নৌকার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ?

ভোটের বাতাস বলছে, এবারের নির্বাচন ঠিক আগের দুটির মতো হবে না। এবার অনেক আসনেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে তাদের দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধেই লড়তে হবে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় একটা বিষয় মোটামুটি প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছিল যে, নৌকা প্রতীক পাওয়া মানেই তার বিজয় সুনিশ্চিত। যে কারণে স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও দেখা গেছে, দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পরেই কোনো কোনো প্রার্থী 'বিজয় মিছিল' করেছেন। কারণ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া মানেই বিজয়। যেহেতু ভোটের মাঠে তার বড় কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না।

শুধু জাতীয় সংসদ বা স্থানীয় সরকার নয়, বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে যাওয়ার এই প্রবণতা শুরু হয়েছে পেশাজীবীদের বিভিন্ন সংগঠনেও। সেখানেও আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনো প্রার্থী থাকেন না।

২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও এটি নিশ্চিত ছিল যে, টানা তৃতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। বরং বিরোধী দলে কারা বসবে, সেটি ছিল আলোচনায়। এবারের পরিস্থিতিও তা-ই। এবারও যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ, সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত সন্দেহ কম। কিন্তু প্রশ্ন হলো, নির্বাচন কি ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতোই হবে?

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যদি ৭ জানুয়ারি নির্ধারিত দিনে অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে সেই নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করছে না—সেটি এখন মোটামুটি নিশ্চিত। তারা নির্বাচন প্রতিহত করবে কিংবা করতে পারবে কি পারবে না; নাকি তাদের দলের অনেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটে অংশ নেবেন—সেটি এখনো নিশ্চিত নয়। প্রশ্ন হলো, বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত এই নির্বাচনে অংশ না নেয়, তাহলে কি বিগত দুটি নির্বাচনের মতো আরও একটি নিরুত্তাপ এবং অনেকটা একপেশে নির্বাচনই দেশবাসীকে দেখতে হবে?

ভোটের বাতাস বলছে, এবারের নির্বাচন ঠিক আগের দুটির মতো হবে না। এবার অনেক আসনেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে তাদের দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধেই লড়তে হবে। অর্থাৎ মনোনয়নপ্রত্যাশী যেসব নেতা বঞ্চিত হয়েছেন, তাদের অনেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন।

গণমাধ্যমের খবর বলছে, এরইমধ্যে বেশ কিছু আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে দলটির মনোনয়নবঞ্চিত নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে বরিশাল সিটি করপোরেশনের সদ্য সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ লড়তে চান পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের সঙ্গে। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়তেন চান বরিশাল-৫ (সদর) আসনে।

ঢাকা-১৯ (সাভার-আশুলিয়া) আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদ এবং আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তারা দুই জনই ক্ষমতাসীন দল থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন।

অনেকদিন ধরেই গুঞ্জন ছিল সমকাল ও চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের মালিক, দেশের অন্যতম শীর্ষ শিল্প প্রতিষ্ঠান হামীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাচ্ছেন। কিন্তু তিনি পাননি। ফলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়বেন। তিনি ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য।

আরও অনেক আসনেই স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নৌকার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিয়েছেন। অনেকে ঘোষণাও দিয়েছেন।

বিনোদন দুনিয়ার তারকাদের মধ্যে এবার অনেকেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু চিত্রনায়ক ফেরদৌস ছাড়া আর কেউ মনোনয়ন পাননি। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়তে চান চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি।

বিগত বছরগুলোয় দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ালে তাকে 'বিদ্রোহী প্রার্থী' হিসেবে চিহ্নিত করা হতো এবং তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেওয়া হতো। এমনকি দল থেকে বহিষ্কারেরও নজির রয়েছে। কিন্তু এবার যেহেতু বিএনপি মাঠে নেই, অতএব আওয়ামী লীগের চিন্তা কম। জাতীয় পার্টি এককভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দিলেও তারা ২০টির বেশি আসন পাবে কি না সন্দেহ আছে।

সে কারণে এবার দলীয় প্রার্থী থাকলেও দলের অন্য কোনো নেতা যদি কোনো আসন থেকে প্রার্থী হতে চান, তাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। ফলে এবার অনেক আসনেই নৌকার প্রার্থীকে লড়তে হবে সতীর্থদের সঙ্গেই এবং বেশ কিছু আসনের বর্তমান এমপিও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছে হেরে যেতে পারেন বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

