‘হাওয়া’র পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার চেয়ে ২৩ নাগরিকের বিবৃতি

হাওয়া সিনেমার পোস্টার, সংগৃহীত

'হাওয়া' চলচ্চিত্রের পরিচালকের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে করা মামলা প্রত্যাহার চেয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ২৩ নাগরিক।

বিবৃতিতে বলা হয়, শিল্পীর স্বাধীনতা বিষয়ে চলচ্চিত্র নির্মাতা ও শিল্পীদের কতিপয় দাবির প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। যেহেতু দাবিগুলো যুক্তিযুক্ত, আমরা তাদের এসব দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করছি।

এতে আরও বলা হয়, বাস্তব আর শিল্পের মধ্যে যে ব্যবধান আছে, তা যদি আমরা বুঝতে না পারি, শিল্পীর স্বাধীনতা যদি আমরা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হই, তবে সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে যে 'চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা' দেওয়া হয়েছে, তার অবমাননা করা হবে। আমাদের সুস্পষ্ট দাবি, সৃজনশীলতার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী সকল নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থার অবসান ঘটাতে হবে। নিয়ন্ত্রণের কাঁটাতারে কোনো শিল্প সৃষ্টিকে আবদ্ধ করে রাখা যাবে না।

বিবৃতিদাতারা হলেন, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রামেন্দু মজুমদার, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদবিরোধী মঞ্চের সদস্য সচিব ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত, মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম, বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সভাপতি এসএমএ সবুর, মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এম আকাশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেনিন চৌধুরী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী পারভেজ হাসেম, জাতীয় শ্রমিক জোটের কার্যকরী সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ, গবেষক ও সংস্কৃতি কর্মী   ড. সেলু বাসিত, সংস্কৃতি কর্মী এ কে আজাদ, উঠোন সাংস্কৃতিক সংগঠনের অলক দাস গুপ্ত, 'বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম'র তথ্য ও প্রচার সম্পাদক দীপায়ন খীসা, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি  আবদুল মোতালেব জুয়েল এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক গৌতম শীল।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত আলোচিত চলচ্চিত্র 'হাওয়া'র পরিচালকের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা করেছে বন বিভাগ। ২০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলাটি করেছেন বন্যপ্রাণি পরিদর্শক নারগিস সুলতানা। শুধু তাই নয়, 'হাওয়া'র সেন্সর ছাড়পত্র বাতিল করে বাংলাদেশের বাইরে প্রচার, সম্প্রচার ও প্রদর্শন বন্ধ করতে আইনি নোটিশও পাঠিয়েছেন একজন আইনজীবী। নোটিশে বলা হয়, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পেয়ে ২৯ জুলাই মুক্তিপ্রাপ্ত 'হাওয়া' সিনেমায় ট্রলারে থাকা একটি খাঁচায় শালিক পাখি বন্দি অবস্থায় দেখা যায়। একপর্যায়ে সেটিকে হত্যা করে খাওয়ার দৃশ্য দেখানো হয়েছে—যা বণ্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

 

Comments

The Daily Star  | English

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

4h ago