‘মন্ত্রণালয়গুলো নির্বাচন কমিশনের আওতায় এলে সংকট সৃষ্টি হতে পারে’

সিইসি
সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। ফাইল ছবি

নির্বাচনকালে জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষাসহ অন্যান্য মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের আওতায় আনলে আরেকটা সংকট সৃষ্টি হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

আজ সোমবার ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে সংলাপ শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।

নির্বাচনের সময় জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষাসহ অন্যান্য মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের আওতায় আনতে ওয়ার্কার্স পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রস্তাব বিষয়ে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, 'ইসিকে শক্তিশালী করতে অনেকগুলো বিষয় কমিশনের ওপর ন্যস্ত করার কথা তারা বলেছেন। সাংবিধানিকভাবে এটা গর্ভমেন্ট ন্যস্ত করলেই আমি নিতে পারব কি না, তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। কারণ, কেবিনেট ইন রিলেটেড বাই দ্য কনস্টিটিউশন। সংবিধান ও আইনকানুন সংশোধন করে যদি আমাদের ওপর ন্যস্ত করা হয়, তাহলে নেওয়া যাবে। আদারওয়াইজ লিগ্যালি দিতে চাইলে যে আমরা নিতে পারব বা নেব, এ বিষয়ে আশ্বাস দিতে পারি না।'

'কারণ, কেবিনেট কীভাবে ফর্ম হবে, কাদের নিয়ে হবে, তা সংবিধানে উল্লেখ রয়েছে। কাজেই নির্বাচন কমিশন ইজ নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন ইজ নট অ্যা মিনিস্ট্রি। এটা আপনারা জানেন। আমি কিন্তু নির্বাচন কমিশনের হোম মিনিস্টার, ডিফেন্স মিনিস্টার বা ওই ধরনের কোনো মিনিস্টার হয়ে যাব, সেটা আরেকটা সংকট সৃষ্টি করতে পারে', বলেন তিনি।

সিআসি আরও বলেন, 'দেশের বাইরে থেকে কোনো দলের সমর্থন, দেশের বাইরে থেকে কোনো হুমকি ধামকি আসে কি না, বিষয়টি পলিটিক্যালি আপনার ফেস করবেন। কমিশনের এক্ষেত্রে করার কিছু নেই; সেটা হওয়ারও কথা নয়। অন্য কোনো দেশ আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলকে সমর্থন  বা ধমক দেবে, এটা আমার কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় না। এটা হলেও মাঠে পলিটিক্যাল দলকে ফেস করতে হবে।'

সংলাপে বেশকিছু দাবি তুলে ধরেছে ওয়ার্কার্স পাটি। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে—নির্বাচনকালে স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে নির্বাচন সম্পর্কিত কাজের জন্য নির্বাচন কমিশনের অধীন ন্যস্ত করতে হবে। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের আগের ও পরের ৩ মাস নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বদলি, পদোন্নতি, কর্তব্যে অবহেলার জন্য শাস্তি প্রদানের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ হিসেবে কাজ করবে। এর জন্য সংবিধানের সংশোধনের কোনো প্রয়োজন পড়বে না।

ওয়ার্কার্স পার্টি মনে করে নির্বাচনী ব্যয়সীমা যুক্তিসঙ্গতভাবে কমিয়ে আনতে পোস্টার, লিফলেট, ডিজিটাল প্রচার, রেডিও-টেলিভিশনে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার দৃঢ়ভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য আরপিও ও নির্বাচনী আচরণবিধিতে সুস্পষ্ট বিধান রাখতে হবে। এর প্রতিটি বিষয় পর্যবেক্ষণ ও নির্বাচন কমিশনকে রিপোর্ট প্রকাশের জন্য কর্মকর্তা নির্দিষ্ট করে তাদের দায়িত্ব দিতে হবে এবং নির্বাচন চলাকালীনই তাদের পর্যবেক্ষণ ও রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রার্থী বা তার প্রধান এজেন্টকে শুনানি করে নির্বাচন বাতিলসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

এ ছাড়াও, প্রার্থীর নির্বাচনী আয়-ব্যয়ের বিবরণ সর্বসাধারণকে জ্ঞাত করার জন্য উন্মুক্ত দলিল হিসাবে রাখতে হবে এবং গণমাধ্যমসহ যে কেউ তা সংগ্রহ করতে পারবে; নির্বাচনী আয়-ব্যয়ের হিসাবে নির্বাচনী আইন অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জমা দিতে হবে এবং ওই হিসাব না দেওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সদস্যের শপথ গ্রহণ স্থগিত থাকবে এবং নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের ব্যয় মেটাতে নির্বাচনী এলাকা ভোটার সংখ্যা অনুসারে পোস্টার, লিফলেট, ব্যানার, মার্কা সম্বলিত হ্যান্ডবিল, ৩ কপি ভোটার তালিকা (সিডিসহ) সরবরাহ করবে।

Comments

The Daily Star  | English

Made with US cotton? Pay less at US customs

US customs will apply a tariff rate only to the non-American portion of a product's value

9h ago