‘খেতে বসলে বাবার চেয়ারের দিকে তাকিয়ে থাকি’

নায়ক রাজ রাজ্জাক ও তার ছেলে সম্রাট। ফাইল ছবি: সংগৃহীত
নায়ক রাজ রাজ্জাক ও তার ছেলে সম্রাট। ফাইল ছবি: সংগৃহীত

আজ বিশ্ব বাবা দিবস। যার বাবা নেই তার জন্য দিনটি বেদনার ও কষ্টের। বাবাকে সবাই খুব মিস করেন। ভীষণরকম মিস করেন। বিশেষ দিবসে প্রিয় বাবা নায়করাজ রাজ্জাককে নিয়ে কথা বলেছেন তার ছোট পুত্র অভিনেতা সম্রাট।

সম্রাট বলেন, খেতে বসলে বাবার চেয়ারের দিকে তাকিয়ে থাকি। প্রতিদিন দুপুরবেলা খাবার সময় বাবাকে বেশি বেশি মনে পড়ে। বাবাকে তো প্রতি মুহূর্তে মিস করি। কিন্তু, কিছু কিছু সময়ে একটু বেশি মিস করি। তখন কষ্ট পাই। মন খারাপ করে।

তিনি বলেন, দুপুরবেলা বাবা খেতে বসে আমাকে ফোন করতেন। ফোন করে বলতেন, তোমার কী দেরি হবে? আমি কী খেয়ে নেব? যদি বলতাম অফিসে দেরি হচ্ছে, তাহলে তিনি খেয়ে নিতেন। আবার যদি বলতাম অপেক্ষা করো, তাহলে তাই করতেন। এছাড়া, রাতেরবেলা একা খেতেন না। সবাইকে নিয়ে খেতে বসতেন। এই স্মৃতিগুলো খুব ভাবায়।

বাবার নায়করাজের সঙ্গে সাদাকালো ফ্রেমে সম্রাট। ছবি: সংগৃহীত
বাবার নায়করাজের সঙ্গে সাদাকালো ফ্রেমে সম্রাট। ছবি: সংগৃহীত

বাবার সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো কেমন ছিল? সম্রাট বলেন, বলে শেষ করা যাবে না। জীবনের সেরা মুহূর্তগুলো কাটিয়েছি বাবার সঙ্গে। জানি, ওই মুহূর্তগুলো ফিরে পাব না। কিন্তু, মনে করেই বাকি দিনগুলো কাটাব।

নায়ক রাজ্জাক যখন কোথাও যেতেন, কাকে বেশি সঙ্গে নিতেন? এর জবাবে সম্রাট বলেন, আমাকেই বেশি সঙ্গে নিতেন। আমাকে ছাড়া কোথাও যেতেন না। ঘুরতে যাওয়া, হাসপাতালে যাওয়া, সবখানে আমাকেই যেতে হতো। ডাক্তারের কাছে কখনো কখনো আমার স্ত্রীও সঙ্গে যেতেন।

বাবার শেষ জীবনের দিনগুলোর কথা মনে করে সম্রাট বলেন, শেষ দিকে বাবা শিশুর মতো হয়ে পড়েছিলেন। বয়স হলে বুঝি মানুষ শিশুর মতো নরম ও সরল হয়ে যায়। বাবাও তাই ছিলেন। বাবা ওষুধ খেতে চাইতেন না। আমি কিংবা আমার স্ত্রী মিলে ওষুধ খাওয়াতাম।

রাজ্জাক ও রাজ্জাক-পুত্র। ছবি: সংগৃহীত
রাজ্জাক ও রাজ্জাক-পুত্র। ছবি: সংগৃহীত

ভাই-বোনদের মধ্যে বাবার সঙ্গে কার সম্পর্ক বেশি ভালো ছিল? সম্রাট বলেন, বাবার সঙ্গে আমার সম্পর্ক বেশি ভালো ছিল। মসজিদে নামাজ পড়তে যেতেন আমাকে নিয়ে। হাসপাতালে যেতেন আমাকে নিয়ে। একটু হাঁটতে বের হবেন আমাকে নিয়ে যেতেন। ভাই-বোনদের মধ্যে আমিই ছোট। স্নেহও করতেন খুব আমাকে।

বাবার জন্য এখনো অপেক্ষা করেন? সম্রাট এই প্রশ্নের জবাবে বলেন, করি। খুব করি। জানি ফিরে পাব না। তারপরও করি। এখনো দুপুরে খেতে বসে বাবার জন্য অপেক্ষা করি।

সম্রাট বাবার পরিচালনায় প্রথম সিনেমা করেন। রাজ্জাক পরিচালিত ওই সিনেমার নাম—আমি বাঁচতে চাই। এছাড়া, বাবার পরিচালনায় প্রথম একটি টেলিফিল্মে অভিনয় করেন। টেলিফিল্মটির নাম চাঁদের হাসি।

বাবা রাজ্জাকের সঙ্গে ছেলে সম্রাট। ছবি: সংগৃহীত

সম্রাট বলেন, বাবার পরিচালিত শেষ সিনেমা ছিল আয়না কাহিনী। ওখানে আমি অভিনয় করেছিলাম। বাবার সঙ্গে আমার শেষ অভিনয় কার্তুজ সিনেমায়। এটি পরিচালনা করেন বাপ্পারাজ ভাই। এছাড়া, আমার পরিচালনায় বাবা ২০১৬ সালে শেষ অভিনয় করেন দায়ভার এবং চেয়ারম্যানের চরিত্র ফুলের মতো পবিত্র নামের দুটো টেলিফিল্মে।

Comments

The Daily Star  | English
bangladesh to clear rooppur dues

Govt moves to clear Rooppur dues to Russia after US waiver

Central bank seeks nod from Washington after Russia's reply

12h ago