বিদেশি সাইট থেকে কেনা পণ্য ডেলিভারি না পেলে যা করবেন

এ ধরনের অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে সাধারণত যে সব সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় সেগুলো হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্থ পণ্য, ভুল পণ্য দেওয়া এবং মাঝে মাঝে প্যাকেজগুলো ঠিকমতো ডেলিভার না করা। 
বিদেশি সাইট থেকে কেনা পণ্য ডেলিভারি না পেলে যা করবেন

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান অ্যামাজন, আলিএক্সপ্রেস, ইবে'র মতো বিভিন্ন সাইট থেকে বর্তমানে বাংলাদেশের অনেকে নিয়মিত পণ্য কেনেন। তবে, এত বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে পণ্য কিনেও মাঝে মধ্যে ডেলিভারি পেতে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। 

এ ধরনের অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে সাধারণত যে সব সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় সেগুলো হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্থ পণ্য, ভুল পণ্য দেওয়া এবং মাঝে মাঝে প্যাকেজগুলো ঠিকমতো ডেলিভার না করা। 

অ্যামাজন থেকে কেনা পণ্য সময়মতো না পৌঁছালে যা করতে হবে

ধরুন অ্যামাজনে কোনো একটি পণ্য কেনার পর সেটি যদি আপনার কাছে না আসে, সে ক্ষেত্রে, আপনি যা করতে পারেন-

অর্ডার করা পণ্যটি বিক্রেতা না পাঠালে

অনেকেই অ্যামাজনের ডেলিভারির সমস্যার মুখোমুখি হন। এরকম হলে প্রথমত, আতঙ্কিত হবেন না। কারণ, অর্ডার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এবং শিপিং প্রক্রিয়ায় প্রবেশ না করা পর্যন্ত অ্যামাজন আপনার ক্রেডিট কার্ড চার্জ করবে না; অর্থাৎ কোনো টাকা কেটে নেবে না। সেই সময় পর্যন্ত, আপনি তখনো অ্যাকাউন্ট অ্যান্ড লিস্টস অপশন থেকে অ্যাকাউন্টে গিয়ে আপনার অর্ডারগুলো থেকে অর্ডার বাতিল করার অপশনটি সিলেক্ট করে অর্ডারটি বাতিল করতে পারবেন।

আপনার যদি সেই নির্দিষ্ট পণ্যটির দরকার হয়, তাহলে অন্য কোনো বিক্রেতা খুঁজুন। এ ক্ষেত্রে আপনি চাইলে অ্যামাজনেই সেটি করতে পারবেন।

অ্যামাজন আইটেম ডেলিভারড হিসেবে দেখানো হলেও তা যদি আপনার কাছে না পৌঁছায়

কখনো কখনো অ্যামাজন বলে, আপনার প্যাকেজটি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু আসলে সেটি আসেনি। এই ধরনের পরিস্থিতির জন্য অ্যামাজনের একটি নির্দেশিকা রয়েছে। যেগুলো আগে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।

  • আপনার অর্ডারে শিপিং ঠিকানাটি সঠিক ছিল তা পরীক্ষা করুন।
  • ডেলিভারির চেষ্টা করা হয়েছে কি না সেই সম্পর্কে নোটিশ দেখুন।
  • ডেলিভারি লোকেশনের আশেপাশে চেক করুন।
  • আপনার প্রতিবেশীরা আপনার প্যাকেজ পেয়েছে কি না তা নিশ্চিত হয়ে নিন।
  • আপনার যদি একটি অ্যামাজন লকার থাকে, সে ক্ষেত্রে আপনার পণ্য লকারে ডেলিভারড হয়েছে কি না পরীক্ষা করুন।
  • অ্যামাজনের ডেলিভারি অনেক সময় নিয়মিত ডাক পরিষেবার মতো মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে। সেক্ষেত্রে, এগুলো সম্পর্কে খোঁজ রাখুন।
  • ৪৮ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। কখনো কখনো প্যাকেজগুলো ট্রানজিটে থাকাকালীনও ডেলিভারড হিসেবে দেখাতে পারে।
  • প্যাকেজ না আসলে অ্যামাজনের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন যেভাবে

যদি ৪৮ ঘণ্টা পার হয়ে যায় এবং আপনার ডেলিভারির কোনো চিহ্ন না থাকে। তাহলে আপনাকে সরাসরি না আসা প্যাকেজ সম্পর্কে অ্যামাজন গ্রাহক পরিষেবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। অ্যামাজনে লগ-ইন করুন এবং সেখান থেকে হেল্প > হেল্প টপিকস > নিড মোর হেল্প > কন্টাক্ট আস-এ যান।

আপনি বটের মাধ্যমে কথা বলবেন নাকি ফোনের মাধ্যমে তা নির্বাচন করুন। প্রতিনিধিকে আপনার সমস্যাটি ব্যাখ্যা করুন। অ্যামাজন এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিবে। আপনার দাবি সত্যি হলে, তারা আপনাকে টাকা ফেরত দেবে।

'ফুলফিলড বাই অ্যামাজন' কি?

অ্যামাজন ওয়েবসাইটে অ্যামাজনের নিজস্ব পণ্যের পাশাপাশি তৃতীয় পক্ষের খুচরা বিক্রেতাদেরও বিভিন্ন পণ্য রয়েছে। তৃতীয় পক্ষের খুচরা বিক্রেতাদের পণ্য কেনার সময় 'ফুলফিলড বাই অ্যামাজন' লেখাটি থাকে।

লেখাটির মাধ্যমে বোঝা যায়, যদিও পণ্যটি তৃতীয় পক্ষের খুচরা বিক্রেতা বিক্রি করেছে, তবে এটি একটি অ্যামাজন ফুলফিলমেন্ট সেন্টার থেকে আপনার বাড়িতে পাঠানো হচ্ছে।

অর্থাৎ, একজন ক্রেতা হিসেবে আপনি আপনার অ্যামাজন অ্যাকাউন্ট পোর্টালের মাধ্যমে প্যাকেজটি ট্র্যাক করতে পারবেন। অ্যামাজন এখানে গ্রাহক পরিষেবা এবং পণ্যের রিটার্নের জন্য দায়ী। তাই এর মাধ্যমে আপনি সাধারণ পোস্টাল স্ক্যামের বিষয়গুলো এড়াতে পারবেন। সাধারণত 'ফুলফিলড বাই অ্যামাজন'-এর পণ্যগুলো অর্ডার করা তুলনামূলক নিরাপদ।

এ-টু-জেড গ্যারান্টি প্রটেকশন যেভাবে কাজ করে

আপনি যদি তৃতীয় পক্ষের বিক্রেতা থেকে এমন পণ্য কিনে থাকেন যেগুলো 'ফুলফিলড বাই অ্যামাজন' নয়। তাহলে আপনি আপনার অ্যামাজন অ্যাকাউন্ট পোর্টাল ব্যবহার করে কোনো পার্সেল ট্র্যাক করতে পারবেন না। এ ক্ষেত্রে, একজন অসাধু বিক্রেতা কিছু না পাঠিয়েই বলতে পারে পণ্য পাঠিয়েছে। যার মাধ্যমে তারা আপনার কার্ড থেকে টাকা কেটে নিতে পারে। সে ক্ষেত্রে, এ ধরনের প্রতারণা থেকে সুরক্ষার জন্য আপনার জন্য রয়েছে কোম্পানির এ-টু-জেড গ্যারান্টি প্রটেকশন-এর সুবিধা।

এ-টু-জেড-এর সুবিধা নিতে, আপনাকে প্রথমে আপনার অ্যামাজন অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বিক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। তারপর বিক্রেতাকে প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্যে ৪৮ ঘণ্টা সময় দিন। যদি বিক্রেতা আপনাকে এর মধ্যে সন্তোষজনক কোনো প্রতিক্রিয়া না দেয়, সে ক্ষেত্রে আপনি একটি ক্লেইম বা দাবি দায়ের করতে পারেন। এর জন্য আপনাকে নিম্নলিখিত ৫টি শর্তের মধ্যে যেকোনো একটি পূরণ করতে হবে-

  • আপনি ৩০ দিনের মধ্যে কিংবা ডেলিভারির তারিখের ৩ দিন পরেও পণ্যটি না পেলে।
  • আপনার পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত, ত্রুটিপূর্ণ কিংবা অর্ডার করা পণ্যটি থেকে ভিন্ন হলে।
  • আপনি অ্যামাজনে পণ্য ফেরত দেওয়ার পর টাকা ফেরত না পেলে।
  • আন্তর্জাতিকভাবে একটি পণ্য ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে বিক্রেতা যদি একটি মার্কিন ঠিকানা বা একটি আন্তর্জাতিক শিপিং লেবেল প্রদান না করে।
  • বিক্রেতা যদি কাস্টমস অথবা শিপিং চার্জ ভুল গণনা করে। যার জন্য আপনাকে যদি ডেলিভারির সময় সেগুলোর জন্য টাকা দিতে হয়। সে ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য।

আনুমানিক ডেলিভারি তারিখের ৯০ দিনের মধ্যে আপনাকে অবশ্যই এ-টু-জেড ক্লেইম করতে হবে। এর জন্য, অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড লিস্টস > ইয়োর অ্যাকাউন্ট > ইয়োর অর্ডারস-এ যান। আপনি যে অর্ডারটির জন্য এটি করতে চান সেটি খুঁজুন এবং ফাইল অথবা ভিউ ক্লেইম অপশনে ক্লিক করুন। প্রথম বক্সে, আপনি কেন ক্লেইমটি করছেন তা ব্যাখ্যা করুন। দ্বিতীয় বাক্সে, এ-টু-জেড গ্যারান্টির মাধ্যমে রিফান্ড রিকোয়েস্ট অপশনটি বেছে নিন।

অ্যামাজন প্রাইমের ক্ষেত্রে পণ্য না আসলে

অ্যামাজন প্রাইম সদস্যদের জন্যেও অর্ডারকৃত পণ্য না আসলে, উপরের প্রক্রিয়াগুলো প্রযোজ্য। আপনি এই প্রক্রিয়াগুলোর মাধ্যমে আপনার সমস্যার সমাধান করতে পারবেন। তবে এ ক্ষেত্রে অ্যামাজন প্রাইম সদস্যরা এগুলোর বাইরেও অতিরিক্ত কিছু সুবিধা পাবেন।

কেনার পর যদি অ্যামাজনের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে পণ্য না আসে কিংবা পণ্যটি যদি আপনার কাছে কখনই না আসে। তাহলে তার জন্য আপনি অ্যামাজন প্রাইমের বিনামূল্যে এক মাসের সাবস্ক্রিপশন পেতে পারেন। এ ছাড়া, অনেক সময় অ্যামাজন বিভিন্ন ডিসকাউন্ট ভাউচার, অ্যামাজন প্রাইম সদস্য ফি থেকে কম টাকা কাটাসহ বিভিন্ন ধরনের সুবিধাও দিয়ে থাকে।

ভুয়া বিক্রেতাদের এড়াবেন যেভাবে

অ্যামাজনে ভুয়া বিক্রেতাদের সমস্যাটি দিন দিন তীব্র হয়ে উঠছে। তবে আপনি চাইলে এই প্রতারণাগুলো ধরতে পারবেন। সাধারণত, একজন ভুয়া বিক্রেতা একটি নতুন অ্যামাজন সেলার অ্যাকাউন্ট খোলে এবং বিক্রির জন্য জনপ্রিয় পণ্যগুলো বাছাই করে। সাধারণত, তারা অন্যান্য খুচরা বিক্রেতাদের তুলনায় অনেক কম দামে পণ্যগুলোকে তালিকাভুক্ত করে।

