চট্টগ্রামের ৪০ শতাংশ মাধ্যমিক শিক্ষার্থী নতুন বই পেয়েছে

চট্টগ্রাম, নতুন বই,
নতুন বই হাতে শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস। ছবি: রাজীব রায়হান/স্টার

বছর শুরুর পর দেড় মাস পেরিয়ে গেছে। অথচ চট্টগ্রামের প্রায় ৬০ শতাংশ মাধ্যমিক ও দাখিল শিক্ষার্থী এখনো নতুন বই পায়নি। চট্টগ্রাম জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে গ্রামীণ এলাকার শিক্ষার্থীরা।

পশ্চিম কধুরখীল উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান জিসান বলেন, 'আমি এখনো বই পাইনি, অথচ ক্লাস চলছে। বই না থাকায় আমি পড়ালেখায় পিছিয়ে পড়ছি।'

একই অবস্থা চট্টগ্রামের হাজারো মাধ্যমিক শিক্ষার্থীর।

শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলা ও ছয়টি মহানগর অঞ্চলের জন্য এক কোটি ৭৩ লাখের বেশি বইয়ের চাহিদা থাকলেও এখন পর্যন্ত জেলা শিক্ষা অফিসে মাত্র ৬৯ লাখ ৪০ হাজার (প্রায় ৪০ শতাংশ) বই পৌঁছেছে।

ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মোট ১২,৬৯,৩৭,৬১৬টি বই বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৫৩,৩৩,৫৬৬টি, দাখিল মাদ্রাসায় ৯,৪৯,৩২৬টি, ইবতেদায়ি মাদ্রাসায় ৩,৮৬,৮৯৪টি, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৯৩,৫০০টি এবং ইংরেজি ভার্সন স্কুলে ১,৭৪,৩৩০টি বই দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো এক কোটি চার লাখ বইয়ের ঘাটতি রয়েছে।

তথ্য অনুযায়ী, ফটিকছড়ি, বাঁশখালী, চন্দনাইশ, পটিয়া, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, বোয়ালখালী, রাঙ্গুনিয়া ও মিরসরাই উপজেলায় মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং দাখিল মাদ্রাসার কয়েকটি শ্রেণির জন্য এখনো কোনো বই সরবরাহ করা হয়নি।

এর মধ্যে বোয়ালখালী উপজেলায় সবচেয়ে কম বই এসেছে। চার লাখ ৮০ হাজার বইয়ের চাহিদার বিপরীতে মাত্র ১৮ হাজার বই সরবরাহ করা হয়েছে। এই উপজেলায় ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলোতেও কোনো বই বিতরণ করা হয়নি।

আনোয়ারা উপজেলায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর সব শিক্ষার্থী বই পেলেও দাখিল শিক্ষার্থীরা এখনো বই পায়নি। হাটহাজারী উপজেলায় ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এখনো বই পায়নি।

চট্টগ্রাম মহানগরের ছয়টি শিক্ষা অঞ্চলে অষ্টম শ্রেণির দাখিল শিক্ষার্থীদের জন্য মাত্র নয় হাজার বই বিতরণ করা হয়েছে, তবে আরও চারটি শ্রেণির বই এখনো দেওয়া হয়নি। নগরীর পাঁচলাইশ, পাহাড়তলী ও বায়েজিদসহ বিভিন্ন এলাকায় মাধ্যমিক স্তরের কিছু শ্রেণির বই এখনো আসেনি। এছাড়া কর্ণফুলী অঞ্চলের কোনো দাখিল মাদ্রাসা বই পায়নি।

ইংরেজি ভার্সনের স্কুলগুলোর ষষ্ঠ শ্রেণির বই এখনো ছাপাই শুরু হয়নি, আর অষ্টম শ্রেণির জন্য মাত্র ১৯ হাজার বই বিতরণ করা হয়েছে বলে জানান শিক্ষা কর্মকর্তারা।

যেসব স্কুলে সব শ্রেণির বই সরবরাহ করা হয়েছে, সেখানেও প্রতি শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ তিন থেকে চারটি বই পেয়েছে। এছাড়া, মাধ্যমিক ও দাখিল মাদ্রাসাগুলোতে ষষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণির বইয়ের সংকট রয়েছে।

বোয়ালখালীর কধুরখীল সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ বড়ুয়া জানান, অষ্টম শ্রেণির জন্য এখনো কোনো বই আসেনি। ফলে, শিক্ষকরা মোবাইল ডিভাইসে বই ডাউনলোড করে ক্লাস নিচ্ছেন, আর শিক্ষার্থীরা সিলেবাসে পিছিয়ে পড়ছে।

শিক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, 'সব বই বিতরণ শেষ হতে মার্চ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।'

চট্টগ্রাম জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম খিসা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এখন পর্যন্ত আমরা প্রয়োজনীয় বইয়ের মাত্র ৪০ শতাংশ পেয়েছি। প্রতিটি উপজেলার চাহিদা অনুযায়ী বই পৌঁছাতে আরও এক মাসের বেশি সময় লাগতে পারে।'

Comments

The Daily Star  | English

Threat of fresh Rohingya influx looms as clashes erupt in Myanmar

Gunfire and explosions were heard late Friday night from villages across the border in Myanmar opposite Whykong union in Teknaf upazila of Cox’s Bazar. Residents, gripped by panic, reported that this was the most intense gunfire they had heard in months.

3h ago