সরকারি কর্মচারীরা সম্পদের হিসাব জমা দিতে কি বাধ্য?

প্রজাতন্ত্রের কোনো পদে থেকে বৈধ আয় দিয়ে এত বিপুল সম্পদ অর্জন সম্ভব নয়। ফলে এটি বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে এই সম্পদ তারা অর্জন করেছেন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিল ও প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিধিমালা বাস্তবায়নে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, এ বিষয়ে তিন মাসের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ২ জুলাই রুলসহ এ আদেশ দেন। (প্রথম আলো, ২ জুলাই ২০২৪)

১৯৭৯ সালের সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালার ১৩ বিধিতে বলা হয়েছে, প্রত্যেক সরকারি কর্মচারী চাকরিতে প্রবেশের সময় যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকারের কাছে তার বা পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন বা দখলে থাকা শেয়ার, সার্টিফিকেট, সিকিউরিটি, বিমা পলিসি ও মোট ৫০ হাজার টাকা বা ততধিক মূল্যের অলংকারসহ স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির ঘোষণা করবেন। প্রত্যেক সরকারি কর্মচারী প্রতি পাঁচ বছর অন্তর প্রদর্শিত সম্পত্তির হ্রাস-বৃদ্ধির হিসাব বিবরণী যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকারের কাছে দাখিল করবেন।

কিন্তু বাস্তবতা হলো, শুরু থেকেই এই বিধান অমান্য করে আসছেন সরকারি কর্মচারীরা। যে কারণে ১৯৯০ সালে এ বিষয়ে সরকার যে আদেশ (নং সম/ডি৪(পি এম)-২/৯০-১১৬ (১০০) জারি করে, সেখানে স্পষ্টত বলা হয়, 'সাম্প্রতিককালে সরকার লক্ষ করিয়াছেন যে, উক্ত বিধিমালা মোতাবেক বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তরে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব নিয়মিতভাবে দাখিল করা বা সংরক্ষণ করা হইতেছে না। বিষয়টি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে বিস্তারিতভাবে আলোচনা হইয়াছে এবং সরকার এই মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়াছেন যে, উক্ত বিধিমালার ১৩ নং বিধি অনুযায়ী চাকুরিতে প্রবেশের সময় এবং প্রতি বৎসর সরকারি কর্মচারীদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব নেওয়ার বিষয়টি যথাযথভাবে পালন করা হইবে এবং ইহাকে অধিকতর কার্যকর করার ব্যবস্থা করা হইবে।'

এরপরেও বিভিন্ন সময়ে এই বিধান নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কার্যকর করা যায়নি। সাম্প্রতিক সময়ে বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এসেছে সরকারের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিপুল সম্পদের খবর গণমাধ্যমের শিরোনাম হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে।

কেননা, প্রজাতন্ত্রের কোনো পদে থেকে বৈধ আয় দিয়ে এত বিপুল সম্পদ অর্জন সম্ভব নয়। ফলে এটি বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে এই সম্পদ তারা অর্জন করেছেন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে।

১৯৭৯ সালের বিধিমালায় বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারী ১৫ হাজার টাকার বেশি মূল্যের কোনো স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি ক্রয়, বিক্রয় বা অন্য কোনোভাবে হস্তান্তর করতে চাইলে বিভাগীয় প্রধান অথবা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবকে জানাবেন এবং ঘটনার পূর্ণ বিবরণ, প্রদেয় বা প্রস্তাবিত মূল্য এবং বিক্রয় ভিন্ন অন্যভাবে নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া উল্লেখ করবেন। এরপর অনুমতি পেলে তিনি সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবেন (ধারা ১১)।

কিন্তু এই বিধানটিও যে মানা হচ্ছে না তার প্রমাণ সরকারি কর্মচারীদের নামে-বেনামে বিপুল সম্পদের মালিক হওয়া। এই বিধানটি প্রতিপালিত হলে সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদ, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি শামসুদ্দোহা, ডিআইজি মিজানুর রহমান, ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া, অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ রফিকুল ইসলাম শিমুল, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মতিউর রহমান, এনবিআরের প্রথম সচিব কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালসহ আরও অনেকের বিরুদ্ধে বাড়ি, ফ্ল্যাট, রিসোর্ট, শত শত বিঘা জমির মালিক হওয়ার সুযোগ ছিল না।

কেননা, আইন মেনে যখনই তারা এইসব সম্পদ কেনার জন্য তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ইচ্ছা পোষণ করতেন, তখনই প্রশ্ন উঠতো যে তারা এগুলো কার টাকায় কিনবেন? সেই টাকার উৎস কী? ফলে কোনো সম্পত্তি কেনার আগেই তাদেরকে জবাবদিহির মধ্যে আসতে হতো।

