শান্ত-মুশফিকের সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের দিন

দিনের শুরুতে ছিল বড় শঙ্কা। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটার ফিরে গেছেন দলীয় ৪৫ রানেই। আরও একটি হতাশাজনক দিন তখন চোখ রাঙাচ্ছিল টাইগারদের। কিন্তু এরপর দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে কী দারুণ ব্যাটিংই না করলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। দুইজনই পেলেন সেঞ্চুরি। তাতে দিনটা কেবলই বাংলাদেশের।
সোমবার গল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিন শেষে দারুণ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। দিনশেষে ৩ উইকেটে ২৯২ রান তুলেছে টাইগাররা। শান্ত ১৩৬ রানে অপরাজিত রয়েছেন। ২৬০ বলের ইনিংস সাজান ১৪ চার ও এক ছক্কায়। আর মুশফিক ১৮৬ বলে ৫টি চারের সাহায্যে ১০৫ রানে অপরাজিত রয়েছেন।
অথচ চাপে ছিলেন দুই ব্যাটারই। অনেক দিন থেকে রান খরার মধ্যে ছিলেন মুশফিক। গত এক বছরে ছিল না কোনো ফিফটিও। অন্যদিকে কদিন আগেই ওয়ানডে সংস্করণের অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় শান্তকে। এর আগে সমালোচনার মুখে ছাড়তে হয়েছিল টি-টোয়েন্টির নেতৃত্বও।
শুরুতেই দুই ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও সাদমান ইসলামের সঙ্গে থিতু হওয়া মুমিনুল হকের বিদায়ের পর দলের হাল ধরেছিলেন শান্ত ও মুশফিক। দেশে শুনে ব্যাটিং করে শুরুর ধাক্কা সামলে নেন। এরপর ধীরে ধীরে দলকে এনে দিয়েছেন দারুণ অবস্থানে।
সাম্প্রতিক সময়ে নিয়মিত ফিফটি পেলেও তাকে সেঞ্চুরিতে পরিণত করতে পারছিলেন না শান্ত। সেই ২০২৩ সালের নভেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন অঙ্কের দেখা পেয়েছিলেন তিনি। এদিন খরা কাটালেন সেঞ্চুরির। ১০৭ বলে ফিফটি স্পর্শ করা শান্ত তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন ২০২ বলে। এই সেঞ্চুরির পথে ১১টি চারের সঙ্গে একটি ছক্কা মেরেছেন অধিনায়ক।
অন্যদিকে শেষ ১৪ ইনিংসে কোনো পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস ছিল না মুশফিকের। রাওয়ালপিন্ডিতে গত আগস্টে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন। এরপর এদিন প্রিয় প্রতিপক্ষকে পেয়ে জ্বলে ওঠেন। ক্যারিয়ারের ১২ সেঞ্চুরির ৪টিই এখন লঙ্কানদেড় বিপক্ষে। ১৭৬ বলে সেঞ্চুরি স্পর্শ করা মুশফিক ফিফটি পূরণ করেছিলেন ৮৪ বলে। সেঞ্চুরির পথে মাত্র ৫টি বাউন্ডারি আসে তার ব্যাট থেকে।
আর এরমধ্যেই তাদের জুটিতে ৪৪৩ বলে এসেছে ২৪৭ রান। যা ভাঙতে পারে দেশের চতুর্থ উইকেটের জুটির রেকর্ডও। অবশ্য বর্তমান রেকর্ডেও আছেন মুশফিক। ২০১৮ সালে মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চতুর্থ উইকেটে ২৬৬ রানের জুটি গড়েছিলেন মুমিনুলের সঙ্গে।
এর আগে সকালের প্রথম সেশনের প্রথম ঘণ্টা পার হওয়ার কিছুক্ষণ পরই তিন উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। দৃষ্টিকটুভাবে আউট হয়েছেন ওপেনার বিজয়। আসিতা ফার্নেন্দোর বলে খোঁচা মেরে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ডানহাতি ওপেনার। ১০ বল খেলে কোনো রান করতে পারেননি তিনি।
তিনে নেমে মুমিনুল সচল রাখেন রানের চাকা। আরেক পাশে সাদমান ইসলাম ধুঁকছিলেন। অভিষিক্ত থারিন্দু রত্নায়েকের স্লিপে ক্যাচ দিয়ে সাদমান ফেরেন ৫৩ বলে ১৪ রান করে। আর ব্যক্তিগত ২১ রানে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে গেলেও ২৯ রানে আর রক্ষা পাননি মুমিনুল। থারিন্দুর বলে দ্বিতীয় দফায় তার ক্যাচ নিয়ে তাকে ফেরান ধনঞ্জয়া।
Comments