টাইব্রেকারে স্পেনকে হারিয়ে আবার চ্যাম্পিয়ন রোনালদোর পর্তুগাল

নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ের খেলায় আলাদা করা গেল না কাউকে। তাই ফল নির্ধারণের জন্য দ্বারস্থ হতে হলো টাইব্রেকারের। সেখানে নায়ক হিসেবে আবির্ভূত হলেন গোলরক্ষক দিয়োগো কস্তা। তার নৈপুণ্যে স্পেনকে হারিয়ে উয়েফা নেশন্স লিগে চ্যাম্পিয়ন হলো পর্তুগাল।
রোববার রাতে মিউনিখের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় অনুষ্ঠিত ফাইনালে সব মিলিয়ে ১২০ মিনিট শেষ হয় ২-২ সমতায়। এরপর পেনাল্টি শুটআউটে ৫-৩ গোলে জিতে শিরোপা পুনরুদ্ধার করে পর্তুগিজরা। নেশন্স লিগে প্রথম দল হিসেবে একাধিকবার চ্যাম্পিয়ন হলো দলটি। ২০১৮-১৯ মৌসুমে প্রতিযোগিতার প্রথম আসরে শিরোপা জিতেছিল তারা।
টাইব্রেকারে রুবেন নেভেসের নেওয়া শটটি জালে যেতেই উল্লাসে মেতে ওঠে পর্তুগাল। কিংবদন্তি তারকা ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর চোখে দেখা যায় জল, মুখে ছিল চওড়া হাসি।
নেভেসের আগে স্পট-কিক থেকে জাল খুঁজে নেন গনসালো রামোস, ভিতিনিয়া, ব্রুনো ফার্নান্দেস ও নুনো মেন্দেস। অন্যদিকে, স্পেনের প্রথম তিনটি শটে লক্ষ্যভেদ করেন মিকেল মেরিনো, আলেক্স বায়েনা ও ইস্কো। এরপর অধিনায়ক আলভারো মোরাতার স্পট-কিক রুখে দেন কস্তা।
গোটা ম্যাচে বল দখলের পাশাপাশি আক্রমণে এগিয়ে ছিল স্প্যানিশরা। ৬১ শতাংশের বেশি সময় বল পায়ে রেখে গোলমুখে ১৬টি শট নেয় তারা। এর ছয়টি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে, গোলপোস্টে পর্তুগালের নেওয়া সাতটি শটের মধ্যে জালে যাওয়া দুটি শটই ছিল কেবল লক্ষ্যে।
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে শুরু হওয়া ফাইনালে ২১তম মিনিটে এগিয়ে যায় স্পেন। লামিন ইয়ামালের ক্রস বিপদমুক্ত করতে পারেননি রুবেন দিয়াস। গোলরক্ষক কস্তা বল হাতে জমাতে ব্যর্থ হন নিকো উইলিয়ামসের চ্যালেঞ্জের মুখে। ফাঁকায় থাকা মার্তিন জুবিমেন্দি খালি জালে অনায়াসে বল পাঠিয়ে দেন।
এই লিড পাঁচ মিনিটও ধরে রাখতে পারেনি লুইস দে লা ফুয়েন্তের শিষ্যরা। পেদ্রো নেতোর পাস পেয়ে ডি-বক্সের ভেতরে ঢুকে কোণাকুণি শটে জাল কাঁপিয়ে পর্তুগালকে সমতায় ফেরান মেন্দেস। তবে ফের এগিয়ে গিয়েই বিরতিতে যায় স্প্যানিশরা। ৪৫তম মিনিটে পেদ্রির চমৎকার রক্ষণচেরা পাস ধরে গোল করেন মিকেল ওইয়ারজাবাল।
৪৯তম মিনিটে ফার্নান্দেস জালে কাঁপালেও অফসাইডের জন্য তা বাতিল হয়। তবে ৬১তম মিনিটে আর হতাশ হয়নি রবার্তো মার্তিনেজের শিষ্যরা। আন্তর্জাতিক ফুটবলের শীর্ষ গোলদাতা রোনালদো পান ১৩৮তম গোল। মেন্দেসের ক্রস স্পেনের রক্ষণভাগের একজনের পায়ে লেগে তার কাছে পৌঁছালে সহজ সুযোগ কাজে লাগান তিনি।
৮৮তম মিনিটে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন রোনালদো। ৪০ পেরিয়ে যাওয়া অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড নিজেকে মেলে ধরলেও প্রতিপক্ষ দলে থাকা লামিন ইয়ামাল ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। ১৮ ছুঁইছুঁই তরুণ তারকা মেটাতে পারেননি প্রত্যাশার দাবি।
নির্ধারিত ৯০ মিনিটের পর অতিরিক্ত সময়ে দুই দল বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করলেও গোল আসেনি। ফলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। মূল লড়াইয়ে দুবার পিছিয়ে পড়ে ঘুরে দাঁড়ানো পর্তুগিজরাই সেখানে হাসে বিজয়ীর হাসি। জাতীয় দলের জার্সিতে আরেকটি অর্জনের স্বাদ নেন রোনালদো।
Comments