সিনারের হৃদয় ভেঙে অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনে লাল মাটিতে চ্যাম্পিয়ন আলকারাজ

রোলাঁ গারোর লাল মাটিতে রচিত হলো আরেকটি রূপকথা! ফরাসি ওপেনের ফাইনালে টানটান উত্তেজনার অবিশ্বাস্য এক মহারণে কার্লোস আলকারাজ ফিরে এলেন দুই সেট পিছিয়ে পড়েও। একটি-দুটি নয়, তিন-তিনটি চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্ট বাঁচালেন তিনি। বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর খেলোয়াড় ইয়ানিক সিনারের হৃদয় ভেঙে ধরে রাখলেন শিরোপা।
রোববার কোর্ট ফিলিপ শাত্রিয়েতে আকাশচুম্বী রোমাঞ্চের মধ্যে আলকারাজ জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন ৪-৬, ৬-৭ (৪-৭), ৬-৪, ৭-৬ (৭-৩) ও ৭-৬ (১০-২) গেমে। ম্যাচটি শেষ হতে সময় লেগেছে পাঁচ ঘণ্টা ২৯ মিনিট। এটি ফরাসি ওপেনের সুদীর্ঘ ইতিহাসের দীর্ঘতম ফাইনাল।
২২ বছর বয়সী স্প্যানিশ তারকা আলকারাজ এর আগে কখনোই প্রথম দুটি সেট হেরে কোনো ম্যাচ জিততে পারেননি। অথচ এবার সেই বৃত্ত ভেঙে তিনি ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছেন টেনিসের অন্যতম বড় মঞ্চে। এটি তার ক্যারিয়ারের টানা দ্বিতীয় ফরাসি ওপেন এবং সব মিলিয়ে পঞ্চম গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা।
চতুর্থ সেটে সিনার যখন ৫-৩ ব্যবধানে এগিয়ে যান, তখন মনে হচ্ছিল, চ্যাম্পিয়ন হচ্ছেন ২৩ বছর বয়সী ইতালিয়ান তারকাই। কিন্তু সেখান থেকে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে এমনভাবে আলকারাজ ঘুরে দাঁড়ান— যা বিশেষণ দিয়ে প্রকাশ ভীষণ দুরূহ!
সিনার রোলাঁ গারোতে প্রথম শিরোপার খোঁজে কোর্টে নেমেছিলেন। শেষ পর্যন্ত টানা তৃতীয় গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের স্বপ্ন অপূর্ণ রেখে তাকে থামতে হয় আলকারাজের অতিমানবীয় পারফরম্যান্সের কারণে। তবে বহুল প্রতীক্ষিত এই ম্যাচে দক্ষতা, সামর্থ্য ও মানসিকতার যে লড়াই দেখা গেছে, তা টেনিসপ্রেমীদের হৃদয়ে গেঁথে থাকবে বহুদিন। প্রত্যাশার চেয়েও অনেক বেশি কিছু দিয়েছে র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দুই খেলোয়াড়ের মধ্যকার প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনাল।
সুইডিশ বিয়র্ন বোর্গ ও স্বদেশি রাফায়েল নাদালের পর তৃতীয় সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে পাঁচটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছেন আলকারাজ। ২০১৯ সালের উইম্বলডনের ফাইনালে সার্বিয়ান নোভাক জোকোভিচের পর ম্যাচ পয়েন্ট বাঁচিয়ে গ্র্যান্ড স্ল্যাম চ্যাম্পিয়ন হওয়া প্রথম খেলোয়াড় তিনি।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আলকারাজ বলেছেন, 'এই ট্রফিটা জিতে আমি খুশি। আজ রাতে ভালো ঘুম হবে না, তবে এটা ঠিক আছে।' অন্যদিকে, সিনার বলেছেন, 'প্রতিটি টুর্নামেন্টে ও ইতিহাস গড়ায় তোমার (আলকারাজ) সঙ্গে কোর্ট ভাগাভাগি করা সত্যিই একটি সৌভাগ্যের বিষয়।'
Comments