কোন শাকসবজিতে প্রোটিন আছে, এর মাধ্যমে কি দৈনন্দিন চাহিদা পূরণ সম্ভব

ছবি: সংগৃহীত

খাদ্যের পুষ্টি উপাদান ছয়টি। এরমধ্যে প্রোটিন বা আমিষ অন্যতম। প্রোটিনকে জীবকোষের প্রাণও বলা হয়ে থাকে। আমিষ বলতে আমরা সবাই মাছ, মাংস, ডিম জাতীয় খাবার মনে করি। কিন্তু উদ্ভিদ থেকেও প্রোটিন পাওয়া যায়। এটিকে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন বলা হয়।

আজ জানব কোন শাকসবজি থেকে কী পরিমাণ প্রোটিন পাওয়া যায় এবং এই প্রোটিন দিয়ে দৈনন্দিন প্রোটিনের চাহিদা সঠিকভাবে পূরণ করা সম্ভব কি না। এ বিষয়ে জানিয়েছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য প্রযুক্তি ও পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মানসুরা মকবুল

মানসুরা মকবুল বলেন, প্রোটিন দুই ধরনের। প্রাণিজ প্রোটিন ও উদ্ভিজ্জ প্রোটিন। প্রাণিজ প্রোটিনের মধ্যে রয়েছে মাছ, মাংস, ডিম, কলিজা, দুধ ইত্যাদি। উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের উৎস হচ্ছে ডাল, শাকসবজি ইত্যাদি।

শাকসবজির মধ্যে যেসব শাকসবজি থেকে প্রোটিন পাওয়া যায় সেগুলোর মধ্যে আছে-

  • ব্রকলি:  ১০০ গ্রাম ব্রকলি থেকে পাওয়া যায় ২.৮ গ্রাম প্রোটিন।
  • ফুলকপি: ১০০ গ্রাম ফুলকপি থেকে প্রায় ২ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়।
  • পালং শাক: ১০০ গ্রাম পালং শাক থেকে ২. ৯ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়।
  • মাশরুম: ১০০ গ্রাম মাশরুমে ৩.১ গ্রাম প্রোটিন থাকে।
  • ভুট্টা: ১০০ গ্রাম সুইটকর্নে ৩.২ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়।
  • বেকড আলু: বেকড আলু থেকে ২ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়।
  • মটরশুঁটি: হাফ কাপ মটরশুঁটি থেকে ৫ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়।
  • এ ছাড়াও অ্যাসপারাগাস, অ্যাভোকাডো এগুলো থেকে ৮ গ্রামের মত প্রোটিন পাওয়া যেতে পারে।

শাকসবজির প্রোটিন দিয়ে কি দৈনন্দিন প্রোটিনের চাহিদা পূরণ সম্ভব?

মানসুরা মকবুল জানান, প্রোটিনের ক্ষেত্রে প্রাণিজ প্রোটিনকে সম্পূর্ণ প্রোটিন বলা হয়। কারণ প্রাণিজ প্রোটিনে রয়েছে দেহের জন্য অতি প্রয়োজনীয় সব অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো অ্যাসিড। প্রাণিজ প্রোটিন মানবদেহে সহজে শোষিত হয় এবং প্রাণিজ প্রোটিন অল্প পরিমাণ গ্রহণের মাধ্যমেই দৈনন্দিন প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।

অন্যদিকে অধিকাংশ শাকসবজিতে প্রাপ্ত প্রোটিনের পরিমাণ প্রাণিজ প্রোটিনের তুলনায় অনেক কম এবং উদ্ভিজ্জ প্রোটিনে সব ধরনের অত্যাবশ্যকীয় অ্যামাইনো এসিড পাওয়া যায় না। কোনো না কোনো একটি অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো এসিডের ঘাটতি থেকে যায়। ফলে পুষ্টিমানও কম হয়। এ কারণে উদ্ভিজ্জ প্রোটিনকে অসম্পূর্ণ প্রোটিন বলা হয়।

একজন সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ও নারীর প্রতিদিন যথাক্রমে ৭০-৮০ গ্রাম এবং ৫০-৬০ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করা উচিত।

শুধু শাকসবজি দিয়ে প্রোটিনের এই বিশাল চাহিদা দৈনন্দিন পূরণ করা কষ্টসাধ্য। সেক্ষেত্রে  জানতে হবে কোন শাকসবজিতে কতটুকু প্রোটিন এবং কোন অ্যামিনো অ্যাসিডের ঘাটতি রয়েছে। এটির দিকে নজর দিয়ে কয়েক ধরনের শাকসবজি একসঙ্গে মিশিয়ে সম্পূরক খাদ্য তৈরি করলে প্রোটিনের ঘাটতি তুলনামূলক কম হবে। যেমন- শাকসবজির সঙ্গে ডাল মিশিয়ে রান্না করলে প্রোটিনের জৈব মান তুলনামূলকভাবে বাড়ানো যাবে।

প্রাণিজ প্রোটিন খাওয়া কি ভালো?

যেহেতু প্রাণিজ প্রোটিন থেকে সব ধরনের অ্যামিনো আাসিড পাওয়া যায় এবং কম পরিমাণ থেকেই দৈনন্দিন চাহিদা পূরণ করা সম্ভব, সেহেতু প্রাণিজ প্রোটিন গ্রহণ করাই ভালো। যারা সুস্থ-সবল তারা প্রাণিজ প্রোটিন গ্রহণের মাধ্যমে খুব সহজেই দৈনন্দিন চাহিদা পূরণ করতে পারেন। তবে যারা উচ্চ রক্তচাপ, লিভার কিডনিজনিত সমস্যায় ভুগছেন তারা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রাণিজ প্রোটিন গ্রহণ করবেন। শাকসবজি শরীরের জন্য অনেক উপকারী। তবে প্রোটিনের পরিমাণ প্রাণিজ প্রোটিন থেকে অনেক কম।

 

Comments

The Daily Star  | English
Nat’l election likely between January 6, 9

EC suspends registration of AL

The decision was taken at a meeting held at the EC secretariat

8h ago