‘আমাদের সময়ের সবচেয়ে ক্ষমতাবান অভিনেতা হুমায়ুন ফরিদী’

রাইসুল ইসলাম আসাদ এবং হুমায়ুন ফরিদী। ছবি: সংগৃহীত

আজ ২৯ মে খ্যাতিমান অভিনেতা হুমায়ুন ফরিদীর জন্মদিন। ঢাকা থিয়েটারে দীর্ঘদিন তার সঙ্গে ছিলেন আরেক খ্যাতিমান অভিনেতা রাইসুল ইসলাম আসাদ। মঞ্চ, টেলিভিশন নাটক ও চলচ্চিত্রে একসঙ্গে অভিনয় করেছেন ২ জন। তাদের আছে অসংখ্য সুখস্মৃতি।

জন্মদিনে দ্য ডেইলি স্টারের কাছে হুমায়ুন ফরিদীর স্মৃতিচারণ করেছেন রাইসুল ইসলাম আসাদ।

'ঢাকা থিয়েটারের শকুন্তলা নাটক থেকে হুমায়ুন ফরিদীর সঙ্গে আমার সম্পর্ক। দীর্ঘ সময় আমার একসঙ্গে কাটিয়েছি। ৭০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে আমাদের পথচলা শুরু হয়েছিল এবং তা অব্যাহত ছিল ফরিদীর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। বন্ধুত্বে কখনো ভাঙন ধরেনি। খুব ভালো বন্ধুত্ব ছিল আমাদের। এমন বন্ধু পাওয়া সত্যিকার অর্থেই আমার শিল্পের পথচলার জন্য আশীর্বাদ ছিল।

ফরিদীর ছিলেন অসম্ভব বড় মাপের অভিনেতা। আমাদের সময়ের সবচেয়ে ক্ষমতাবান অভিনেতার নাম ফরিদী। কিন্ত আফসোস, তার মতো এত শক্তিশালী অভিনেতার সঠিক মূল্যায়ন হয়নি। একটা সময় সব মাধ্যম ছেড়ে শুধু চলচ্চিত্রে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। কিন্ত তার যে অভিনয়ের ক্ষমতা, তা সঠিকভাবে তুলে ধরা যায়নি এখানে। তার কাছে প্রত্যাশা ছিল আকাশসমান।

একসঙ্গে হুমায়ুন ফরিদী ও রাইসুল ইসলাম আসাদ। সঙ্গে আছেন আফজাল হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

সুখে-দু:খে, আনন্দ-বেদনায় আমরা একসঙ্গে ছিলাম। সুন্দর এ সম্পর্কে কখনোই মান-অভিমান হয়নি। তারপর তো হুট করেই চলে গেলেন। আমরা তাকে ধরে রাখতে পারলাম না। কাউকে ধরে রাখার সুযোগও দিলেন না। এজন্য খারাপ লাগে। তার না থাকাটা খুব অনুভব করি।

ফরিদীর ছিলেন খুব আড্ডাপ্রিয়। বলতে গেলে আমাদের আড্ডা হতো বছরের ৩৬৫ দিন। শুধুমাত্র ঈদের দিনগুলি বাদ যেত। এ ছাড়া, বছরের ৩৬৫ দিন আমরা রিহার্সেল করতাম। রিহার্সেল করার জন্য দুপুরের পরপরই চলে আসতাম। তারপর রিহার্সেল শেষ করে শুরু হতো আমাদের আড্ডা।

কত বিকেল, দুপুর, সন্ধ্যা, রাত একসঙ্গে কাটিয়েছি আমরা। বছরের পর বছর এইভাবে চলেছে। কখনো ক্লান্তি কাজ করেনি। আড্ডার শক্তি ছিল প্রবল। কখনো কখনো আড্ডা দিতে দিতে রাত পার হয়ে যেত, তারপরও মনে হতো আড্ডা বুঝি শেষ হয়নি। আরো কথা বুঝি বাকি আছে!

সত্যি কথা বলতে ফরিদীর সঙ্গে কাটানো স্মৃতিগুলো বলে শেষ করা যাবে না। যতদিন বাঁচব, স্মৃতিগুলো মনে পড়বে। ফরিদীর ভেতরটা ছিল পরিষ্কার। শিশুর মতো সরল ছিলেন। জন্মদিনে খুব মনে পড়ে বন্ধু।'  

Comments

The Daily Star  | English
remittance earning of Bangladesh

Remittance rises 30% in July

Migrants sent home $2.47 billion in the first month of the current fiscal year

5h ago