যুবলীগ নেতার গুদাম থেকে জব্দ করা ১১২৪ বস্তা চাল উধাও

Bogura_DS_Map
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কালিতলা এলাকার এক যুবলীগ নেতার গুদাম থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জব্দ করা ১ হাজার ১৩০ বস্তা চালের মধ্যে ১ হাজার ১২৪ বস্তা চাল উধাও হয়ে গেছে।

গত ৩০ নভেম্বর জেলা প্রশাসনের একটি ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে সারিয়াকান্দির চাল ব্যবসায়ী যুবলীগ নেতা শাহাদত হোসেন (৩১) ও তার ছোট ভাই শাহীন আলমের (২৮) গুদাম থেকে সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রয় ও বিতরণযোগ্য সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১ হাজার ১৩০ বস্তা চাল জব্দ করেন।

এ সময় সেখানে উপস্থিত শাহীন আলমকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেইসঙ্গে চালসহ গুদাম সিলগালা করে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার জিম্মায় দেওয়া হয়।

এর কিছুদিন পর গুজব উঠে যে সিলগালা করা গুদাম থেকে চালের বস্তাগুলো উধাও হয়ে গেছে। পরে বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ৪ সদস্যের একটি একটি তদন্ত দল গঠন করেন। ওই তদন্ত দলের সদস্যরা গতকাল বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে গুদামে ৬ বস্তা চাল পান। এর পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত দলের সদস্য সারিয়াকান্দি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দেওয়ান মো. আতিকুর রহমান বাদী হয়ে সারিয়াকান্দি থানায় একটি চুরির মামলা দায়ের করেন।

আজ শুক্রবার সকালে দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী সাইফুদ্দিন।

সিলগালা করা অবস্থায় কীভাবে চাল গায়েব হলো জানতে চাইলে কাজী সাইফুদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভ্রাম্যমাণ আদালত চালগুলো জব্দ করার পরে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের জিম্মায় দিলেও এর নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল পুলিশ। জব্দ করা চাল যে গুদামে ছিল তা নির্মাণাধীন। তাই জায়গাটি নিরাপদ ছিল না।'

এ ব্যাপারে সারিকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজেশ কুমার চক্রবর্তী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চালগুলো যখন জব্দ করা হয় তখন বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়নি। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস থেকে আমাদের কাছে চিঠি আসে গত ৪ ডিসেম্বর। তখন থেকে পুলিশ সেখানে নিয়মিত মহল দিচ্ছিল। আমাদের ধারণা জব্দ করার পরপরই সেখান থেকে চাল সরানো হয়েছে।'

এ বিষয়ে সারিয়াকান্দি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দেওয়ান মো. আতিকুর রহমানের ভাষ্য, 'আমার ওপর দায়িত্ব দেওয়া হলেও চালগুলো পুলিশের হেফাজতে ছিল। জায়গাটি অনিরাপদ হওয়ায় বিষয়টি দ্রুত নিস্পত্তির জস্য আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে আগেই চিঠি দিয়েছিলাম।'

নিজ বাড়ির গুদাম থেকে চাল কীভাবে উধাও হলো- জানতে চাইলে যুবলীগ নেতা শাহাদত হোসেন বলেন, 'কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির কিছু চাল আমি স্থানীয় খাদ্য গুদাম থেকে এবং বাকি চাল মিলারদের কাছ থেকে কিনেছিলাম। চালগুলো বৈধ ছিল। ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের সময় আমরা কাগজপত্র দেখিয়েছিলাম কিন্তু তারা সেটা আমলে নেন নি।'

এই যুবলীগ নেতার দাবি, গুদামে চাল ছিল ৫৬৪ বস্তা। কিন্তু ভ্রাম্যমান আদালত সেটাকে ১ হাজার ১৩০ বস্তা দেখিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, 'চাল কে সরিয়েছে তা আমরা জানি না। গতকাল তদন্ত দল গাড়ি নিয়ে এসেছিল। তারাই (চাল) নিয়ে গিয়ে আমাদের দোষ দিচ্ছে।'

শাহাদত হোসেনের অভিযোগ, এই কাজের সঙ্গে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দেওয়ান মো. আতিকুর রহমান জড়িত।

এ ছাড়া তাকে ফাঁসানোর জন্য বিরোধীপক্ষের লোকজনও এটা করে থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেন শাহাদত।

Comments

The Daily Star  | English
Government notification banning Awami League

Govt issues gazette notification banning AL activities

A Public Security Division joint secretary confirmed the matter

1h ago