এক্সিম-পদ্মা ব্যাংক একীভূত হতে অন্তত ১৮ মাস লাগতে পারে

গতকাল সোমবার ব্যাংক দুটি একীভূত হতে সমঝোতা চুক্তিতে সই করেছে, এটি একীভূতকরণের প্রথম ধাপ।
পদ্মা ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ব্যাংক একীভূতকরণ,

শরিয়াহভিত্তিক এক্সিম ব্যাংক ও ধুঁকতে থাকা পদ্মা ব্যাংকের একীভূতকরণ বাস্তবায়নে ১৮ মাস থেকে আড়াই বছর সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

গতকাল সোমবার ব্যাংক দুটি একীভূতকরণের সমঝোতা চুক্তিতে সই করে। এটি একীভূতকরণের প্রথম ধাপ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখন ব্যাংকগুলোকে নথিপত্রের সঙ্গে একীভূতকরণ স্কিমের কপিসহ বাংলাদেশ ব্যাংকে আনুষ্ঠানিক আবেদন করতে হবে।

নথিগুলোর মধ্যে দুই ব্যাংকের সম্পত্তির দাম, সম্পদ ও দায়-দেনার হিসাবও দিতে হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক খসড়া প্রকল্পে সন্তুষ্ট হলে একীভূতকরণ ও অধিগ্রহণ সংক্রান্ত নীতিমালা অনুযায়ী একীভূতকরণের অনুমোদন দেবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি নীতিমালা তৈরি করছে।

২০০৭ সাল থেকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর একীভূতকরণের নীতিমালা থাকলেও তা বর্তমান সময়ের জন্য হালনাগাদ করা প্রয়োজন। শিগগিরই হালনাগাদ নীতিমালা প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক সাংবাদিকদের বলেন, 'খসড়া স্কিম পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সম্পদ ও দায় মূল্যায়নের জন্য ব্যাংকগুলোয় নিরীক্ষক নিয়োগ দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।'

ব্যাংকগুলোর একীভূতকরণের ক্ষেত্রে আইনি অনুমোদনের প্রয়োজন। সেগুলো পাওয়া গেলে বাংলাদেশ ব্যাংক চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে।

এক্সিম ব্যাংক পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের অনুমোদনেরও প্রয়োজন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদ্যমান নীতিমালায় বলা হয়েছে—সম্পদ মূল্যায়নে উভয় ব্যাংককে একমত হতে হবে। যদি তারা চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারে, তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক মধ্যস্থতাকারী হয়ে মতপার্থক্য দূর করতে সহায়তা করবে।

সম্পদ ও দায়-দেনার মূল্যায়নে একমত না হলে একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত বাতিল হতে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

একীভূত করার বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন পেলে দুটি ব্যাংককে কোম্পানি আইন-১৯৯৪ এর আওতায় অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা মেনে চলতে হবে।

তাদেরকে হাইকোর্টে আবেদন করতে হবে ও একীভূতকরণের প্রকল্প জমা দিতে হবে।

হাইকোর্টে অনুমোদনের পর দুই ব্যাংকের একীভূতকরণের বিষয়টি চূড়ান্তভাবে কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

একীভূত হওয়ার পর তখন পদ্মা ব্যাংকের সম্পদ ও দায় এক্সিম ব্যাংকের সম্পদ ও দায় হিসেবে বিবেচিত হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সমঝোতা চুক্তি সই অনুষ্ঠান শেষে এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, 'পদ্মা ব্যাংক একীভূতকরণের পর আমানতকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না এবং ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও চাকরি হারাবেন না।'

'একীভূতকরণের পর দুর্বল ব্যাংকের পরিচালকরা তাদের পদে থাকবেন না' উল্লেখ করে বেসরকারি ব্যাংক মালিকদের ফোরাম বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের চেয়ারম্যান মজুমদার বলেন, 'তারা শেয়ারহোল্ডার হিসেবে থাকবেন।'

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের উপস্থিতিতে এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেন ও পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারেক রিয়াজ খান একীভূতকরণের সমঝোতা চুক্তিতে সই করেন।

Comments