আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তি নিয়ে আশাবাদী সরকার

আইএমএফ
আইএমএফ। ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের তৃতীয় কিস্তি বাংলাদেশ পেতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

গত বুধবার সচিবালয়ে আইএমএফের আবাসিক প্রতিনিধি জয়ন্দু দের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এই আশা ব্যক্ত করেন।

ঋণ কর্মসূচির তৃতীয় কিস্তির অগ্রগতি মূল্যায়ন করতে ওয়াশিংটনভিত্তিক ঋণদাতা সংস্থাটির একটি দল বাংলাদেশ সফরের কয়েক সপ্তাহ আগে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো।

এক বছর আগে আইএমএফ বোর্ড আর্থিক সংকটে থাকা বাংলাদেশকে সহায়তার জন্য এই ঋণ অনুমোদন করে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৪ কোটি ৭৮ লাখ ডলার ও ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার দেয় সংস্থাটি।

বৈদেশিক মুদ্রার ন্যূনতম রিজার্ভ (এনআইআর) ও কর-রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও আইএমএফ ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি অনুমোদন দেয়।

আগামী মে মাসে আইএমএফ ঋণের তৃতীয় কিস্তি দিতে পারে।

আগামী মাসে সফরকালে আইএমএফ দল ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার ভিত্তিতে সরকারের পারফরম্যান্স পর্যালোচনা করবে।

অর্থমন্ত্রীর মতে, বিশ্বব্যাংক যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে তার বেশিরভাগই পূরণ হয়েছে।

তবে আগের মতো সরকার ন্যূনতম রিজার্ভ রাখতে পারেনি।

শর্ত অনুসারে, ২০২৩ সালের শেষে রিজার্ভ কমপক্ষে ১৭ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার হওয়া দরকার ছিল। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে তা পাঁচ কোটি ৮০ লাখ ডলার কম।

তবে এবার কর-রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।

তিনি জানান, অন্যান্য সংস্কার উদ্যোগের শর্তগুলো পূরণ হয়েছে।

গত ডিসেম্বর অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও এনবিআর বহির্ভূত করসহ রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল এক লাখ ৪৩ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা।

তৃতীয় কিস্তির আরেক শর্ত হলো—ডিসেম্বরে বাজেট ঘাটতি যেন ৯০ হাজার ৫২০ কোটি টাকার বেশি না হয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঘাটতি ছিল ১২ হাজার ৪০২ কোটি টাকা।

এই ঘাটতি আইএমএফের নির্ধারিত সীমার মধ্যেই থাকবে বলেও আশা করা হচ্ছে।

আইএমএফ'র চারটি পরিমাণগত শর্ত সরকার পূরণ করেছে। এগুলো হলো—বৈদেশিক বকেয়া, রিজার্ভ, সামাজিক খরচের অগ্রাধিকার ও মূলধন বিনিয়োগ।

আইএমএফ কিছু কাঠামোগত শর্তও যুক্ত করেছে।

কাঠামোগত শর্তগুলোর একটি হলো সরকার ডিসেম্বর থেকে ত্রৈমাসিক জিডিপি তথ্য প্রকাশ করবে। তবে তা প্রকাশ করতে পারেনি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

'আপাতত ক্রলিং পেগ সিস্টেম চালু থাকবে' উল্লেখ করে গত বুধবার অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, সরকার মুদ্রার বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালু করবে না।

গত জানুয়ারিতে টাকার দামের আকস্মিক ওঠানামা নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তীকালীন 'ক্রলিং পেগ' পদ্ধতি চালুর পরিকল্পনার কথা জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ মুদ্রানীতিতে বলা হয়েছে, বিনিময় হার নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারে হস্তক্ষেপ করবে।

গত বছরের জুনে বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মুদ্রাবাজার অবাধে চলতে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। ঋণ কর্মসূচি চলমান রাখতে এটি আইএমএফর প্রধান দাবিগুলোর একটি ছিল।

গত বুধবার বাংলাদেশে কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলস অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে সম্পর্ক চমৎকার।

বৈঠকে তারা বাংলাদেশে কানাডার বিনিয়োগ বিশেষ করে ক্যানোলা তেল উৎপাদন কারখানা স্থাপনের বিষয়ে আলোচনা করেন।

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda Zia returns home from London

Khaleda Zia, accompanied by her two daughters-in-law Zubaida Rahman and Syeda Sharmila Rahman, is now on way to her Gulshan residence

2h ago