‘অর্থনীতি বাঁচাতে’ পাকিস্তানিদের কম চা পানের অনুরোধ

পাকিস্তানের অর্থনীতি বাঁচাতে জনগণকে কম চা পান করার অনুরোধ করেছেন দেশটির এক জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী।
গত বছর পাকিস্তান বিশ্বের শীর্ষ চা আমদানিকারক দেশ হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করেছে
গত বছর পাকিস্তান বিশ্বের শীর্ষ চা আমদানিকারক দেশ হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের অর্থনীতি বাঁচাতে জনগণকে কম চা পান করার অনুরোধ করেছেন দেশটির এক জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী।

আজ বুধবার দেশটির কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন মন্ত্রী আহসান ইকবাল বলেন, চা পানের পরিমাণ কমানো হলে পাকিস্তানের উচ্চ আমদানি বিল কমে আসবে। 

আজ বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে তহবিল সংকটে ভুগছে পাকিস্তান। দেশটিতে এ মুহূর্তে ২ মাসের আমদানি বিল মেটানোর মতো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও নেই।

গত বছর ৬০০ মিলিয়ন ডলার (৫০১ মিলিয়ন ইউরো) মূল্যমানের চা আমদানি করে পাকিস্তান বিশ্বের শীর্ষ চা আমদানিকারক দেশ হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, 'আমি দেশবাসীকে দৈনিক চা পানের পরিমাণ ১ বা ২ কাপ কমাতে অনুরোধ করছি। কারণ আমরা ধার করে চা আমদানি করছি।'

তিনি আরও সুপারিশ করেন, বিদ্যুৎ সাশ্রয় করার জন্য ব্যবসায়ীদের উচিৎ সব দোকান রাত সাড়ে ৮টার মধ্যে বন্ধ করে দেওয়া।

এমন এক সময় পাকিস্তানের জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী এই অনুরোধ করলেন, যখন পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে। ফলে সরকারের ওপর চাপ এসেছে উচ্চ পর্যায়ের আমদানি খরচ কমিয়ে দেশের তহবিল দেশে রাখার।

পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন মন্ত্রী আহসান ইকবাল
পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন মন্ত্রী আহসান ইকবাল। ফাইল ছবি: ট্রিবিউন

কম চা পান করার অনুরোধটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ইতোমধ্যে চা পান কমিয়ে দেশের গুরুতর আর্থিক সংকট সমাধানের বিষয়টির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে কমে জুনের প্রথম সপ্তাহে এটি ১০ বিলিয়ন ডলারের নিচে চলে গেছে। এ পরিমাণ রিজার্ভ দিয়ে ২ মাসের আমদানি খরচও মেটানো সম্ভব নয়।

তহবিলের সুরক্ষা দিতে গত মাসে করাচির কর্মকর্তারা বেশ কিছু বিলাসবহুল ও নিত্যপণ্য নয় এরকম দ্রব্যের আমদানি নিষিদ্ধ করেছে।

গত এপ্রিলে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে পরাজিত করে দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রী হন শাহবাজ শরীফ।

শপথ গ্রহণের অল্পদিন পরে শাহবাজ শরীফ অভিযোগ করেন, বিদায়ী সরকার দেশের অর্থনীতির চরম অব্যবস্থাপনা করেছে এবং অর্থনীতিকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনা বেশ ঝামেলার হবে।

গত সপ্তাহে শাহবাজ শরীফের মন্ত্রিসভা থেকে ৪৭ বিলিয়ন ডলারের একটি নতুন বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে, যার উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৬ বিলিয়ন ডলারের বেলআউট উদ্যোগকে পুনরুজ্জীবিত করা।

 

Comments