৬ ঘণ্টা পরও নিয়ন্ত্রণে আসেনি চট্টগ্রামে সুগার মিলের আগুন

ফায়ার সার্ভিসের ১৪ ইউনিটের সঙ্গে কাজ করছে বিমান-নৌবাহিনী
চট্টগ্রামে সুগার মিলে আগুন। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম নগরীর কর্ণফুলী থানার আওতাধীন ইছানগর এলাকার এস আলম রিফাইন্ড সুগার মিলে লাগা আগুন সোমবার রাত ১০টা পর্যন্ত সময়েও নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

সোমবার বিকেল ৪টার দিকে এই আগুন লাগে।

চট্টগ্রামে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কন্ট্রোল রুমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি ইউনিট কাজ করছে। রাত সাড়ে আটটার দিকে আগুন নেভানোর কাজে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে যোগ দিয়েছে বিমান বাহিনী ও নৌবাহিনী।

সরেজমিনে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সময়ে দেখা গেছে, প্রায় ১০ হাজার বর্গফুট আয়তনের গোডাউনটিতে আগুন জ্বলছে। এই গোডাউনের পাশেই রয়েছে আরও দুটি গোডাউন ও একটি জেনারেটর রুম।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানান, আগুন যাতে আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে না পড়ে, সেই চেষ্টাই করা হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের পাশাপাশি কারখানার অনেক কর্মচারীকেও আগুন নেভানোর চেষ্টা করতে দেখা গেছে। বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এস আলম গ্রুপের পরিচালক আহসানুল আলমসহ কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

তবে, কারখানার সহকারী ব্যবস্থাপক হাসমত আলী আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসার পেছনে ফায়ার সার্ভিসের গাফিলতি আছে বলে অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, আগুন লাগার প্রায় ৩০ মিনিট পর ফায়ার সার্ভিস এখানে আসে এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে তৎক্ষণাৎ তাদের কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি।

তিনি আরও বলেন, গুদামের উপরের অংশে আগুন লেগেছে। গুদামে প্রায় ৭০ হাজার টনের বেশি অপরিশোধিত চিনি মজুদ রয়েছে। গত ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে এই অপরিশোধিত চিনি আমদানি করা হয়েছে। গুদামে শ্রমিকরা কাজ করছিলেন।

মিলের গুদামঘরের শ্রমিক সারোয়ার সানী বলেন, অপরিশোধিত চিনি একটি বেল্টের মাধ্যমে জাহাজ থেকে গুদামে পৌঁছায়। ওই বেল্টের উপরের অংশে আগুন লাগে।

'আমাদের কাছে অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জাম থাকলেও আগুন লাগার জায়গাটি মাটি থেকে অনেক উঁচুতে হওয়ায় আমরা আগুন নেভাতে পারিনি', বলেন তিনি।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক আব্দুল মালেক জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মোট ১৪টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।

'ভবনটিতে প্রচণ্ড ধোঁয়া থাকায় দমকলকর্মীদের পক্ষে আগুন নেভানো কঠিন হয়ে পড়েছে। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি', বলেন তিনি।

কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহির হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। তারা ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তা করছে।

'আমরা যতটুকু তথ্য পেয়েছি, ভেতরে কেউ আটকা পড়েনি', বলেন তিনি।

জানতে চাইলে এস আলম গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক সুব্রত কুমার ভৌমিক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সুগার মিল চালু ছিল। কিন্তু কীভাবে আগুন লেগেছে, তা এখনো জানতে পারিনি। ভেতরে কেউ আটকা পড়েছে কি না, তাও এখনো জানতে পারিনি।'

Comments