অর্ডার পাওয়ার পরই তারা বলে, আইটেমটি কুরিয়ারের পথে রয়েছে। এর মাধ্যমে তারা অ্যামাজন থেকে তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা হাতিয়ে নেয়। ৪ সপ্তাহের একটি আনুমানিক ডেলিভারি তারিখ দেওয়ার মাধ্যমে তারা অ্যামাজনের ২ সপ্তাহের পেমেন্ট চক্রটিকে ব্যবহার করে। তারপর ক্রেতারা অভিযোগ করা শুরু করার আগেই এবং অ্যামাজন তাদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার আগেই তারা অদৃশ্য হয়ে যায়।

তবে ভাগ্যক্রমে, এইসব ভুয়া বিক্রেতাদের এড়ানো খুব একটা কঠিন কাজ নয়। এর জন্য প্রথমে আপনাকে দেখতে হবে, ফিডব্যাক বা রিভিউ স্কোরগুলো। এটি করতে, ডানদিকের প্যানেলের সোল্ড বাই বিভাগ থেকে বিক্রেতার নামের ওপর ক্লিক করুন।

প্রোফাইল পৃষ্ঠায় গিয়ে আপনি বিক্রেতার সব ফিডব্যাক রেটিং দেখতে পাবেন। পাশাপাশি গত ৩, ৬ এবং ১২ মাসভিত্তিক স্কোরও দেখতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে, যদি প্রচুর পরিমাণ রিভিউ থাকে, তাহলে আপনি সাধারণত তাদের বিশ্বাস করতে পারেন।

এ ছাড়া, আপনার এমন পণ্য সম্পর্কেও সতর্ক হওয়া উচিত যেগুলো অতিরিক্ত সস্তা বলে মনে হয়। ধরুন, আপনি কোনো প্রকার ছাড় ছাড়াই যদি একটি নতুন ডেস্কটপ মনিটর দেখেন, যার মূল্য মাত্র ২০ ডলার। এসব ক্ষেত্রে, একজন অবৈধ বিক্রেতার পাল্লায় পড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তবে সময়ে সময়ে আপনি অ্যামাজনে কিছু দুর্দান্ত ছাড় পেতে পারেন। 

আলিএক্সপ্রেস থেকে পণ্য না আসলে

অ্যামাজনের মতো আলিএক্সপ্রেস থেকেও যদি পণ্য আপনার হাতে না আসে, তাহলে সে ক্ষেত্রেও আপনি কিছু পদক্ষেপ নিতে পারেন।

শিপমেন্টের সময়

প্রতিটি পণ্যের জন্য শিপমেন্ট বা ডেলিভারির সর্বনিম্ন এবং সর্বোচ্চ সময় নির্দিষ্ট করা আছে। ডেলিভারি সাধারণত ২৮-৪৫ দিনের মধ্যে হয়ে থাকে। তাই এই সময়কাল শেষ না হওয়া পর্যন্ত চিন্তার কিছু নেই। যদি শিপমেন্ট আরও বেশি সময় নেয়, তাহলে বাইয়ার প্রটেকশন টাইমটি পরীক্ষা করুন। 

পারচেস প্রটেকশনের সময় বাড়ানো

প্রটেকশন টাইমারটি পরীক্ষা করুন, কারণ টাইমার সক্রিয় থাকাকালীনই শুধু গ্যারান্টি প্রযোজ্য। আপনি 'অর্ডার ডিটেইলস' পৃষ্ঠায় গিয়ে এটি দেখতে পারবেন। যদি সময় শেষ হয়ে যায়, তাহলে আপনি আলিএক্সপ্রেস প্রটেকশন হারাবেন এবং পণ্যটির কোনো সমস্যা থাকলে কিংবা আপনি এটি একেবারেই না পেলে কোনো টাকা ফেরত পাবেন না। আর যদি সময় থাকে, সে ক্ষেত্রে পারচেস প্রটেকশনের সময় আরও বাড়ানোর চেষ্টা করুন।

