বিশ্বের ব্যস্ততম বন্দরের তালিকায় ৩ ধাপ পেছাল চট্টগ্রাম

কনটেইনার পরিবহনে বিশ্বের শীর্ষ বন্দরের তালিকায় আগের বছরের তুলনায় ৩ ধাপ পিছিয়েছে চটগ্রাম বন্দর।
চট্টগ্রাম বন্দর। স্টার ফাইল ফটো

কনটেইনার পরিবহনে বিশ্বের শীর্ষ বন্দরের তালিকায় আগের বছরের তুলনায় ৩ ধাপ পিছিয়েছে চটগ্রাম বন্দর।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম লয়েডস লিস্টের ২০২৩ সংস্করণে শীর্ষ ১০০ বন্দরের তালিকায় চট্টগ্রাম বন্দর ৬৭তম অবস্থানে নেমে এসেছে।

২০২২ সালে বিশ্বের বিভিন্ন বন্দরের বার্ষিক কনটেইনার পরিবহনের সংখ্যা হিসাব করে লন্ডনভিত্তিক বন্দর ও শিপিং সংক্রান্ত বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো সংবাদমাধ্যম লয়েডস লিস্ট সম্প্রতি 'লয়েডস লিস্ট ১০০ বন্দর ২০২৩' তালিকা প্রকাশ করেছে।

বন্দর ব্যবহারকারীদের মতে, এই তালিকার মাধ্যমে অবশ্য বন্দরের কাজের দক্ষতা প্রকাশ পায় না। বিশ্বের ব্যস্ততম বন্দরগুলোতে সারা বছর কী পরিমাণ কনটেইনার পরিবহন হলো তার হিসাবে তালিকাটি তৈরি করা হয়।

টানা ৭ বছর ধাপে ধাপে আগানোর পর ২০২১ সালের লয়েডস লিস্ট জার্নালের তালিকায় সর্বপ্রথম হোঁচট খায় দেশের প্রধান এই সমুদ্র বন্দর। করোনা মহামারির প্রভাবে বৈদেশিক বাণিজ্যে অগ্রগতি ও বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হলে ৯ ধাপ পিছিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর ৬৭তম অবস্থানে চলে যায়।

পরের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে কনটেইনার পরিবহনে গতি ফিরে এলে লয়েডস লিস্ট জার্নালের ২০২২ সংস্করণে ৩ ধাপ এগিয়ে ৬৪তম অবস্থানে উঠে আসে।

কিন্তু, সর্বশেষ তালিকায় আবারও ছন্দপতন হলো।

লয়েডস লিস্টের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে চট্টগ্রাম বন্দর মোট ৩১ লাখ ৪২ হাজার ৫০৪ টিইইউ কনটেইনার পরিচালনা করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ২ শতাংশ কম। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে চট্টগ্রাম বন্দর মোট ৩২ লাখ ১৪ হাজার ৫৪৮ টিইইউ কনটেইনার পরিচালনা করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ২ শতাংশ বেশি ছিল।

২০২০ সালের তালিকায় চট্টগ্রাম বন্দর ছিল ৫৮তম, ২০১৯ সালে ৬৪তম, ২০১৮ সালে ৭০তম, ২০১৭ সালে ৭১তম, ২০১৬ সালে ৭৬তম, ২০১৫ সালে ৮৭তম এবং ২০১৪ সালে ৮৬তম অবস্থানে ছিল।

এ বছর চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থানের কথা উল্লেখ করে লয়েডের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, 'বাংলাদেশের প্রধান বন্দরের ধারণ ক্ষমতার সীমাবদ্ধতার কারণে অগ্রগতি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।'

বন্দরের কর্মকর্তারা অবশ্য বলছেন, গত বছরের শুরুতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব এবং বছরের মাঝামাঝি থেকে আমদানিতে মন্দার কারণে বৈদেশিক বাণিজ্যে নিম্নমুখী প্রবণতা ছিল।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুকের মতে, রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট এবং পরে ডলার সংকটে বিলাসবহুল পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়েছে কনটেইনার পরিবহনে। তবে, গত বছর বন্দরে সামগ্রিকভাবে পণ্য ও জাহাজ পরিচালনা বেড়েছে।

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে মন্থর করে দিয়েছে, বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। কারণ রপ্তানি আদেশ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ডলার সংকটের কারণেও আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, যা শিপিং বাণিজ্যে প্রভাব ফেলেছে। ফলে, বন্দর দিয়ে কনটেইনার পরিবহণ কমতে পারে।

দেশের মোট কনটেইনার বাণিজ্যের ৯৮ শতাংশ পরিচালনা করে চট্টগ্রাম বন্দর, বাকিটা মংলা বন্দর পরিচালনা করে।

Comments