হিরো আলম সংসদ সদস্য হলে সমস্যা কী?
হিরো আলম সত্যিই যদি সংসদ সদস্য হয়ে যান তাতে কোনো সমস্যা আছে কি? দেশের প্রচলিত আইনের নিয়ম কানুনকে মান্যতা দিয়েইতো তিনি ভোটের মাঠে নেমেছেন। তাহলে তার সংসদ সদস্য হওয়ার প্রার্থীতা নিয়ে কেন এত শোরগোল, হিংসা, কুৎসিত আক্রমণ, বিদ্রুপাত্মক শ্লেষ, অযৌক্তিক শব্দবাণ? নাকি 'আঙুর ফল টক' নীতিরই প্রকাশ এসব? হিরো আলম পারে, আমরা পারি না, তাই অক্ষমের সম্বল হিসেবে নেমে পড়েছে সবাই অযৌক্তিক শব্দবোমায় হিরো আলমের চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধারে?
কারো কারো কিংবা অনেকের ভাবখানা এরকম, এ দেশে পেশাদার রাজনীতিকের বাইরে নায়িকা গায়িকা খেলোয়াড় ব্যবসায়ী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, অধ্যাপক, শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত, অশিক্ষিত সবাই সংসদ সদস্য হতে পারবেন। কেবল হিরো আলমের ক্ষেত্রেই সব সমস্যা। উনাদের কাছে ব্যাপারটা বোধ করি এরকম, হিরো আলম সংসদ সদস্য হলে দেশের অকল্যাণ হবে। প্রজাদের সম্মান ক্ষুন্ন হবে। বাগানে ফুলেরা ফুটবে না। পাখিরা আকাশে উড়বে না। নাকি এ সবের উল্টোটা হবে? সবকিছু আরও সুন্দর ও সংহত হবে। উত্তর নেই কোনোটারই। যে বা যারা হিরো আলমকে নিয়ে সমালোচনা করছেন তারা কি একটিবারও ভেবে দেখেছেন আপনাদের এই বিরোধিতা, হিংসার কারণ কী, কোন যুক্তিতে হিরো আলম বিদ্বেষে একেবারে কাছি মেরে লেগেছেন? এই কার্যাকারণের হেতু জানা নেই কারও। তাই কান নিয়েছে চিলের মতো হিরো আলমকে নিয়ে রয়েছে কেবলই নিন্দা আর বিবিধ বিষোদ্গার।
সপ্তম শ্রেণি পাস হিরো আলম একজন সংসদ সদস্য হতে চান, তাই নিয়েও মহাউল্লাসে ট্রল চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সংসদে ইতোপূর্বে যারা গেছেন এবং এখন যারা রয়েছেন, তাদের সকলের শিক্ষার দৌড় কি সমান? যে শিক্ষার বড়াই করছেন, যে শিক্ষার গৌরবের প্রাচীর দিয়ে আটকাতে চান হিরো আলমকে। সেই শিক্ষাকে ঢাল করে জাতীয় সংসদে কেন নতুন আইন পাস করা হয়নি বা হচ্ছে না সেটা নিয়ে একবারও ভাবার ফুরসত নেই কারও? আইন করে হিরো আলমকে আটকানোর মুরোদ নেই বলেই কি, আলটপকা এই হম্বিতম্বি? এ দেশে চাকরি পেতে শিক্ষাগত যোগ্যতা লাগে, সংসদ সদস্য হতে নয়। অবশ্য শুধু এ দেশে নয় পৃথিবীর অনেক দেশেই এই রীতি প্রযোজ্য। সংসদীয় গণতন্ত্রের সৌন্দর্যই বুঝি এখানে। মনে রাখতে হবে জনপ্রতিনিধি হওয়ার প্রধান যোগ্যতা জনগণের মন পড়ার, পাঠ্যপুস্তক নয়। এই আমরাইতো গর্ব করে বলি, ছুতোর মিস্ত্রির ছেলে আব্রাহাম লিংকন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। বৃহত গণতন্ত্রের দেশ ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও কিন্তু আক্ষরিক অর্থে শিক্ষার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক সনদ নেই। এই সব কি আমরা বিবেচনায় রেখেছি হিরো আলমকে নিয়ে বিরোধিতা করার ক্ষেত্রে, নিশ্চয় নয়।