এ ক্ষেত্রে, বিক্রেতা হয় এটি বাড়াতে পারে অথবা আপনার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারেন। এই ক্ষেত্রে, আপনাকে একটি ডিসপিউট খুলতে হবে। প্রটেকশন মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে এটি করুন। কারণ, ডিসপিউট বিবেচনা এবং নিষ্পত্তির জন্য কমপক্ষে ১০ দিন লাগবে। 

শিপমেন্ট ট্র্যাকিং

বিক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করার আগে, আপনার পার্সেলটি কোথায় আছে তা আগে দেখে নিন। অর্ডার পাঠানো হলে, বিক্রেতা অর্ডার বিভাগে একটি ট্র্যাকিং নম্বর যোগ করে। অনলাইনে আলিএক্সপ্রেস পার্সেল ট্র্যাকিং সার্চ দিয়ে সেখানে নম্বরটি ট্র্যাকিংয়ের জন্য ব্যবহার করতে পারবেন। 

আপনার পার্সেলের অবস্থানের ওপর নির্ভর করে, আপনি যা করতে পারেন

  • যদি প্যাকেজটি তখনো চীনে থাকে তবে কাস্টমস বা গুদামে কিছু সমস্যা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে, বিক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যাটি নিয়ে আলোচনা করুন। তবে, বাই এয়ার প্রটেকশন সময় বাড়াতে ভুলবেন না।
  • পার্সেলটি আপনার দেশের কাস্টমসেও আটকে থাকতে পারে। এর বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে যেমন, প্যাকেজের অতিরিক্ত ওজন, যোগাযোগের ভুল তথ্য বা বিক্রেতা উচ্চ মূল্য উল্লেখ করলে, ইত্যাদি। এ ক্ষেত্রেও আপনার বাই এয়ার প্রটেকশনের সময় বাড়িয়ে নিন। 

এগুলো যদি না হয়ে থাকে তাহলে অন্য পদক্ষেপ নিন।

একটি ডিসপিউট খুলুন

সময় যখন প্রায় শেষ; আপনি উপরে বর্ণিত সমস্ত উপায় চেষ্টা করেছেন এবং কোনো ফলাফল পাননি। তাহলে এখন এটি ডিসপিউট খোলার সঠিক সময়। আলিএক্সপ্রেসে প্রতিটি পণ্যের সময়মত ডেলিভারির গ্যারান্টি রয়েছে। তাই আপনার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে যান এবং অর্ডার বিভাগে 'ওপেন ডিসপিউট' অপশনে ক্লিক করুন।

আলিএক্সপ্রেসে বিভিন্ন ধরনের সমাধান দিয়ে থাকে। 'সম্পূর্ণ টাকা ফেরত' বা 'পণ্য ফেরত' এবং 'টাকা ফেরত', ইত্যাদি। যদি পণ্যটি আপনার কাছে একেবারে না আসে, তাহলে প্রথম বিকল্পটি বেছে নিন। তারপর আপনাকে একটি ডিসপিউটের ফর্ম দেওয়া হবে। সেটি পূরণ করুন। 

বিক্রেতা যদি ডিসপিউট স্বীকার করে, তাহলে আপনি টাকা ফেরত পাবেন। এমনকি যদি বিক্রেতা উত্তর না দেয় এবং সময় শেষ হয়ে যায়, তাহলেও টাকা ফেরত পাবেন। আর বিক্রেতা যদি আপনার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে অর্থাৎ অশালীন বা অনুপযুক্ত উত্তর দেয়, তাহলে করেসপন্ডিং বাটন ব্যবহার করে ডিসপিউট আরও বাড়িয়ে দিন। এতে করে আলিএক্সপ্রেসের ম্যানেজমেন্টও বিষয়টির সঙ্গেও জড়িত হয়ে যাবে।