এমনও হতে পারে, তারকা বিবেচনায় যাদেরকে মনোনয়ন দেওয়া হলো, তাদের আসনেও যদি আওয়ামী লীগের কোনো শক্তিশালী নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে যান এবং ভোট যদি সুষ্ঠু হয়—তাহলে সেই তারকাদেরও কেউ কেউ প্রকৃত রাজনীতিবিদ প্রার্থীর কাছে হেরে যেতে পারেন। অর্থাৎ আগের দুটি নির্বাচনে ব্যাপারটা যেমন ছিল যে, নৌকা প্রতীক পাওয়া মানেই সংসদ সদস্য হওয়া নিশ্চিত—এবার সব আসনে সেই ঘটনাটি হয়তো ঘটবে না। এবার অনেক আসনেই নৌকাকে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে লড়াই করতে হতে পারে। অতএব মাঠের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপিকে ছাড়াই যদি এবারের নির্বাচনটি হয়, তারপরও ভোট একতরফা হবে না। তা ছাড়া এবার একতরফা ভোটের পরিস্থিতি আওয়ামী লীগও এড়াতে চায়। এটা ভালো লক্ষণ। কেননা ভোট মানে যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা, ভোট মানে যে এক ধরনের উৎসবের আমেজ, সেটি হয়তো কিছুটা ফিরে আসবে।

সুতরাং জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য দল, এমনকি নিজ দলের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে যদি আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা লড়াই করেন, তাতে কয়েকটি সুবিধা:

১. বেশি প্রার্থী হলে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলে ভোটার বেশি আসবে। কারণ সব প্রার্থী চাইবেন তার ভোটাররা কেন্দ্রে আসুক। তাতে বিজয়ী প্রার্থীকে অতি সামান্য ভোটে জয়ী হওয়ার বদনাম নিতে হবে না। বরং সারা বিশ্বকে দেখানো যাবে যে, একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয়েছে।

২. নানা কারণে দলের যেসব যোগ্য প্রার্থী বাদ পড়েছেন অর্থাৎ মনোনয়ন পাননি, তারা যদি নৌকার বিরুদ্ধে লড়াই করে জিতে আসেন, তাতেও আওয়ামী লীগের কোনো ক্ষতি নেই। কারণ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হলেও তিনি আওয়ামী লীগেরই লোক। অর্থাৎ দলের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়াই করলেও তিনি আসলে 'ঘরের ছেলে'।

৩. দলের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী জিতে গেলে তাকে নিয়ে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ রাজনীতির পরিকল্পনা গ্রহণ সহজ হবে।

৪. আওয়ামী লীগের প্রার্থীরাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে নৌকার প্রার্থী চাইলেও ভোটকেন্দ্রে বা নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণায় ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটাতে পারবেন না। একটা চেক অ্যান্ড ব্যাল্যান্স (ভারসাম্য) থাকবে।

কিন্তু তারপরও বাংলাদেশের ভোটের রাজনীতিই এমন যে, এখানে প্রধান দুটি দল অংশ না নিলে ভোটের ব্যাপারে মানুষের আগ্রহ কমে যায়। যে কারণে বিগত দুটি নির্বাচন এবং তারপরে বিভিন্ন উপনির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও ভোটার উপস্থিতি ছিল খুবই কম। কোথাও কোথাও সাত থেকে আট শতাংশ ভোট পেয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন, এরকম ঘটনাও আছে—যা বাংলাদেশের বিদ্যমান সংবিধান ও আইনের আলোকে অবৈধ না হলেও দৃষ্টিকটূ এবং অতি সামান্য সংখ্যক মানুষের ম্যান্ডেট নিয়ে জনপ্রতিনিধি হয়ে যাওয়া গণতান্ত্রিক রীতি-নীতির সঙ্গেও সাংঘর্ষিক।

স্মরণ করা যেতে পারে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ১৫৩ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। কেননা বিএনপি ওই নির্বাচন বর্জন করে। আর জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোট থাকায় তারাও ওই ১৫৩টি আসনে কোনো প্রার্থী দেয়নি। অন্য কোনো দলেরও প্রার্থী ছিলেন না। এটি শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের যেসব দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র আছে, তাদের সবার জন্যই একটি খারাপ দৃষ্টান্ত তৈরি করে। কেননা ভোট মানেই সেখানে একাধিক প্রার্থী থাকবেন এবং প্রত্যক্ষ ভোটের মধ্য দিয়ে ফলাফল নির্ধারিত হবে। কিন্তু যদি ভোটই না হয়, একজন প্রার্থী যদি ওয়াকওভার পেয়ে যান, সেটি কোনো অর্থেই নির্বাচন নয়। বরং সেটিকে সিলেকশন বা মনোনয়ন বলাই শ্রেয়।