হিরো আলম কোটিপতি হয়েছেন, তাই নিয়েও আমাদের সমালোচনার অন্ত নেই। অথচ হওয়ার কথা ছিল উল্টো। কেননা হিরো আলমের কোটিপতি হওয়া কোনো সাংবাদিক অনুসন্ধান নয়। দুদকের তালাশ করা অভিযানেরও অংশ নয়। হিরো আলম নিজেই তার হলফনামায় কোটিপতি হওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। যখন দেশে টাকা পাচারের চমকপ্রদ সব তথ্য উদঘাটিত হচ্ছে। কালো টাকার মালিকদের সংখ্যা বাড়ছে। সম্পদ গোপনের প্রবণতা জ্যামিতিক হারকেও হার মানাচ্ছে। অবৈধ আয়, প্রশ্নবিদ্ধ আয়, অযৌক্তিক আয়ের মানুষের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে দ্বিগুণ হচ্ছে। তখন হিরো আলমের এই সততাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন হিংসার অনলে। একজন মিটার রিডার, একজন অফিস পিয়ন কিংবা একজন চাকরিধারী কর্মচারী কিংবা কর্মকর্তার আয়ের সঙ্গে যখন তার অর্জিত সম্পদের হিসাব মেলে না কোনোভাবেই। তাদের নিয়ে কিন্তু আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। তাদেরকে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিকভাবে বয়কট করার কোনো চেষ্টা নেই। উল্টো তাদেরকে জামাই আদর দিতেই অভ্যস্ত আমরা। অথচ হিরো আলমকে ভিলেন বানাতে উঠেপড়ে লেগেছি। হিরো আলমের আয় এবং আয় করার পথ ও পদ্ধতিও নিয়েও ট্রল করছি দিনের পর দিন। এটা কোনো সুস্থ সমাজের মানুষের চারিত্রিক কাঠামো হতে পারে না। সামাজিক সাম্যও এভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
যে কোনো সমাজে, যে কোনো সম্প্রদায়ে, যে কোনো রাষ্ট্রে সাম্য আদতে কতটা আছে, সাম্যের চর্চা কীরূপে জারি রয়েছে তা স্পষ্ট করে বোঝা যায় সেই সমাজের এলিটিজমের চর্চা দেখে। এলিটিজম এমন একটা জিনিস, তা কেবল সমাজের উপর তলার মানুষের মাঝে থাকে আর শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে তার বসবাস ব্যাপারটা মোটেই তেমন নয়। এলিটিজম থাকে মানুষের মনের মাঝে, মস্তিস্কের নিউরণে, হৃদয়ের গহীন প্রদেশে। যা যে কোনো সংক্রামক ব্যাধির চেয়েও ভয়ঙ্কর সর্বনাশা। এ কারণে বড়বাবুর দেখানো এলিটিজম রপ্ত করে তার ড্রাইভার, অফিসের পিওন, বাসার দ্বাররক্ষী, গৃহসহকারী থেকে সবাই। বড় বাবু তার জায়গায় এলিটিজমের প্রয়োগ ঘটান আর উনারা উনাদের জায়গায়। একটা সমাজের জন্য সবচেয়ে বেদনার জায়গাটা হলো সমাজের বেশিরভাগ মানুষের মাঝে এলিটিজমের চর্চা যখন অভ্যাসের অংশ হয়ে দাঁড়ায়, এলিটিজম জাহির করে যখন গর্ববোধ করে।
সেই প্রাচীন কালে কিংবা মধ্যযুগে ধর্মের দোহাইয়ে মানুষের মাঝে যে শ্রেণি বিভাজন তৈরি করা হয়েছিল, তার মূলে ছিল মূলত এলিটিজম। ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শুদ্র এসবের মাঝেও ছিল এলিটিজমের প্রকাশ। স্বার্থের জায়গায় ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এক হয়ে শুদ্রের ওপর তার এলিটিজমের প্রয়োগ ঘটান। বলা হয়, সনাতম ধর্মের এই বিভাজন রীতি ইসলাম ধর্মে প্রবেশ করে আশরাফ, আতরাফ, আরজিল নামে।
এই শ্রেণি চরিত্রের মধ্যেই এলিটিজমের ভয়াবহ ও কুৎসিত রূপ দেখিয়ে গেছে ব্রিটিশ শাসক গোষ্ঠী। আড্ডালয়ের প্রবেশদ্বারে তারা স্পষ্ট করে লিখে রেখেছিল এখানে কুকুর ও ভারতীয়দের প্রবেশ নিষেধ। সেদিনের সেই ভারতীয় অর্থাৎ আমাদের সম্পর্কে ব্রিটিশদের মনোভাব, ব্যবহার ও দৃষ্টিভঙ্গি কেমন ছিল এর চেয়ে যুৎসই উদাহরণ আর কিছু হতে পারে না। সেই ব্রিটিশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ, পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙার পণ, স্বাধীনতার সংগ্রাম ও লড়াই কিন্তু কেবলই কোনো এলিট গোষ্ঠীর ছিল না। ছিল সকলের, আপামর জনতার, সর্বভারতীয় সব মানুষ ও রাজনীতিবিদদের। ব্রিটিশ খেদিয়ে আমরা পাকিস্তান পেলাম, কিন্তু এলিটিজম গেল না। উপরন্তু স্বাধীন দেশে জন্ম নিল নব্য এলিটিজমের, যা আরও ভয়ঙ্কর, সর্বনাশা ও সর্বগ্রাসী সংক্রামক ব্যাধিতুল্য।