বিক্রেতা যদি ক্ষতিপূরণের জন্য আপনার মনের মতো কোনো প্রস্তাব দেয়, আপনি সেটি গ্রহণ করতে পারবেন। তবে মনে রাখবেন এ ক্ষেত্রে ডিসপিউটটি নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে। তাই সতর্ক থাকুন; কারণ প্রস্তাবটি যদি একটি কূটকৌশলে পরিণত হয়, তাহলে আপনি অর্থ, পণ্য এবং আলিএক্সপ্রেসের প্রতিনিধিদের সহায়তায় সমস্যাটি সমাধানের সুযোগ হারাবেন।

ইবে থেকে পণ্য না আসলে

যদি আপনার অর্ডারের আনুমানিক ডেলিভারি তারিখ পেরিয়ে যায় এবং আপনার পণ্য না আসে, তাহলে ইবে-তে আপনি বিক্রেতাকে জানাতে পারেন যে আপনি পণ্যটি পাননি।

এর আগে, প্রথমে ডেলিভারির তথ্য চেক করুন। যদি প্রত্যাশিত ডেলিভারির তারিখ পেরিয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে বিক্রেতাকে জানানোর পরেও যদি পণ্যটি না আসে কিংবা বিক্রেতা যদি কোনো সাড়া না দেয় বা সমস্যার সমাধান করতে না পারে, তাহলে আপনি ইবে মানি ব্যাক গ্যারান্টির সুবিধাটি পাবেন।

আপনার পণ্যের ডেলিভারির তথ্য পরীক্ষা করুন

আপনার আইটেম এখনো ট্রানজিটে থাকতে পারে। প্রত্যাশিত ডেলিভারির তারিখ, এটি যে ঠিকানায় পাঠানো হচ্ছে এবং সর্বশেষ ট্র্যাকিং আপডেটগুলি দেখতে আপনার প্রোফাইলের পারচেস অপশনে পণ্যটি বের করুন।

আপনার পণ্যটি আসেনি রিপোর্ট করুন

কোনো পণ্য না আসলে, আনুমানিক ডেলিভারির তারিখ পেরিয়ে যাওয়ার পরে আপনার কাছে ৩০ দিন থাকে সেটি রিপোর্ট করার।

ডেলিভারি আপডেট প্রদান করার জন্যে বিক্রেতা ৩ দিন সময় পাবে। এই ৩ কর্মদিবসের মধ্যে তারা পণ্য প্রতিস্থাপন কিংবা টাকা ফেরত দেওয়ার প্রস্তাব দিবে। সাধারণত ৩-৫ কর্মদিবসের মধ্যে টাকা ফেরত পাওয়া যায়।

বিক্রেতা সাড়া না দিলে

যদি বিক্রেতা সাড়া না দেয়, বা ৩ কার্যদিবসের মধ্যে কোনো প্রস্তাব প্রদান না করে, তাহলে আপনি ইবেকে এই ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে এবং সাহায্য করতে বলতে পারেন।

আপনার পণ্য আপনার কাছে না আসলে সেটির ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকার আপনার রয়েছে। তাই ভুয়া বিক্রেতাদের সম্পর্কে সতর্ক থাকুন এবং ডেলিভারি না আসলে উপরের প্রক্রিয়াগুলো অনুসরণ করুন। এ ছাড়া পণ্যে ত্রুটি থাকলেও আপনি আপনার টাকা ফেরত কিংবা নতুন পণ্য পেতে পারেন। 

তথ্যসূত্র: এমইউও, ইবে, মেগাবোনাস

Comments