পাহাড় ধসে বান্দরবান-রুমা-থানচি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

পাহাড় ধসে রুমা উপজেলার গালেঙ্গ্যা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড ও টংগাবতি ইউনিয়নে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝামাঝি এলাকায় সড়ক ভেঙে গেছে। ছবি: স্টার

বান্দরবানে প্রবল বর্ষণে পাহাড় ধসে চিম্বুক-রুমা-থানচি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আজ শুক্রবার সরেজমিনে বান্দরবান-থানচি সড়কের মিলনছড়ি থেকে চিম্বুক নীলগিরি পোড়া বাংলা এবং রুমা সড়কে গিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, গত কয়েকদিনে টানা প্রবল বর্ষণে জেলার অধিকাংশ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। এ সময় পাহাড় ধসে বান্দরবান-থানচি-রুমা সড়কের মিলনছড়ি এলাকা থেকে শুরু করে চিম্বুক নীলগিরি পোড়া বাংলা এলাকা এবং বান্দরবান-রুমা ও থানচি সড়কের বিভিন্ন এলাকার পাহাড় ধসে সড়ক ভেঙে যায়।

এতে বান্দরবান-রুমা-থানচি সড়কে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। 

চিম্বুক ১৬ মেইল এলাকার বাসিন্দা রিং ত্লাং বম (২৫) দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, পাহাড় ধসের কারণে সড়কে কোনো ধরনের গাড়ি চলাচল করতে পারছে না।

বাগান পাড়া এলাকার বাসিন্দা মেন রাও ম্রো বলেন, '৭ তারিখ বাসার জন্য বাজার করতে চিম্বুক বাজারে গিয়ে দেখি পাহাড় ধসে সড়ক ভেঙে গেছে। গাড়ি না থাকায় প্রায় ৯ কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরি।'

টংগাবতি ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইয়াং রুং ম্রো দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রুমা উপজেলার গালেঙ্গ্যা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড ও টংগাবতি ইউনিয়নে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্ত এলাকায় সড়ক ভেঙে গেছে।'

এ সড়ক ঠিক না হলে চিম্বুক পাহাড় ও আশেপাশের এলাকার প্রায় ৫ হাজারের বেশি মানুষ দৈনন্দিন কাজে ভোগান্তিতে পড়বে বলে জানান তিনি।

সড়ক ভাঙা থাকায় গতকাল পোড়া বাংলা পাড়ার একজন মুমূর্ষু নারীকে চিকিৎসার জন্য বান্দরবান সদরে নিয়ে যাওয়া যায়নি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২০ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন বাংলাদেশের (২০ ইসিবি) ওয়ারেন্ট অফিসার রাহুল হাসান পার্থ ডেইলি স্টারকে জানান, বান্দরবান থেকে রুমা, চিম্বুক-নীলগিরি-থানচি সড়কটি দ্রুত যান চলাচল উপযোগী করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। 

তিনি বলেন, 'আজ বান্দরবান থেকে ওয়াই-জংশন পর্যন্ত চলাচলের উপযোগী করা হবে। আগামীকাল আরও কয়েকটি টিম যোগ হবে।'

চিম্বুক ও নীলগিরি মধ্যবর্তী পোড়া বাংলা এলাকায় প্রায় ১০০ মিটার ধসে যাওয়া সড়কে বিকল্প সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে বলেও জানান তিনি।

যোগাযোগ করা হলে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মুজাহিদ উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জেলার অন্যান্য উপজেলার সঙ্গে জেলা সদরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন আছে। শুনেছি বান্দরবান-রুমা, বান্দরবান-থানচি প্রধান সড়কে পাহাড় ধসে রাস্তাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।'

তিনি বলেন, 'এখনো বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক সব উপজেলায় স্বাভাবিক হয়নি বলে সম্পূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়নি। সম্পূর্ণ তথ্য পাওয়া গেলে ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য জানানো যাবে।'

জেলা প্রশাসক আরও জানান, গত ৮ দিন ধরে বান্দরবান জেলায় ভয়াবহ ভারী বর্ষণ ও বন্যায় ১৫ হাজার ৮০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত, ৩ হাজার ৫৭৮টি পরিবার আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ও ৮ হাজার ২৫৩ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। 

 

Comments

The Daily Star  | English

Eid morning in 6 pictures

The morning of Eid-ul-Azha follows old, well maintained patterns

43m ago