও সেই অর্থে বরাদ্দ বৃদ্ধি হয়নি।

অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষিত বাজেটে কালোটাকা সাদা করার যে সুযোগ রাখা হয়েছে, তার বিরোধিতা করে তিনি বলেন, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ রাখা উচিত ছিল না। একটা রেজিম চেঞ্জ (ক্ষমতার পরিবর্তন) হয়েছে। এখন ইনসেনটিভ দিয়ে আসলে কালোটাকা সাদা করা যে খুব সম্ভব হবে, তা মনে হয় না। তাই কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বন্ধ করা উচিত।

জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের জন্য ৪০৫ কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার বিষয়টিকে সাধুবাদ জানিয়ে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, তাদের (শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত ব্যক্তিরা) যথাযথ পুনর্বাসনের জন্য পরিকল্পনামাফিক যাতে টাকাটা খরচ করা হয়। তাদের জন্য দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যেই পূরণ করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English
July Declaration: Where is the roadmap for our future journey?

July Declaration: Where is the roadmap for our future journey?

Denigration of our Liberation War will never be acceptable

13h ago