‘কাল্পনিক অপরাধে’ স্বাধীন সাংবাদিকতার পথ আটকানোর চেষ্টা

প্রকাশিত প্রতিবেদনটিকে সরকার বড় অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করেছে। ‘তুলে আনা’ তার প্রমাণ।

ইস্যু আসে, ইস্যু যায়। খুব হইচই ফেলে সামনে এসেছিলেন আরাভ খান। আলোচনার ঝড় তুলে আরাভ খান ইস্যু চলে গেল। এলো জেসমিন সুলতানার ইস্যু। নওগাঁয় র‌্যাব হেফাজতে মারা যাওয়া জেসমিন সুলতানা। মৃত্যুর পর তিনি আলোচনায় এলেন। আবার চলে গেলেন। মৃত্যুর আগে তার নামে কোনো মামলা ছিল না, এমনকি কোনো অভিযোগও ছিল না। মামলা ছাড়াই র‌্যাব তাকে তুলে নেয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তার নামে মামলা হয় তুলে নেওয়ার পরের দিন। এখন ইস্যু প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামস। ৫ দিন পর কারামুক্ত হলেন শামস। ৬ সপ্তাহের জামিন পেয়েছেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানও। যা কিঞ্চিৎ স্বস্তিদায়ক।

সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসকে তুলে নেওয়ার পর থেকে যা ঘটল, তার পরিপ্রেক্ষিতে কিছু কথা।

শামসুজ্জামান শামসের অপরাধ কী? তিনি কী এমন করলেন যে ৩ মাইক্রোবাস ভর্তি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ভোররাত ৪টায় তাকে ভাড়া বাসা থেকে তুলে আনতে হলো?

তুলে আনার সময় সিআইডি পরিচয় দেওয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বাড়ির মালিককে বলেছিলেন, 'শামসুজ্জামানের করা একটি প্রতিবেদনের বিষয়ে রাষ্ট্রের আপত্তি আছে। তাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে নেওয়া হচ্ছে।' (প্রথম আলো, ২৯ মার্চ ২০২৩)

'রাষ্ট্রের আপত্তি আছে' বলা সেই প্রতিবেদনটি শামসুজ্জামান শামস তৈরি করেছিলেন সাভার স্মৃতিসৌধ এলাকায় শিশু থেকে দিনমজুর কয়েকজন মানুষের সঙ্গে কথা বলে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। নিম্নবিত্ত মানুষ কেমন আছেন, সেটা জানতে চেয়েছিলেন। জানতে চেয়েছিলেন স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন।

একেক জন একেক রকম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। সেখানেই দিনমজুর জাকির হোসেনের বক্তব্য ছিল, 'মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগবো'। এই বক্তব্যের সঙ্গে পেছন থেকে তোলা যে ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছিল, সেটা ৯ বছরের শিশু সবুজ মিয়ার। সবুজ স্মৃতিসৌধ এলাকায় ফুল বিক্রি করে। প্রতিবেদনে সবুজের বক্তব্য ছিল, 'এখন স্মৃতিসৌধের ভেতরে ঢুকতে দেয় না। কাল ঢুকতে দিব। অনেক ফুল বিক্রি হইব।'

এটা নিয়ে প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দেওয়া হয়। সেই পোস্টে দিনমজুর জাকির হোসেনের বক্তব্যের সঙ্গে শিশু সবুজ মিয়ার ছবি প্রকাশ করা হয়েছিল। পোস্টের এই বিষয়টি প্রায় তাৎক্ষণিকভাবে প্রথম আলোর নজরে আসে। ১৭ মিনিটের মাথায় তারা ফেসবুক পোস্টটি সরিয়ে নেয় এবং অনলাইন প্রতিবেদনের শিরোনাম সংশোধন করে।

প্রথম আলো এটাকে বলছে লেখা ও ছবির 'অসঙ্গতি'। তারা এই অসঙ্গতির সংশোধনীও দেয়। সাংবাদিকতার ভাষায় বা রীতিতে এটাকে আমরা 'অসঙ্গতি' হিসেবে স্বীকার করে নেব, না 'ভুল' বা 'অপরাধ' হিসেবে বিবেচনা করব? অপরাধ হিসেবে ধরলে, কোন মাপের অপরাধ? কত বড় অপরাধ?

প্রকাশিত প্রতিবেদনটিকে সরকার বড় অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করেছে। 'তুলে আনা' তার প্রমাণ।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যে অভিযোগে তাকে তুলে এনেছিল এবং পরবর্তীতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যে বিবৃতি, তা পরস্পর বিরোধী।

সেই আলোচনার আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দিকে একটু নজর দেওয়া যাক। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় লিখিতভাবে শামসের গ্রেপ্তারের কারণ জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে ১ মার্চ। বিবৃতি দেওয়ার দরকার ছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের, দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তুলে এনেছিল প্রতিবেদন নিয়ে 'রাষ্ট্রের আপত্তি আছে' কারণ বলে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানাল, প্রতিবেদনের কারণে নয়, শামসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে 'শিশু নির্যাতন'র কারণে।

ইংরেজিতে লিখিত বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, 'ওই সাংবাদিককে (শামসুজ্জামান) শিশু নির্যাতন ও শিশুকে নিজের স্বার্থসিদ্ধির কাজে ব্যবহার করার কারণে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি ৯ বছর বয়সী এক শিশুকে ১০ টাকা দিয়েছিলেন এবং ওই শিশুর নাম দিয়ে নিজের কথাগুলো লিখেছেন।'

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে আরও লিখেছে, 'দ্বিতীয়ত, তিনি মহান স্বাধীনতা দিবসে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করেছেন।'

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুযায়ী, শামসুজ্জামান শামসের বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ 'শিশু নির্যাতন' এবং 'শিশুকে নিজের কাজে ব্যবহার'। দ্বিতীয় অভিযোগ, স্বাধীনতা দিবসে 'স্বাধীনতা'কে হেয় করার চেষ্টা। উল্লেখ্য বিবৃতির ভাষা অনুযায়ী, 'হেয় করেছেন' নয়, হেয় করার 'চেষ্টা করেছেন'।

২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন চালুর পরের ৩ বছরে মোট ৪ হাজার ৬৫৭টি মামলা হয়েছে। এরমধ্যে ১২ জেলায় ১৩ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশু-কিশোরদের নামে মামলা হয়েছে ১৮টি। শিশু-কিশোরদের নামে সারা দেশে কত মামলা হয়েছে, সেই তথ্য পাওয়া যায়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বয়সভিত্তিক মামলার তথ্য সংরক্ষণ করে না। ১৮টি মামলা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। জেনেছে, এসব মামলার অধিকাংশই করেছে পুলিশ, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

ঘটনাক্রম বিশ্লেষণের আলোকে কয়েকটি প্রসঙ্গ:

১. শামসের করা 'প্রতিবেদনটিতে রাষ্ট্রের আপত্তি আছে'র মানে, প্রতিবেদনটির কারণেই তাকে 'তুলে আনা' হচ্ছিল বলে তখন বলা হয়েছিল।

২. আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যে অভিযোগে তাকে তুলে এনেছিল এবং পরবর্তীতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যে বিবৃতি, তা পরস্পর বিরোধী।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য, শামসকে 'শিশু নির্যাতন' ও 'শিশুকে নিজের কাজে ব্যবহারের' কারণেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাহলে প্রশ্ন ওঠে, কোন আইনে বা মামলায় তাকে তুলে আনা হলো এবং পরবর্তীতে গ্রেপ্তার দেখানো হলো?

৩. শিশু নির্যাতনের অভিযোগে যদি তাকে তুলে আনা হয়ে থাকে বা গ্রেপ্তার করা হয়ে থাকে, তাহলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, আজ পর্যন্ত তা হয়নি।

৪. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম মামলাটি হয়েছে মধ্যরাতে। ২৯ মার্চ ভোররাত ১টা ৩২ মিনিটে তেজগাঁও থানায় শামসের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম কিবরিয়া। এটি ভোররাত সোয়া ২টায় মামলা হিসেবে রুজু হয়। মামলার এই তড়িৎ গতি অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয়। পরে রমনা থানায় প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান ও প্রতিবেদকের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরও একটি মামলা করা হয়।

৫. সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসের বিরুদ্ধে কোন যুক্তিতে শিশু নির্যাতনের অভিযোগ আনা সম্ভব? আদৌ কি এটাকে নির্যাতন বলা যায়? প্রথমত, তিনি শিশুটির ছবি তুলেছেন পেছন থেকে, যেখানে তার চেহারা বোঝা যায় না। দ্বিতীয়ত, তিনি শিশুটিকে ১০ টাকা দিয়েছেন। একজন দরিদ্র ফুল বিক্রেতা পাশে এসে দাঁড়ালে তাকে অর্থ সহায়তা অনেকেই করে থাকেন। সুতরাং, এই ১০ টাকা দেওয়াকে কোন বিবেচনায় নিপীড়ন বা শিশুকে নির্যাতন করা বলা যায়?

৬. বলা হচ্ছে, শিশুটিকে তিনি নিজের কাজে ব্যবহার করেছেন। কীভাবে ব্যবহার করেছেন? সেখানে যে বক্তব্যটি ব্যবহার করা হয়েছে, তা এই শিশুর নয়। বক্তব্যটি একজন দিনমজুরের। ভুলবশত শিশুটির ছবি ব্যবহার করা হয়েছিল, যে ছবিতে শিশুটির মুখ দেখা যায় না। যা পরবর্তীতে সংশোধনও করা হয়েছে এবং ১৭ মিনিটের মাথায় পরিবর্তন করা হয়েছে। সুতরাং, এই ১৭ মিনিটের মধ্যে ছবিটি 'নিজের কাজে ব্যবহার' করেছেন, এমন অভিযোগ করা যায়?

৭. পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ (সিআরসি) সমর্থনকারী হিসেবে বাংলাদেশ সরকার এ ধরনের শিশু নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ড সহ্য করবে না।'

বাস্তবতার সঙ্গে সরকারের এই বক্তব্যের মিল কতটা?

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার বিষয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দৃক গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে। তাতে দেখা যায়, ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন চালুর পরের ৩ বছরে মোট ৪ হাজার ৬৫৭টি মামলা হয়েছে। এরমধ্যে ১২ জেলায় ১৩ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশু-কিশোরদের নামে মামলা হয়েছে ১৮টি। শিশু-কিশোরদের নামে সারা দেশে কত মামলা হয়েছে, সেই তথ্য পাওয়া যায়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বয়সভিত্তিক মামলার তথ্য সংরক্ষণ করে না। ১৮টি মামলা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। জেনেছে, এসব মামলার অধিকাংশই করেছে পুলিশ, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

ছবির অসঙ্গতি ও সাংবাদিকতার একটি অতি সাধারণ ভুলকে 'বড় অপরাধ' হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো কালো আইন ব্যবহার করে সাংবাদিকদের নিপীড়ন করছে। দুর্ভাগ্য যে, কিছু গণমাধ্যম, সাংবাদিক, সম্পাদক এই নিপীড়নে সহায়কের ভূমিকা পালন করছে।

৮. 'স্বাধীনতাকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে'। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অনেক ত্যাগ, তিতিক্ষা, সংগ্রাম ও রক্তের বিনিময়ে অর্জিত। সেই স্বাধীনতা দিবসে একটি ছবি প্রকাশ করলে বা ভাত-মাছ-মাংসের অধিকার চাই বললে, স্বাধীনতা হেয় হয়ে যায়?