যেহেতু তারা বিধিমালার কোনো তোয়াক্কা করেননি, ফলে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হতে পেরেছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধানেও যার সত্যতা মিলেছে।

১৯৭৯ সালের সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালায় আরও বলা হয়েছে, নন গেজেটেড কর্মচারী ব্যতীত সকল সরকারি কর্মচারী অফিসের কাজ ছাড়া চাকরি বা অন্য কোনো কাজ বা কনসালট্যান্সি করতে চাইলেও সরকারের অনুমতি নিতে হবে। তাদের কোনো ধরনের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হওয়া বা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনেক ধরনের বাধা-নিষেধ রয়েছে (ধারা ১৫)।

এই বিধিমালায় সরকারি কর্মচারীদের কোনো ধরনের রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়ার ওপরেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে (ধারা ২৫)। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও অনেকেই রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়েছেন শুধু নয়, কেউ কেউ নির্দিষ্ট একটি প্রতীকে ভোটও চেয়েছেন। যেমন: গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০২৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জামালপুরের মাদারগঞ্জ পৌরসভার নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধনকালে জেলা প্রশাসক মো. ইমরান আহমেদ তার বক্তব্যে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগ সরকারকে আবার ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য মির্জা আজমকে আগামী নির্বাচনের পর মন্ত্রী হিসেবে দেখারও আশা প্রকাশ করেন। জেলা প্রশাসকের বক্তব্যের ৩ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের ওই ভিডিও ক্লিপ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর এই ঘটনার সত্যতা যাচাই করে ইমরান আহমেদের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে চিঠি দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তার একদিন পরই তাকে বদলি করা হয়। (প্রথম আলো, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩)

এই ঘটনার কিছুদিন আগে ২০২৩ সালের ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলা প্রশাসন একটি আলোচনা সভায় নাঙ্গলকোট থানার ওসি ফারুক হোসেন সাবেক অর্থমন্ত্রী ও নাঙ্গলকোটের সংসদ সদস্য আ হ ম মুস্তফা কামালকে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত করতে স্থানীয় মানুষের প্রতি 'মিনতি' জানান।

সরকারের যেসব কর্মচারী বিভিন্ন সময়ে প্রকাশ্যে রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়েছেন এবং একটি নির্দিষ্ট প্রতীকে ভোট চেয়েছেন, সেটি স্পষ্টতই সরকারি কর্মচারী আচরণবিধিমালার লঙ্ঘন। কিন্তু এই বিধি লঙ্ঘনের শাস্তি কী—সেটি বিধিমালায় উল্লেখ নেই।

একইভাবে সম্পদের হিসাব জমা দিতে হবে বলে নির্দেশনা থাকলেও হিসাব জমা না দিলে কী হবে বা কোনো শাস্তি হবে কি না, সে বিষয়েও কিছু বলা নেই।

তার মানে সম্পদের হিসাব জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়? কোনো কিছু যখন বাধ্যতামূলক হয় তখন সেটি পালন না করলে শাস্তির বিধান থাকতে হয়। শাস্তির বিধান নেই মানে সেটি পালন না করলেও অসুবিধা নেই।

আইনি বাধ্যবাধকতা নেই এবং নিয়ম না মানলে শাস্তির বিধান নেই বলে সরকারি কর্মচারীরা বরাবরই নিজেদের ও পরিবারের সম্পদের হিসাব দিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা—যারা নানা উপায়ে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। যারা সৎ এবং যাদের কোনো অবৈধ আয় নেই, তাদের এই নিয়ম মেনে হিসাব জমা দিতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। যেহেতু ঊর্ধ্বতনরাই এই হিসাব জমা দিতে নারাজ এবং আইন না মানলে শাস্তিরও ব্যবস্থা নেই, ফলে ১৯৭৯ সালের এই বিধানটি এখন পর্যন্ত কাজীর গরু হিসেবে কেতাবেই আছে।

গণমাধ্যমের খবর বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের ১৭ জানুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের সময় দুর্নীতি বন্ধে সরকারি কর্মচারীদের বিভিন্ন নির্দেশনা দেন। এর মধ্যে দুর্নীতি প্রতিরোধে কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার বিষয়টিও ছিল। প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনের পর সম্পদ বিবরণী দাখিল ও স্থাবর সম্পত্তি অর্জন বা বিক্রির নিয়ম মানতে সব মন্ত্রণালয়ে ২০২১ সালের ২৪ জুন চিঠি দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কিন্তু এতে সাড়া দেননি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এরপর ২০২২ সালের মার্চে আবার তাগিদ দিয়ে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে চিঠি দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তারপরও সাড়া মেলেনি।  (আজকের পত্রিকা, ৩০ জুন ২০২৪)

এ অবস্থায় ২০২২ সালের ১৬ জুন জাতীয় সংসদে তৎকালীন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী (বর্তমানে মন্ত্রী) ফরহাদ হোসেন বলেছিলেন, 'সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদের হিসাবের বিবরণ দেওয়া বাধ্যতামূলক করতে আচরণ বিধিমালা, ১৯৭৯ হালনাগাদ করা হচ্ছে।'

কিন্তু প্রতিমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পর উল্টো সম্পদের হিসাবে ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব করে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ২০২২ এর খসড়া চূড়ান্ত করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, 'যারা নিয়মিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন, তাদের আলাদাভাবে কোনো সম্পদের হিসাব জমা দিতে হবে না। সরকার প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর এনবিআরে দাখিল করা সম্পত্তির হিসাব বিবরণী সংগ্রহ করবে।'

তার মানে সম্পদের হিসাব না দিতেই আমলারা এরকম একটি বিধান খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন, সেটি বলাই বাহুল্য।

সবশেষ গত ২৫ জুন জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব উল আলম হানিফ সরকারি চাকুরেদের দুর্নীতির বিষয়ে বলেন, দুর্নীতি সরকারের সব অর্জন ম্লান করে দিচ্ছে। সরকার বারবার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে। তারপরও দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। সরকারি কর্মচারীদের দফায় দফায় বেতন বাড়ানোর পরও দুর্নীতি কেন হবে? তাই সরকারি কর্মচারীরা যাতে দুর্নীতিতে না জড়ান, সে জন্য আইন আরও কঠোর করতে পরামর্শ দেন হানিফ।

সরকারি কর্মকর্তাদের চাকরিতে প্রবেশের সময় সম্পদের বিবরণী দেওয়ার বাধ্যবাধকতার প্রস্তাব করেছেন বিরোধী দলের উপনেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদও। গত ২৬ জুন জাতীয় সংসদে তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, যারা এই প্রতিষ্ঠানগুলোর নেতৃত্ব দেন, তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে। দুর্নীতির অভিযোগ ১০০ কোটি টাকার না, হাজার হাজার কোটি টাকার। তারা এয়ারপোর্ট দিয়ে চলে গেছেন। কত লোককে এয়ারপোর্টে থামানো হয়েছে, যেতে দেওয়া হয়নি, পরে কোর্টের পারমিশন নিয়ে যেতে হয়েছে। আজ যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে এ অবস্থায় একটি দেশ চলতে পারে না।

এর আগে গত ২০ জুন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনও জাতীয় সংসদে বলেন, 'সরকারি কর্মচারীদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বার্ষিক হিসাব বাধ্যতামূলক করা এখন সময়ের দাবি। কিছুসংখ্যক দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার কারণে দেশের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করলে দুর্নীতি কমবে। আমলাদের একটি অংশ দুর্নীতিপরায়ণ হয়ে উঠেছে এবং তাতে জনগণের হয়রানি বাড়ছে।'

প্রসঙ্গত, সংসদে যারা এই দাবি জানিয়েছেন, সেই জনপ্রতিনিধিদেরও নির্বাচনের সময় মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যুক্ত হলফনাফায় সম্পদের বিবরণ উল্লেখ করতে হয়। সুতরাং যারা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা কর্মচারী হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন; জনগণের ট্যাক্সের পয়সায় যাদের বেতন হবে; সংবিধান অনুযায়ী জনগণের সেবা করা যাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব এবং রাষ্ট্রীয় নানা সিস্টেমের কারণেই যাদের অবৈধ পথে বিপুল সম্পদের মালিক হওয়ার সুযোগ রয়েছে—তারা কেন চাকরিতে যোগদানের আগে এবং প্রতি পাঁচ বছর পরপর নিজেদের ও পরিবারের সম্পদের হিসাব জমা দেবেন না? এই বিধানটি সঠিকভাবে পালিত হলে অন্তত সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্নীতিমুক্ত করার কাজটি অনেক সহজ হবে।

সুতরাং ১৯৭৯ সালের বিধিমালাটি হালনাগাদ করে সম্পদের হিসাব জমা দেওয়া, রাজনৈতিক বক্তব্য না দেওয়া, চাকরির বাইরে অন্য কোনো কাজে যুক্ত না হওয়াসহ অন্যান্য বিধানগুলো মানা বাধ্যতামূলক করা এবং এই বিধান প্রতিপালন না করলে কঠোর শাস্তির বিধান করা এখন সময়ের দাবি।

আমীন আল রশীদ: সাংবাদিক ও লেখক

Comments