উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ

ইন্টারকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন ম্যান সিটি

ছবি: টুইটার

গত এক যুগে সাতবার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ট্রফি জিতেছে ম্যানচেস্টার সিটি। পেপ গার্দিওলার অধীনেই পাঁচবার। কিন্তু উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বরাবরই মুখ থুবড়ে পড়ছিল দলটি। হয়েও যেন হচ্ছিল না। অবশেষে গেরো খুলতে পারল তারা। ইন্টার মিলানকে হারিয়ে ইউরোপের সর্বোচ্চ ক্লাব আসরের অধরা শিরোপা ঘরে তুলল তারা।

শনিবার রাতে ইস্তানবুলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ইন্টার মিলানকে ১-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সিটি। দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের একমাত্র গোলটি এসেছে স্প্যানিশ মিডফিল্ডার রদ্রির কাছ থেকে।

বছর দুই আগে এই রদ্রিকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে না খেলানো নিয়ে হয়েছিল বিস্তর সমালোচনা। প্রথমবারের মতো সেবার ফাইনালে উঠেছিল সিটি। পোর্তোর মাঠে সেই ম্যাচে চেলসির বিপক্ষে ফেভারিট তকমা নিয়েও হারতে হয় তাদের। অনেকেরই ধারণা, রদ্রিকে না নামানোর কারণেই মাশুল দিতে হয়েছিল সিটিজেনদের। দুই বছর পর আরেকটি ফাইনালে সিটির জয়ের মূল নায়ক সেই রদ্রি।

প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জিতে এবারের মৌসুমে ট্রেবলও পূরণ করে নিল সিটি। এর আগে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও এফএ কাপের শিরোপা জিতেছিল তারা। তাদের আগে একমাত্র ইংলিশ ক্লাব হিসেবে ট্রেবল জিতেছিল তাদের নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। আর কোচ হিসেবে দুবার ট্রেবল জয়ের নতুন রেকর্ডও গড়লেন গার্দিওলা। এর আগে বার্সেলোনার কোচ হিসেবে প্রথমবার ট্রেবল জিতেছিলেন তিনি।

সবার নজর ছিল আর্লিং হালান্ডের দিকে। চলতি মৌসুমে সিটিতে যোগ দিয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে করেছেন ৫২টি গোল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও আছে ১২টি। কিন্তু বড় ম্যাচে আরও একবার হতাশ করেছেন তিনি। এদিনও সেভাবে খুঁজে পাওয়া যায়নি তাকে।

তবে নিজেদের কিছুটা দুর্ভাগা ভাবতেই পারে ইতালিয়ান সিরি আর ক্লাব ইন্টার। গোলপোস্ট বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সিটির ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক এদারসন মোয়ারেসও করেন অবিশ্বাস্য কিছু সেভ। অন্যথায়, একাধিক গোল পেতে পারত তারা। ভাগ্যটা সঙ্গে ছিল না তাদের।

ছবি: টুইটার

বেশ কিছু হাফ চান্স পেলেও ফাইনালে গোল করার মতো প্রথম সুযোগ আসে ২৭তম মিনিটে। সিটির বেলজিয়ান মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইনার বাড়ানো বল বাঁ প্রান্তে ফাঁকায় পেয়ে গিয়েছিলেন হালান্ড। তবে তার শট দারুণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন ইন্টারের ক্যামেরুনিয়ান গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানা।

এর আট মিনিট পর বড় ধাক্কা খায় সিটি। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়ে মাঠ ছাড়েন দলটির সেরা তারকা ডি ব্রুইনা। মাঠে নামার কিছুক্ষণ পর থেকেই অস্বস্তিতে ভুগছিলেন তিনি। তার জায়গায় মাঠে নামেন ইংলিশ মিডফিল্ডার ফিল ফোডেন।

গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর ৫৯তম এদারসন ও সুইস ডিফেন্ডার মানুয়েল আকাঞ্জির ভুল বোঝাবুঝিতে ডি-বক্সের বাঁ প্রান্তে ফাঁকায় বল পান লাউতারো মার্তিনেজ। কিন্তু দুরূহ কোণ থেকেই নিজেই শট নেওয়ার সিদ্ধান্ত আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার। তার শট ঠেকিয়ে দেন এদারসন। অথচ অপর প্রান্তে অনেকটা ফাঁকায় ছিলেন বদলি খেলোয়াড় রোমেলু লুকাকু।

৬৮তম মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায় সিটি। ডান প্রান্ত থেকে পর্তুগিজ মিডফিল্ডার বার্নার্দো সিলভার শট প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারের শরীরে লেগে ফাঁকায় চলে যায় রদ্রির কাছে। কাছের পোস্ট ঘেঁষে নেওয়া তার বুলেট গতির ভলি জাল খুঁজে পেলে উল্লাসে মাতে ইতিহাদ স্টেডিয়ামের ক্লাবটি।

তিন মিনিট পরই সমতায় ফিরতে পারতো ইন্টার। সুবর্ণ এক সুযোগ নষ্ট হয় তাদের। প্রথমে ফেদেরিকো দিমার্কোর হেড গোলপোস্টে লেগে ফিরে আসে। ফাঁকায় ফিরতি বল পেয়েও হেড করেছিলেন তিনি। কিন্তু এবার তার হেড ফিরে আসে সতীর্থ বেলজিয়ান স্ট্রাইকার লুকাকুর শরীরে লেগে।

৭৭তম মিনিটে অবিশ্বাস্য সেভে নেরাজ্জুরিদের ম্যাচে রাখেন ওনানা। রদ্রির বাড়ানো বলে সঙ্গে লেগে থাকা ডিফেন্ডারদের এড়িয়ে তাকে একা পেয়ে গিয়েছিলেন ফোডেন। বাম দিকে ঝাঁপিয়ে তার শট ঠেকান ইন্টার গোলরক্ষক।

সমতায় ফিরতে এরপর সিটিকে চেপে ধরে ইন্টার। ৮৮তম মিনিটে গোল পাওয়ার খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছিল তারা। তবে সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন লুকাকু। বদলি জার্মান মিডফিল্ডার রবিন গোসেনের ক্রসে ছয় গজের বক্স থেকে ফাঁকায় হেড নেওয়ার সুযোগ পান তিনি। কিন্তু নেন গোলরক্ষক বরাবর। কোনোমতে পা দিয়ে ঠেকিয়ে সে যাত্রা জাল অক্ষত রাখেন এদারসন।

ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে এদারসন আরও একটি দুর্দান্ত সেভ করেন। কর্নার থেকে গোসেনের নেওয়া হেড ঝাঁপিয়ে ঠেকান তিনি। এর পরপরই রেফারি শেষ বাঁশি বাজালে উল্লাসে মাতে সিটিজেনরা।

Comments

The Daily Star  | English

Govt decides to ban AL until completion of ICT trial

Law Adviser Prof Asif Nazrul said this at a press briefing after a special meeting of the advisory council tonight

1h ago