পশ্চিম পাকিস্তানিদের এলিটিজম। যে এলিটিজমের বড়াইয়ে তারা অস্বীকৃতি জানাল আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি, শিল্প ও সাহিত্যকে। এমনকি তাদের এলিটিজম একথাও আমাদের কায়দা করে জানিয়ে দিল যে, আমরা বাঙালিরা দেশ চালানোর যোগ্য নই। নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা-মেধা-প্রজ্ঞা ও বিচারবুদ্ধি আমাদের নেই। যেমনটা একসময় মনে করত ব্রিটিশ শাসকরা। ভারতীয়দের দেশ পরিচালনার যোগ্যতা নেই বলে, এমন এক আপ্তবাক্য ভারতীয়দের কাছে বিশ্বাসযোগ্য করার কোশেশও চালিয়েছিল। পশ্চিম পাকিস্তানি এলিটিজমের বিরুদ্ধেও বাঙালিরা বিদ্রোহ ঘোষণা করল। ফলশ্রুতিতে, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে জন্ম নিল আজকের বাংলাদেশ। বেদনার কথা হলো, যে এলিটিজমের বিরুদ্ধে লড়াই করে দেশ স্বাধীন হলো সেই এলিটিজম জাঁকিয়ে বসল সর্বত্র, ছাপান্নো হাজার বর্গমাইলের অধিকাংশ মানুষের মন ও মননে।
একদা যে এলিটিজম সীমাবদ্ধ ছিল বিশেষ একটা শ্রেণি-গোষ্ঠী বা গোত্রের মধ্যে। যারা ব্রিটিশের দেখানো পথে ক্লাব সংস্কৃতিসহ অন্যান্য গোষ্ঠীচর্চায় প্রকাশ ঘটাত নিজেদের এলিটিজমের। যারা পেরে উঠল না এই এলিটদের সঙ্গে। তারা তৈরি করে নিল নিজেদের মতো করে আরেকটা এলিটিজম চক্র। তাদের সঙ্গে পেরে না ওঠারা খুলল আরেকটা। এভাবে বাড়তে থাকল এলিটিজম চক্রের সংখ্যা। এ যেন বৃত্তের মধ্যে বৃত্ত হয়েই ক্রমশ ছোট করে ফেলা হলো নিজেদের বিকশিত করার ও সমৃদ্ধ হওয়ার আকাশকে। কথা ছিল এলিটিজমের বিলুপ্তি হবে। এলিটিজমকে পাঠানো হবে জাদুঘরে। যদি সে থাকেও গুটিকয়েকের মধ্যেই থাকবে সীমাবদ্ধ। বৃহত্তর সমাজে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না কখনোই। কিন্তু না, নানাভাবে-নানাস্তরে এলিটিজমের বিস্তার ঘটানো হল। এমনকি শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতিতে এলিটিজম জায়গা করে নিল শক্তপোক্তভাবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এসে সেই এলিটিজমকে সর্বত্রগামী করে তুলল। তখন সে আর কোনো ক্লাব, গোষ্ঠী বা চক্রের ছাতার নিচে আবদ্ধ থাকল না। এলিটিজম ছড়িয়ে পড়ল ব্যক্তি পর্যায়ে। ব্যাঙের ছাতার মতো ক্রমবর্ধিষ্ণু এলিটিজম কতটা কুৎসিত, কতটা হিংস্র, কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে, তার সর্বৈব ও আগ্রাসী রূপের প্রকাশ ঘটেছে হিরো আলম সংসদ নির্বাচনে দাঁড়ানোর পর। হিরো আলমের কাছে সবাই হয়ে উঠেছে বিভিন্ন মাত্রা ও স্তরের এলিট। তাদের সেই এলিটিজমের কোনো বিবেচনা নেই, আত্মসমালোচনা নেই, আছে শুধু প্রতিহিংসা, অন্যকে ছোট করে দেখার ঘৃণ্য মানসিকতা।
একটা রাষ্ট্র কতটা কল্যাণ রাষ্ট্র, গণতন্ত্রমনস্ক, নাগরিকবান্ধব, জনদরদী সেটা বোঝার মানদণ্ড হলো তার প্রতিষ্ঠানগুলো, গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলো প্রান্তিক ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কেমন আচরণ করে, কতটা আস্থার জায়গা তৈরি করতে পেরেছে তার ওপর। প্রতিষ্ঠান যারা পরিচালনা করেন তারা সাংবিধানিক দায় ও দায়িত্ব কীভাবে পালন করেন, জনগণ সেখানে কতটা স্বাচ্ছন্দ্য ও স্বস্তিবোধ করে তার ওপরই রাষ্ট্রের প্রকৃত চেহারাটা স্পষ্ট হয়। যা দেখে