জামালপুরে আকস্মিক বন্যা, তলিয়ে গেছে ১,১৯০ হেক্টর ফসলি জমি

জামালপুরে চলতি সপ্তাহে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। উজানের পাহাড়ি ঢলে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার অন্তত ৫ উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় জামালপুরের ৫ উপজেলার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। ছবি: স্টার

জামালপুরে চলতি সপ্তাহে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। উজানের পাহাড়ি ঢলে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার অন্তত ৫ উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

হঠাৎ এ বন্যায় জেলার প্রায় ১ হাজার ১৯০ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে।

জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বেড়েছে। এতে সদর উপজেলাসহ দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ, সরিষাবাড়ী উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিস্তীর্ণ ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

মেলান্দহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আমন ধান, মরিচ, ভুট্টা, পেঁয়াজ, মাশকলাই ও বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজির খেত পানির নিচে। জমিতে যেন পানি না ঢুকতে পারে, কৃষক সেজন্য খেতের চারপাশে মাটি দিয়ে উঁচু করে দিচ্ছেন।

এ উপজেলার কৃষক রুস্তুম আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এমন অসময়ে নদীর পানি কখনো বাড়তে দেখিনি। কয়েকদিন ধরে পানি বাড়ছে। পানি বাড়ায় খেতের ৮০ শতাংশ ধান তলিয়ে গেছে। আরেক ধান না আসা পর্যন্ত কীভাবে চলব, জানি না।'

যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বেড়ে যাওয়ায় জামালপুরের বিস্তীর্ণ ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ছবি: স্টার

একই উপজেলার রৌমারি বিল এলাকার বাসিন্দা মরিয়ম বেগম ডেইলি স্টারকে বলেন, '৪০ শতক জমিতে হাইব্রিড মরিচ চাষ করছিলাম। গত ৭ দিনে জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।' 

মেলান্দহ উপজেলার ঝাউগাড়া গ্রামের বাসিন্দা শাজামাল জানান, তিনি ৫ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছিলেন এবং এর মধ্যে ৪ বিঘাই পানিতে তলিয়ে গেছে।

সরিষাবাড়ী উপজেলার কৃষক নয়ন মণ্ডল ডেইলি স্টারকে জানান, তার ৩ বিঘা ধান ইতোমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলার অন্তত ১ হাজার ১৯০ হেক্টর ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে ৭২১ হেক্টর জমির আমন ধান, ১৪৩ হেক্টর মরিচ, ২১ হেক্টর পেঁয়াজ, ১৭৫ হেক্টর ভুট্টা, ৭৭ হেক্টর মাশকলাই, ৫৬ হেক্টর জমির শাক-সবজি ইতোমধ্যে পানিতে ডুবে গেছে।

জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জাকিয়া সুলতানা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হঠাৎ করে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার ৫টি উপজেলার নিম্নাঞ্চলের ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বলা যাবে।'

জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টের পানি পরিমাপক আব্দুল মান্নান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত কয়েকদিন অব্যাহতভাবে পানি বেড়েছে। তবে এখন যমুনার পানি কমতে শুরু করেছে।'

বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৯৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানান তিনি।

Comments