‘রাজনৈতিক বিবেচনা’য় পাওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে এসি
পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলায় জাতীয় পার্টির (জেপি-মঞ্জু) অঙ্গ সংগঠন ছাত্রসমাজ-র বালিপাড়া ইউনিয়ন কমিটির আহবায়ক ইকবাল সেপাই স্থানীয় সংসদ সদস্যের কোঠায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে একটি ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন।
তার বাবা স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা পেশায় রাজমিস্ত্রি আলম সেপাই আরও একটি ঘর পেয়েছেন।
তবে বর্তমানে ইকবালের ঘরটি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এক মাস আগে নিজের ঘরের একটি কক্ষে এসি বসিয়েছেন ইকবাল।
এ ছাড়া, সরকারের কাছ থেকে পাওয়া ঘরটির সামনের বারান্দা ভেঙে তা নতুন করে সম্প্রসারণেরও কাজ করছেন ইকবাল। তার ঘরের চালার ওপর স্থাপন করা হয়েছে সৌর প্যানেল ও স্যাটেলাইট চ্যানেল নেটওয়ার্ক আকাশ। ফ্রিজ ও সৌখিন আসবাবপত্র দিয়ে ঘরটি গোছানো।
এমনকি, ইকবালের বাবাও সরকারিভাবে পাওয়া ঘরটি সম্প্রসারণ করে প্রায় দ্বিগুণ আয়তনের করেছেন।
ইকবালের দাবি, এক আত্মীয়ের দান করা জমিতে তিনি সরকারের কাছ থেকে বরাদ্দ পাওয়া ঘরটি তুলেছেন। যখন তাকে ঘরটি দেওয়া হয়েছিল তখন তার আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তবে বর্তমানে বালুর ব্যবসা করে তার সচ্ছলতা ফিরেছে।
তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তার ঘরটি মাঠের মধ্যে ফাঁকা স্থানে হওয়ায় দিনের বেলা প্রচণ্ড গরমে সেখানে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। প্রতিদিনই তার স্ত্রী ও শিশু কন্যাকে নিয়ে অন্যের বাড়িতে থাকতে হতো। কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে ঋণ করে এসি বসিয়েছেন। ঘরে পর্যাপ্ত স্থান না থাকায় তিনি সামনের বারান্দা সম্প্রসারণ করছেন।
ইকবালের প্রতিবেশীরা ডেইলি স্টারকে জানান, ইকবাল তার শিশু কন্যাকে গরম থেকে রক্ষায় ঘরে এসি বসিয়েছেন। আগে তার অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ থাকলেও, এখন সচ্ছলতা এসেছে।
ইকবালের বাবা আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার ছেলে খুবই পরিশ্রম করে আর্থিক সচ্ছলতা পেয়েছে। বিলাসিতার জন্য সে ঘরে এসি বসায়নি। শুধুমাত্র শিশু কন্যাটিকে গরম থেকে বাঁচাতে ঘরে এসি বসিয়েছে।'
এ বিষয়ে ইন্দুরকানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুৎফুন্নেসা খানম ডেইলি স্টারকে বলেন, '২০২০ সালের শেষের দিকে ইকবালকে স্থানীয় সংসদ সদস্যের কোঠায় ঘরটি তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। ঘর পাওয়ার জন্য যে অর্থনৈতিক অবস্থা থাকা দরকার ইকবাল তখন ওই অবস্থায়ই ছিলেন। বর্তমানে তিনি আর্থিকভাবে সচ্ছল।'
'ইকবালকে ঘর দেওয়ায় অনিয়ম হলে তা তদন্ত করে দেখা হবে,' যোগ করেন তিনি।
Comments