এখনও রাতে ঘুমাতে পারি না: আরশ খান

‘আমার মায়ের শরীর ভালো না। মায়েরও ঘুম কমে গেছে। আমাকে নিয়ে যা হয়েছে মা তা মেনে নিতে পারেননি, চিন্তায় তার শরীর ভেঙে পড়েছে। অথচ এসবের জন্য আমি মোটেও দায়ী নই।’
আরশ খান। ছবি: সংগৃহীত

এই প্রজন্মের অভিনয়শিল্পী আরশ খানের সরব উপস্থিতি টেলিভিশন নাটকে। কয়েক বছরের ক্যারিয়ারে ৭০-৮০ টি নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। বেশকিছু নাটক জনপ্রিয়তাও পেয়েছে। জটিল প্রেম, লাভ টর্চার, রাখাল বালিকা, হেডফোন ইত্যাদি নাটক তাকে বেশ পরিচিত এনে দিয়েছে।

সম্প্রতি একটি এক ঘণ্টার নাটকের শুটিংয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম খুব আলোচিত হয়েছেন তিনি। অভিনেত্রী চমক আরশ খানের নামে অভিযোগের তীর ছুঁড়ে দিয়েছিলেন। ঘটনাটি থানায় জিডি পর্যন্ত গড়িয়েছে। কিন্তু পরে অভিনয় শিল্পী সংঘসহ একাধিক সংগঠনের নেতারা বসে সবকিছু পর্যালোচনা করে দেখতে পান, চমক সহশিল্পী আরশের নামে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।

গত কয়েক দিন আগের ঘটনার বিষয়ে প্রশ্ন করতেই আরশ খান বলেন, 'আমাকে নিয়ে একজন অভিনেত্রী যেভাবে কথা বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেভাবে নেতিবাচকভাবে কথাগুলো ছড়াল, তা ঠিক না। যেটা হয়েছে তা ঠিক না, আমি অন্যায় করিনি, এটা এখন সবাই জেনে গেছেন।'

তিনি বলেন, 'এখনও আমি ঠিক মতো ঘুমাতে পারি না। ভোর রাত পর্যন্ত জেগে থাকি, অস্থিরতা কাজ করে। আমাকে নিয়ে যা হয়েছে দু:খজনক। এখনও রাতে ঘুমাতে পারি না।'

'দেখুন, ঘরে আমার মা আছেন। চমকের বয়সী আমার বোন আছে। বাবা বেঁচে নেই, বোনের বিয়ে দিতে হবে। সামাজিকভাবে আমাদের হেয় করা হয়েছে', যোগ করেন তিনি।

আরশ খান বলেন, 'আমার মায়ের শরীর ভালো না। মায়েরও ঘুম কমে গেছে। আমাকে নিয়ে যা হয়েছে মা তা মেনে নিতে পারেননি, চিন্তায় তার শরীর ভেঙে পড়েছে। অথচ এসবের জন্য আমি মোটেও দায়ী নই।'

আরশ খান ও চমক। ছবি: সংগৃহীত

কথায় কথায় আরশ খানের কাছ থেকে জানা যায়, চমকের সঙ্গে তার পরিচয় অভিনয়ের সূত্র ধরে। দুজন একসঙ্গে বেশ কয়েকটি নাটকে অভিনয় করেছেন জুটি বেঁধে। এভাবেই তাদের পরিচয় এবং পরে বন্ধুত্ব। ২ জন ২ জনকে তুমি করে সম্বোধন করেন।

আরশ খান ও চমকের ২ পরিবারের মধ্যেও ভালো সম্পর্ক ছিল।

আরশ খান বলেন, 'এবারের রমজানে একদিন আমার বাসায় চমক, পরিচালক, ইউনিটের আরেকজন ও আমি- এই ৪ জন ইফতার করেছি। ওর বাসায়ও গিয়েছি আমি। চমকের বাসায় ওর মেডিকেলের কিছু বন্ধুরা একদিন ছিল। সেদিন আমরা গেম খেলেছি।'

আফসোস করে এই অভিনেতা বলেন, 'আমি শুটিং করছি, কিন্তু এখনও নিজেকে স্বাভাবিক করতে সমস্যা হচ্ছে। মিথ্যা অভিযোগের কথাগুলো যেভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে, একজন অভিনেত্রী দোষী প্রমাণিত হওয়ার খবর সেভাবে তো ছড়ায়নি?'

তিনি বলেন, 'চমক এখনো জিডি প্রত্যাহার করেনি। একটা জিডি উঠিয়ে নিতে এতদিন লাগে? প্রতিদিন থানায় ফোন করে খোঁজ নিচ্ছি, কিন্তু জিডি উঠিয়ে নেয়নি।'

সংগঠনের বিষয়ে তিনি বলেন, 'অভিনয় শিল্পী সংঘসহ সব সংগঠনের প্রতি আমার সম্মান ও বিশ্বাস আছে। তাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি।'

অভিনেতা হওয়ার নেশাটা ছোটবেলা থেকেই আরশ খানের মধ্যে বাসা বেঁধেছে। সেজন্য মঞ্চ নাটকের দলে যোগ দিয়েছেন ২০০৫ সাল থেকে। লোকনাট্যদল তার দলের নাম।

তিনি বলেন, 'আমার বাবার প্রিয় নায়ক ছিলেন উত্তম কুমার। আমার মায়ের প্রিয় সৌমিত্র। আর আমার প্রিয় হুমায়ুন ফরীদি। ভালোবাসা থেকেই অভিনয়ে এসেছি।'

আরশ খানের জন্ম ও বেড়ে উঠা পুরান ঢাকায়। চমকের সঙ্গে তার প্রথম পরিচয় লুতফর রহমান সোহেলের ৭ পর্বের নাটক দিয়ে। এরপর নিকোল কুমার মন্ডলের 'জটিল প্রেম' নাটকে প্রথম ২ জন একসঙ্গে অভিনয় করেন।

সবশেষে আরশ খান বলেন, 'আমার এখন একটাই চাওয়া, সংগঠন যা যা বলেছে তা বাস্তবায়ন করুক। ৮-৯ দিন হয়ে গেল এখনও জিডি তুলে নেয়নি, এটা দুঃখজনক।'

 

 

Comments