স্বাধীনতার ৫২ বছর পেরিয়ে ৫৩ বছরে পদার্পণ করেছি। এই বাংলাদেশ বহু কষ্টের মধ্য দিয়েও সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের বহু মানুষ কষ্টে আছে। তারা অর্ধাহারে, অনাহারে থাকে। প্রতিবেদনটির মূল উদ্দেশ্য ছিল, এসব বিষয়কে তুলে ধরা। এ ক্ষেত্রে মহান স্বাধীনতা দিবসে স্বাধীনতাকে কটাক্ষ বা হেয় করার অভিযোগ সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক। দেশটা গরিব-দুঃখী মানুষেরও। তাদের অভাব-অনটনের কথা বললে স্বাধীনতাকে হেয় করা হয়, এই চিন্তা কাল্পনিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

৯. 'তুলে নেওয়া'র পরের প্রায় ২০ ঘণ্টা শামসের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। বলা যায়, এই সময়কালে তিনি 'গুম' ছিলেন। একাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও কমপক্ষে ২ জন মন্ত্রী জানালেন, তারা কিছু জানেন না। তাহলে কারা শামসুজ্জামানকে তুলে নিয়ে এলো? শামসের মোবাইল থেকে মাঝরাতে ফোনের রহস্য কী?

এই প্রতিবেদনটিকে কেন্দ্র করে প্রথম আলো বিষয়ক একটি প্রচারণা ও প্রোপাগান্ডা দৃশ্যমান। মূলত তা চলছে টেলিভিশনে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। যারা আলোচনা করছেন তারা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে প্রতিবেদনটি ও প্রথম আলোকে 'স্বাধীনতাবিরোধী' হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা করছেন। ছবির অসঙ্গতি ও সাংবাদিকতার একটি অতি সাধারণ ভুলকে 'বড় অপরাধ' হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো কালো আইন ব্যবহার করে সাংবাদিকদের নিপীড়ন করছে। দুর্ভাগ্য যে, কিছু গণমাধ্যম, সাংবাদিক, সম্পাদক এই নিপীড়নে সহায়কের ভূমিকা পালন করছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যখন বিবৃতি দিয়ে জানাল, প্রতিবেদনের জন্য নয়, সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে 'শিশু নির্যাতন'র অভিযোগে, তখনো তারা প্রতিবেদন ও প্রথম আলোকে স্বাধীনতাবিরোধী হিসেবে 'কাল্পনিক' প্রচারণায় ব্যস্ত। সাংবাদিককে 'তুলে আনা' ও ২০ ঘণ্টা 'গুম' নিয়ে তাদের অবস্থান সম্পূর্ণ অস্বচ্ছ। নিপীড়িত সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের পাশে থাকা প্রয়োজন মনে করছে না তারা। প্রায় প্রতিটি আলোচনায় অর্ধসত্য-অসত্য তথ্য উপস্থাপন করা হচ্ছে। প্রথম আলো প্রতিবেদনটি 'সরিয়ে নিয়েছে', শিশুটিকে ১০ টাকা 'উৎকোচ' দিয়েছে—এ জাতীয় তথ্য সরবরাহ করে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।

কোনো নাগরিকের কাজে রাষ্ট্রের আপত্তি থাকলেও এভাবে 'তুলে নেওয়ার' আইনি সুযোগ আছে কি না? দেশের প্রায় সব আইনবিদ বলছেন, এভাবে তুলে নেওয়ার সুযোগ নেই। তাহলে কেন এভাবে তুলে নেওয়া হলো? নাগরিকের কাজে আপত্তি আছে জানিয়ে রাষ্ট্রের পক্ষে সরকার কেন বেআইনি কাজ করবে? এতে যে ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি হচ্ছে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা তথা স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তাদের আলোচনায় এসবের স্থান নেই।

প্রবাদ আছে, প্রতিযোগিতায় না পারলে টেনে নামানোর চেষ্টা করা হয়। প্রথম আলোর বিষয়ে আমরা এখন তেমন নজিরই দেখছি।

[email protected]

Comments