২০১৪ সালের ওই নির্বাচনের পরে কোনো সংসদীয় আসনে একক প্রার্থী থাকলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার ঘোষণা-সংক্রান্ত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ১৯ ধারার বৈধতা নিয়ে উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন করেছিলেন একজন আইনজীবী। কিন্তু হাইকোর্ট সেটি খারিজ করে দেন। তার মানে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়াটা অবৈধ নয়।

তবে এটা ঠিক যে, ম্যান্ডেট ছাড়া কিংবা অতি অল্প মানুষের ভোটে নির্বাচিত হলে দেশ ও জনগণের প্রতি তার দায়বদ্ধতা সেভাবে তৈরি হয় না। সম্ভবত এসব বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে এবার যাতে ২০১৪ সালের মতো অর্ধেকের বেশি আসনের প্রার্থীরা ওয়াকওভার না পান তথা ফাঁকা মাঠে গোল দিতে না পারেন, অর্থাৎ বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হতে না পারেন, সে বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের নেতাকর্মী, বিশেষ করে প্রার্থীদের নির্দেশনা দিয়েছেন।

গত ২৬ নভেম্বর বিকেলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ঘোষণার আগে গণভবনে তিনি মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে তিনি যে মতবিনিময় করেন, সেখানে এই নির্দেশনা দিয়েছেন যে, কেউ যেন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হতে না পারেন। সেজন্য প্রয়োজনে ডামি বা বিকল্প প্রার্থী রাখা এবং ঘরে ঘরে গিয়ে ভোটারদের ভোটদানে উৎসাহিত করতে হবে।

এর পরদিনই দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও জানিয়েছেন, দলের যে কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। তার মানে এবার দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে দাঁড়ালে তিনি আর 'বিদ্রোহী প্রার্থী' হিসেবে চিহ্নিত হবেন না। তবে এই ঘোষণার ফলে যদি শতাধিক আসনেই নৌকার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ নেতারা দাঁড়িয়ে যান, সেটি দলের জন্য চিন্তার কারণ হতে পারে। ফলে সংখ্যাটি বেশি হয়ে গেলে এবং নৌকা বনাম স্বতন্ত্র আওয়ামী লীগ ব্যাপারটা অনেক দূর গড়ালে শেষ মুহূর্তে দল থেকে দলের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে সবাইকে কাজ করার নির্দেশনাও দেওয়া হতে পারে।

বাস্তবতা হলো, নৌকা বনাম আওয়ামী লীগ কিংবা আওয়ামী লীগ বনাম জাতীয় পার্টি—যাই হোক না কেন, বাংলাদেশের ভোটের রাজনীতি এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ বনাম বিএনপি। সুতরাং আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি মাঠে না থাকলে নৌকার বিপক্ষে যতই স্বতন্ত্র কিংবা জাতীয় পার্টি অথবা ইসলামি দলগুলোর প্রার্থী থাকুক না কেন, দিন শেষে বাংলাদেশের মানুষ যে ধরনের ভোট দেখে অভ্যস্ত বা যে ধরনের ভোট প্রত্যাশা করে—সেই প্রত্যাশা পূরণ হবে না।

তবে এটা ঠিক যে, আওয়ামী লীগ যদি শুধুমাত্র বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীদের নির্বাচিত হয়ে যাওয়া ঠেকানো কিংবা নিরুত্তাপ ভোটের সমালোচনা এড়ানোর জন্য অথবা ভোটকে অংশগ্রহণকমূলক দেখানোর জন্যই ডামি বা বিকল্প অথবা স্বতন্ত্র প্রার্থী মনোনয়নের নির্দেশনা দিয়ে থাকে, তাহলে দিন শেষে সেটিও কোনো ভালো নির্বাচন হবে না। বরং উদ্দেশ্যটা যদি হয় প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা যাচাই এবং একটি সত্যিকারের প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে যোগ্য প্রার্থীদের বের করে নিয়ে আসা, তাহলে এটি হয়তো বাংলাদেশের বিদ্যমান নির্বাচনি রাজনীতির নানাবিধ সংকটের মধ্যেও কিছুটা আশার আলো জ্বলতে সহায়তা করবে।

আমীন আল রশীদ: কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এডিটর, নেক্সাস টেলিভিশন

(দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির আইনগত, মতামত বা বিশ্লেষণের দায়ভার সম্পূর্ণরূপে লেখকের, দ্য ডেইলি স্টার কর্তৃপক্ষের নয়। লেখকের নিজস্ব মতামতের কোনো প্রকার দায়ভার দ্য ডেইলি স্টার নেবে না।)

Comments