ক্যাম্পারের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে তামিমদের হারাল চট্টগ্রাম

Curtis Campher
উইকেট নিয়ে ক্যাম্পারের উল্লাস। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

চট্টগ্রামের জয়ে নায়ক হওয়ার কথা ছিলো আবিস্কা ফার্নান্দোর। পুরো ২০ ওভার খেলে তিনিই তো গড়ে দিয়েছেন বড় রানের ভিত। তবে অসাধারণ অলরাউন্ড নৈপুণ্যে সব আলো নিজের দিকে কেড়ে নিলেন আইরিশ অলরাউন্ডার কার্টিস ক্যাম্পার। ব্যাটিংয়ে ৯ বলে ২৯ রান, মিডিয়াম পেসে ২০ রানে ৪ উইকেটের সঙ্গে আছে দারুণ গুরুত্বপূর্ণ তিন ক্যাচ। রানে ভরা উইকেটে ক্যাম্পারের সব্যসাচী ভূমিকায় পের উঠল না ফরচুন বরিশাল।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার দিনের প্রথম ম্যাচে উইকেট ছিল ব্যাটিং সহায়ক। তাতে ১৯৩ রান করে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স জিতেছে  ১০  রানে। টুর্নামেন্টে চার ম্যাচ খেলে এটি তাদের তৃতীয় জয়। সমান ম্যাচে তৃতীয় হার বরিশালের।

চট্টগ্রামকে দুইশোর কাছে পুঁজি পাইয়ে দিতে ৫০ বলে অপরাজিত ৯১ রানের ইনিংস খেলেন শ্রীলঙ্কান ওপেনার আবিস্কা। শাহাদাত হোসেন দিপু, নাজিবুল্লাহ জাদরান তাকে সঙ্গ দিলেও শেষ দিকে আসল কাজ করেন ক্যাম্পার। ৯ বলে ২৯ রান করে দলকে নিয়ে যান চূড়ায়।

 রান তাড়ায় আহমেদ শেহজাদের ঝড়ো শুরু টেনে নিতে পারেননি তামিম, সৌম্যরা। মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরাও ছিলেন মলিন। মেহেদী হাসান মিরাজ অপ্রত্যাশিতভাবে ১৬ বলে ৩৫ রানের ইনিংস খেলে দলের আক্ষেপই কেবল বড় করেছেন।

বিশাল রান তাড়ায় ফরচুন বরিশালকে দারুণ শুরু এনে দেন পাকিস্তানের শেহজাদ। তার ঝড়ে পাওয়ার প্লে দারুণ কাজে লাগায় বরিশাল।  তামিমের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৩৩ বলে ৫৫ রান। যাতে ১৭ বলে ৩৯ রানই শেহজাদের, তামিম যোগ করেন ১৬ বলে ১৪।

বিলাল খানের বলে শেহজাদ ক্যাচ দিয়ে ফেরার পর খোলস ছেড়ে বেরুতে থাকেন তামিম। তবে কিছু বাউন্ডারি বের করে ফের ধুঁকতে থাকেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে সৌম্য সরকারের সঙ্গে ২৯ বলে ৩৬ রানের জুটি আসার পর বিদায় বরিশাল অধিনায়কের। কার্টিস ক্যাম্পারের বলে ছক্কার চেষ্টায় বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দিয়ে ফেরার সময় তার রান ৩০ বলে ৩৩। একদমই টি-টোয়েন্টি সুলভ না, বিশেষ করে ১৯৪ রান তাড়ায়।

কার্টিস গতির তারতম্য এনে তিন বল পরই কাবু করেন সৌম্যকেও। থিতু হওয়া বাঁহাতি ব্যাটার খোঁচা মেরে ক্যাচ দেন কিপারের গ্লাভসে। ভালো শুরুর পরই আচমকা পথ হারিয়ে ফেলে বরিশাল।

অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ওভারপ্রতি ১০ রানের উপরে থাকার চাহিদার সময় নেমে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। তিনিও শিকার আইরিশ অলরাউন্ডার ক্যাম্পারের। মিড উইকেট দিয়ে উড়াতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ধরা দেন ৪ বলে ৩ রান করে। এক বল পর ইয়ানিক কারিয়াহ ক্যাম্পারের বলে তার হাতেই ক্যাচ দেন। আবারও এক ওভারে জোড়া শিকার ধরেন তিনি। 

চরম ব্যাকফুটে যাওয়া অবস্থা থেকে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দলকে টেনে তুলেন মিরাজ। আলগা বোলিংয়ের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ৩ চার, ২ ছয় মারেন তিনি। আল-আমিনের বলে মিরাজের দারুণ ক্যাচ ধরে সব অনিশ্চয়তা দূর করেন ক্যাম্পার। পরে মুশফিকের ক্যাচটাও গেছে তার হাতে। ১৮৩ পর্যন্ত যেতে পেরেছে বরিশাল।

টস হেরে ব্যাটিং পেয়ে তাইজুল ইসলামের বলে তিন চারে উড়ন্ত শুরুর আভাস দিয়েই ছক্কার চেষ্টায় ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তানজিদ হাসান তামিম। ইমরুনুজ্জামান তিনে নেমে আবার ব্যর্থ। নিজের জায়গা প্রশ্নবিদ্ধ করে ৮ বলে ৪ করে তার বিদায় তাইজুলের আর্ম বলে বোল্ড হয়ে। দ্রুত দুই উইকেট হারালেও পাওয়ার প্লের সুবিধা তোলার চিন্তা থেকে সরেনি চট্টগ্রাম।

আবিস্কা টেনে নেন দলকে। শাহাদাত হোসেন দিপুকে নিয়ে উঠান রান। প্রথম ৬ ওভারে আসে ৫০ রান। মাঝের ওভারেও চলতে থাকে দুজনের জুটি। তৃতীয় উইকেটে ৫৫ বলে ৭০ আসার পর দিপুর বিদায় ২৯ বলে ৩১ করা ব্যাটার আউট হন ইয়ানিক কারিয়াহর স্পিনে।

এরপর নাজিবুল্লাহ জাদরানকে নিয়ে ৩৮ বলে ৬৮ রান যোগ করেন আবিস্কা। যাতে নাজিবুল্লাহর অবদান ১৯ বলে স্রেফ ১৮। বাকি ১৯ বলে ৪৭ রান আবিস্কার। কতটা দাপট ছিল এই লঙ্কানের তাতেই স্পষ্ট।

নাজিবুল্লাহর পর শেষ দিকে নেমে তান্ডব বইয়ে দেন ক্যাম্পার। মাত্র ৯ বলে ২৯ রানে অপরাজিত থেকে দলকে চাঙ্গা অবস্থায় নেন তিনি। পরে বোলিং-ফিল্ডিংয়ে নিজেকে মেলে ধরে নায়ক এই তারকা।

Comments

The Daily Star  | English

The life cycles of household brands

For many, these products are inseparable from personal memory

13h ago