মিষ্টি কুমড়ার বীজের উপকারিতা কী, কীভাবে ও কতটুকু খাবেন

ছবি: সংগৃহীত

রঙিন শাকসবজির মধ্যে অন্যতম মিষ্টি কুমড়া। অনেকেই হয়তো জানেন না মিষ্টি কুমড়ার বীজও শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী। এই বীজ আমরা খাওয়ার অযোগ্য ভেবে ফেলে দিই। তবে পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মিষ্টি কুমড়ার বীজ হতে পারে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর উৎস।

মিষ্টি কুমড়ার বীজের উপকারিতা, খাওয়ার পরিমাণ ও পদ্ধতি বিষয়ে আমাদের জানিয়েছেন মিরপুর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের পুষ্টিবিদ শরীফা আক্তার শাম্মী।

মিষ্টি কুমড়ার বীজ উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের ভালো উৎস। কোনো কোলেস্টেরল নেই বলে এটি একটি নিরাপদ প্রোটিনের উৎস। এই বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস কপার,ভিটামিন ই, আয়রন ও ফাইবার।

কতটুকু ও কীভাবে খাবেন

মিষ্টি কুমড়ার বীজে প্রচুর ক্যালরি রয়েছে এবং এগুলো প্রোটিন সমৃদ্ধ। তাই পরিমিত পরিমাণে কুমড়ার বীজ খাওয়া উপকারী। একজন সুস্থ ব্যক্তি নিয়মিত একমুঠো অর্থাৎ ১৫-২০টির মতো বীজ খেতে পারবেন।  

মিষ্টি কুমড়ার বীজ রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করে রাখা যায়। সালাদ, তরকারির মধ্যে বীজ যোগ করলে খাবারের পুষ্টিমাণ বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া সকাল এবং বিকালের নাস্তায় এ বীজ ড্রাই ফুড হিসেবে অথবা অল্প তেলে হালকা ভেজে খাওয়া যায়।

উপকারিতা

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: মিষ্টি কুমড়ার বীজে রয়েছে ভিটামিন ই, জিঙ্ক এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেগুলো শরীরের ইমিউনিটি বাড়াতে সাহায্য করে। ইমিউনিটি ভালো থাকলে যেকোনো রোগ সহজে প্রতিরোধ করা যায়।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: মিষ্টি কুমড়ার বীজে থাকা ম্যাগনেশিয়াম রক্তে শর্করার মাত্রা হ্রাস করে। ফলে ডায়াবেটিস রোগীরা এটি গ্রহণ করলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

ভালো ঘুম: কুমড়োর বীজের ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামিনো এসিড ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে।

হার্ট ভালো রাখে: এই বীজের ম্যাগনেশিয়াম রক্তচাপ কমাতে ভূমিকা রাখে। খারাপ কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডও কমায়। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস পায়।

ওজন হ্রাস করে: মিষ্টি কুমড়ার বীজ প্রোটিন ও ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় ক্ষুধা নিবারণ করার পাশাপাশি খাওয়ার প্রবৃত্তি কমায়। ওজন কমাতে চাইলে খাদ্যতালিকায় এটি যোগ করা উচিত ।

হাড় মজবুত করে: এই বীজে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম থাকায় এটি বোন ডেনসিটি বৃদ্ধি করে হাড়কে মজবুত করে।

এ ছাড়া মিষ্টি কুমড়ার বীজ-

  • হতাশা ও উদ্বেগ হ্রাসে সহায়ক
  • হজমশক্তি বৃদ্ধি করে
  • চুলে পুষ্টি যোগায় এবং মজবুত করে
  • ত্বকের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে ত্বক ভালো রাখে
  • পুরুষের শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়াতে সাহায্য করে

সতর্কতা

মিষ্টি কুমড়ার বীজ একটি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার। তবে অতিরিক্ত গ্রহণ করলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে-

  • যাদের অ্যালার্জির সমস্যা তাদের ক্ষেত্রে এটি চুলকানি, ফুসকুড়ি, মাথাব্যাথার কারণ হতে পারে।
  • মিষ্টি কুমড়ার বীজ অতিরিক্ত খেলে পেটের ব্যথা, পেট ফাপা, ফোলাভাব এবং কোষ্ঠকাঠিন্যর মতো সমস্যা দেখা দেয়।  
  •  এই বীজ অতিরিক্ত গ্রহণ করলে ওজন কমার পরিবর্তে বেড়ে যেতে পারে।
  •  হাইপোগ্লাইসেমিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি, অর্থাৎ যাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কম তাদের এটি অল্প পরিমাণে খেতে হবে।

     

Comments

The Daily Star  | English

Election possible a week before Ramadan next year: Yunus tells Tarique

He said it will be possible if preparations completed, sufficient progress made in reforms and judicial matters

1h ago