মিরপুরের উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াই এখন উদ্বেগের বিষয়

শ্রীলঙ্কার মাটিতে ২-১ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের পর গতকাল বৃহস্পতিবার দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ। তবে সামনের সিরিজে খেলতে নামার আগে নিজেদের কন্ডিশনে মানিয়ে নিতে তেমন সময় পাচ্ছে না লিটন দাসের দল। কারণ গত বুধবার ঢাকায় পৌঁছে গেছে পাকিস্তান। তাদের বিপক্ষে মিরপুরে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে অংশ নেবে টাইগাররা।
লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে লড়াইবিহীন হারের পরের দুটিতে দারুণ পারফরম্যান্সে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার খেলোয়াড়দের জন্য রাখা হয়েছে একটি ঐচ্ছিক অনুশীলন সেশন। আগামীকাল থেকে শুরু হবে স্বাগতিক দলের পুরোদমে অনুশীলন। অন্যদিকে, রোববার অনুষ্ঠেয় প্রথম টি-টোয়েন্টিকে সামনে রেখে পাকিস্তান দল আজ থেকেই নিয়মিত অনুশীলনে করবে।
টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজে হারের পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকে বেশ কিছু ইতিবাচক বিষয় গ্রহণ করতে পারে বাংলাদেশ। তবে বিদেশের কন্ডিশনে টানা প্রায় এক মাস খেলার কারণ ব্যাটারদের কয়েকজনকে হয়তো একটি নির্দিষ্ট ছন্দে দেখা গেছে। কিন্তু দেশে অনুশীলনের সময় পুরোপুরি সহায়ক উইকেট মেলে না তাদের। বিশেষ করে, বছরের এই সময়ে যখন নিয়মিত বৃষ্টি পড়তে থাকে।
আরেকটি চ্যালেঞ্জ হলো, পাকিস্তানের বিপক্ষে আসন্ন সিরিজটি হবে শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে বাংলাদেশ সবশেষ খেলেছিল প্রায় নয় মাস আগে। মিরপুরে তাদের শেষ ম্যাচটি ছিল ২০২৪ সালের অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। ওই টেস্টে তারা ৭ উইকেটের ব্যবধানে হেরেছিল।
গত বুধবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদিন ফাহিম পাকিস্তান সিরিজের উইকেট কেমন হবে তা নিয়ে একটি নির্দিষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সেদিনই শ্রীলঙ্কার মাটিতে সিরিজ জয়ের পর লিটন দাস একই শঙ্কা জানান।
বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'মিরপুরের উইকেট পাকিস্তান সিরিজে কেমন আচরণ করবে তা আমি জানি না। শুনেছি, ঢাকায় প্রতিদিন বৃষ্টি হচ্ছে, তাই উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য কঠিন হতে পারে। ব্যাটাররা ব্যর্থ হতে পারে, তবে আমরা হতাশ হব না। আমরা আমাদের শতভাগ দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব।'
প্রতিপক্ষ পাকিস্তানকে নিয়ে লিটন বলেন, 'মিরপুরে পাকিস্তানকে হারানো সহজ হবে না। ওদের বোলিং আক্রমণে বৈচিত্র্য আছে। বিপিএলে তাদের অনেকে খেলে। তাই তারা এখানকার কন্ডিশন সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখে। তবে আমরা যদি বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে খেলি, তাহলে ম্যাচ জেতা সম্ভব।'
কম বাউন্সের উইকেট উপমহাদেশের দলগুলোর জন্য ততটা সমস্যা সৃষ্টি করে না, যতটা করে এই অঞ্চলের বাইরের দলগুলোর জন্য। তবে সামনে যেসব গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট আসছে, তা মাথায় রেখে বাংলাদেশের ব্যাটারদের আত্মবিশ্বাস এমন একটি পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে, যেন তারা চাপের মুখেও একটি ইউনিট হিসেবে কার্যকর থাকতে পারে। কিন্তু ঘরের মাঠে যে ধরনের উইকেটে খেলা হয়, সেগুলো হয়তো সেসব দক্ষতায় শাণ দেওয়ার জন্য আদর্শ নাও হতে পারে।
পাকিস্তানকে মোকাবিলার জন্য শ্রীলঙ্কা সফরের স্কোয়াড অপরিবর্তিত রেখেছে বাংলাদেশ। দল গঠনে এখন ধারাবাহিকতা কাম্যও বটে। তবে এশিয়া কাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট সামনে রেখে সবশেষ সিরিজটির পারফরম্যান্স ভবিষ্যতের জন্য কতটা মূল্যায়নযোগ্য হবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
Comments