তার অন্তর্গত ব্যবস্থাপনা ও লক্ষ্য উদ্দেশ্য টের পাওয়া যায়, খাসলতটাও বোঝা যায়। হিরো আলম সংসদ সদস্যপদে প্রার্থীতা হওয়ার মধ্যে দিয়ে সেটা টের পেয়েছেন পদে পদে। যার মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট হয়েছে শুধু এই সমাজের মানুষেরা নন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা খিস্তিখেউড় করেন কেবল তারা নন খোদ রাষ্ট্রই এলিটিজম চর্চায় অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। ফলে, যিনি জনগণের টাকায় লেখাপড়া করে এসে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হন তিনি জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ ও দরদী না হয়ে ঝুঁকে পড়েন এলিটিজমের দিকে। একজন সাধারণ ঘরের ছেলে বা মেয়ে আমলা হওয়ার পর ভুলে যান শেকড়ের কথা। ভুলে যান তার সেই কাজিনের কথা, যে এখনও তৈরি পোশাক কারখানায় কিংবা কৃষিজমিতে মজুর দেন। এই ভুলোমনা সরকারি কিংবা বেসরকারি পেশাজীবীরা যখন ক্ষমতার দায়িত্বে থাকেন তখন হিরো আলমরা নিগৃহীত হন অকারণেই কিংবা চুন থেকে পান খসলেই। এ কারণে হিরো আলমকে প্রার্থীতা নিশ্চিত করতে আদালতের শরণাপন্ন হতে হয়। সেই হিরো আলমের লড়াইয়ের সাধনা ও সৌন্দর্র্য না দেখে আপনি যখন কিছু না বুঝেই হা হা রিঅ্যাক্ট দেন তখন আপনি বা আপনারা প্রকারান্তরে সমাজ রাষ্ট্রের অব্যবস্থাপনাকেই প্রশ্রয় দেন।
হিরো আলম বগুড়ার দুটো আসন থেকে ১ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যে নির্বাচনের জন্য তাকে কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি। নির্বাচনে দাঁড়ানোর প্রথম ধাপ, প্রার্থী হওয়ার পথেই বিছানো হয়েছিল কণ্টক ও কঙ্কর। আদালতের দ্বারস্থ হয়ে তাকে প্রার্থিতা নিশ্চিত করতে হয়েছে। প্রশ্ন হল, হিরো আলমকে প্রার্থী হওয়ার জন্য আদালতের বারান্দায় কেন যাওয়া লাগল? এর মধ্যে দিয়ে হিরো আলমের প্রতি কোনো প্রকার অন্যায় বা বৈষম্য করা হয়েছে কী? নাকি এর ভেতরেও কাজ করেছে সুক্ষ্ণ কোনো এলিটিজম?
হিরো আলম সংসদ সদস্য হতে পারবে কি না, সেটা বোঝা যাবে ১ ফেব্রুয়ারি। প্রার্থী হয়েছেন বগুড়ার দুটো আসনের উপনির্বাচনে। আসন দুটোর ভোটাররাই নিশ্চিত করবেন জয় পরাজয়। জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার বিষয়টা। নির্বাচন মানে সকলে জয় নয়। নির্বাচন মানে একজনের বিজয়, সকলের অংশগ্রহণ। একারণে নির্বাচনকে উৎসবমুখর হতে হয়। নির্বাচনের ন্যায্যতা নিশ্চিত হয় তার উৎসবমুখরতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার ওপর। অর্মত্য সেন এসব নিয়ে বিশদ বলেছেন। নির্বাচনের সবচেয়ে সত্যকথন হলো, হারজিৎ চিরদিন থাকবে তবুও এগিয়ে যেতে হবে। হিরো আলম এই সত্যকে ধ্রুব জ্ঞান করে নির্বাচনী মাঠের লড়াইয়ে নেমেছেন। আমরা তাকে বাহবা দেব, উৎসাহিত করব, এটাই স্বাভাবিকতা। কিন্তু স্বাভাবিকতার পথে না হেঁটে আমরা উল্টো তাকে নিয়ে সমালোচনায় মেতে উঠেছি। এর মধ্যে দিয়ে আমরা নিজেরাই যে আমাদের বিকশিত হওয়া ও এগিয়ে যাওয়ার পথটাকে রুদ্ধ করে চলেছি, তা কি ভেবে দেখেছি আমরা?
কাজল রশীদ শাহীন : সাংবাদিক সাহিত্যিক ও গবেষক
(দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, দ্য ডেইলি স্টার কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার দ্য ডেইলি স্টার নেবে না।)
Comments