‘বাজেট ঘাটতি পূরণে ব্যাংক ঋণ নেওয়ার ধারা পরিহার করা উচিত’

বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন। ফাইল ফটো

বাজেট ঘাটতি পূরণে ব্যাংক ঋণ নেওয়ার চলমান ধারা মূল্যস্ফীতির চাপ আরও বাড়াতে পারে এবং আগামী অর্থবছরে ডলার সংকট আরও বাড়াতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি কমিয়ে আনতে হবে। তবে তা কীভাবে হবে, সেটাই দেখার বিষয়।

তিনি বলেন, 'আমরা যদি বিদায়ী অর্থবছরের মতো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আগামী অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে চাই, তাহলে মূল্যস্ফীতি ও ডলার সংকট উভয়ই আরও তীব্র হবে।'
বাজেট ব্যয় পূরণে সরকারকে ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরতা পরিহারের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক ঋণ ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা আরও বাড়িয়ে নেওয়া হয় ১ লাখ ১৫ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা।

এদিকে, আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকার ব্যাংক থেকে আরও বেশি ব্যাংক ঋণ নেওয়ার চিন্তা করছে। বাজেট ঘাটতি মেটাতে আগামী অর্থবছরে ব্যাংক থেকে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা নেওয়া হতে পারে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।

জাহিদ হোসেন বলেন, 'একই সময়ে, সরকার যদি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে আরও বেশি ঋণ নেয়, তাহলে বেসরকারি ও ব্যক্তিগত খাতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।'

'কাজেই, বাজেট ঘাটতি যতটা সম্ভব কম রাখতে হবে এবং যতটা সম্ভব সহজ শর্তে বৈদেশিক অর্থায়ন জোগাড় ও সেগুলোর ব্যবহার বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে,' যোগ করেন তিনি।

জাহিদ হোসেন মনে করেন, বহুপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বাজেট সহায়তা পেতে সরকারকে কাঠামোগত সংস্কার করতে হবে।

এক্ষেত্রে আগামী অর্থবছরে জ্বালানি, রাজস্ব, ব্যয় ও ট্যারিফের ক্ষেত্রে কিছু সংস্কারের প্রস্তাব করেছেন তিনি।

তিনি বলেন, 'এসব ক্ষেত্রে আমরা কতটা এগিয়ে যেতে পারব সেটাই এখন দেখার বিষয়।'

এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, 'রাজস্ব বাড়াতে সরকারকে কর প্রশাসন ও কর নীতিকে করদাতাবান্ধব করতে হবে। সরকার এটা কতটা করতে পারে সেটাই দেখার বিষয়।'

'এখানে দেখা যায় কিছু ক্ষেত্রে কর বাড়ানো, কিছু কমানো এভাবে চলে। অনেক ক্ষেত্রে আপাতভাবে সেগুলো ভালো মনে হলেও, বেশিরভাগ সময় দেখা যায় সেগুলো অতটা কার্যকর হয় না,' বলেন তিনি।

তিনি বলেন, 'এখন পর্যন্ত, কর নীতিতে দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন নেই। জাতীয় স্বার্থ, অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং সম্পদের পুনর্বণ্টনের কথা মাথায় রেখে কর নীতি সংস্কার করা উচিত।'

সরকার ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জ্বালানির দাম বাড়িয়েছে উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংকের সাবেক এই কর্মকর্তা বলেন, 'কোনো নীতির ওপর ভিত্তি করে সরকার যদি মূল্য নির্ধারণের ব্যবস্থা নেয়, তাহলে দাম কমতে পারে। সেক্ষেত্রে মানুষ কিছুটা স্বস্তি পাবে।'
 

Comments

The Daily Star  | English

Customs flags hurdles at 3rd terminal of Dhaka airport

Customs House Dhaka said it has found more than a dozen issues related to infrastructure, security, and operational readiness of the new terminal

11h ago