মার্কিন নিষেধাজ্ঞার হুমকি সত্ত্বেও বন্দর পরিচালনার চুক্তিতে ভারত-ইরান

এই চুক্তির আওতায় আগামী ১০ বছর কৌশলগত দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব পাবে নয়াদিল্লি।
ইরানের চাবাহার বন্দর। ছবি: এক্স থেকে সংগৃহীত
ইরানের চাবাহার বন্দর। ছবি: এক্স থেকে সংগৃহীত

 

ইরানের সঙ্গে সমুদ্রবন্দর পরিচালনার চুক্তি করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার হুমকির মুখে পড়েছে ভারত। তবে আজ দেশটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই হুমকিতে পাত্তা না দেওয়ার কথা জানিয়ে বলেছেন, এই উদ্যোগ সবার জন্য সুফল বয়ে আনবে।

আজ বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

বিবিসির প্রতিবেদনে জানা গেছে, সোমবার ইরানের চাবাহার সমুদ্রবন্দর পরিচালনার জন্য ১০ বছরের চুক্তি করেছে নয়াদিল্লি-তেহরান। চুক্তি সাক্ষরের কয়েক ঘণ্টার মাথায় যুক্তরাষ্ট্র হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ইরানের সঙ্গে কোনো দেশ ব্যবসায়িক চুক্তিতে গেলে তারা 'সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার' মুখে পড়তে পারে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানান, তিনি ইরানের এই কৌশলগত বন্দর প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানটি এর সুফল সম্পর্কে সবাইকে জানানোর উদ্যোগ নেবে।

এই চুক্তির আওতায় আগামী ১০ বছর কৌশলগত দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব পাবে নয়াদিল্লি।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, 'সবার সঙ্গে যোগাযোগ করে সবাইকে বোঝাতে হবে যে এটি (এই প্রকল্প) সবার উপকারে আসবে।'

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ফাইল ছবি: রয়টার্স
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ফাইল ছবি: রয়টার্স

'চাবাহার (বন্দর) নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অতীত মনোভাব যাচাই করলে জানা যায়, দেশটি অন্তত এটুকু স্বীকার করেছে যে এই বৃহত্তর পরিসরে এই বন্দরের প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে', যোগ করেন তিনি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী যখন আফগানিস্তানে অবস্থান করছিল, তখন দেশটি অনিচ্ছাসত্ত্বেও এই বন্দর প্রকল্প মেনে নেয়। সে সময় ভারতকে কাবুল সরকারের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করতো ওয়াশিংটন।

বিবিসির প্রতিবেদন মতে, ২০১৮ সালের শেষের দিকে চাবাহার বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব নেয় ভারত। এই বন্দরের মাধ্যমে আফগানিস্তান ও মধ্য এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ভারতীয় পণ্য পরিবহনের পথ খুলে যায়। একই সঙ্গে চাবাহার বন্দর ব্যবহারের কারণে পাকিস্তানের স্থলপথ ব্যবহার এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় ভারত। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চাবাহার বন্দর দিয়ে এখন পর্যন্ত ভারত থেকে আফগানিস্তানে ২৫ লাখ টন গম ও ২ হাজার টন ডাল পাঠানো হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর ২০২১ সালে দেশটির সরকারের পতন হয় ও তালেবান ক্ষমতা দখল করে।

ভারতের চাবাহার বন্দর পরিচালনার অতীত ইতিহাস সত্ত্বেও সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় হুশিয়ারি দেয়, এই প্রকল্পে যেসব ভারতীয় প্রতিষ্ঠান কাজ করবে, তাদেরকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের উপমুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, 'ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এখনো কার্যকর। এসব নিষেধাজ্ঞা আরও জোরদার করা হবে। যেসব পক্ষ ইরানের সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তি করার কথা ভাবছে, তাদের সম্ভাব্য মার্কিন ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।'

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল হোয়াইট হাউজে বক্তব্য রাখছেন। ফাইল ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল হোয়াইট হাউজে বক্তব্য রাখছেন। ফাইল ছবি: সংগৃহীত

এই চুক্তির আওতায় ভারতের প্রতিষ্ঠান পোর্টস গ্লোবাল লিমিটেড (আইপিজিএল) 'কৌশলগত সরঞ্জাম প্রদান' ও 'এই বন্দরের পরিবহন অবকাঠামোর উন্নয়নে' আগামী এক দশকে ৩৭০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে।

Comments

The Daily Star  | English
Islami Bank's former managing director Abdul Mannan

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago