আদালতে অচলাবস্থা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আইনজীবীদের সঙ্গে মন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেলের বৈঠক

আইনজীবীদের টানা কর্মবিরতির কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে অচলাবস্থা চলছে। ছবি: মাসুক হৃদয়/স্টার

আইনজীবী ও কর্মচারীদের পাল্টাপাল্টি অবস্থানের কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে চলমান অচলাবস্থা নিরসনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনের সঙ্গে জেলা আইনজীবী সমিতির নেতাদের বৈঠক হয়েছে।

গতকাল বুধবার রাতে ঢাকায় আইনমন্ত্রীর গুলশানের আবাসিক কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বাবুল দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বৈঠকের বিষয়ে মফিজুর রহমান জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে যা চলছে সে সম্পর্কে আদ্যপান্ত জানানোর পর আইনমন্ত্রী বিষয়টি দ্রুত সুরাহা করার ব্যাপারে তাদের আশ্বস্ত করেন।

বৈঠকে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের প্রতিনিধি হিসেবে মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ রাজা, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির ও সাধারণ সম্পাদক আবদুর নূর দুলালও উপস্থিত ছিলেন বলে জানান মফিজুর রহমান।

জেলা আইনজীবী সমিতির এই নেতা বলেন, 'দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার কারণে যে আমরা জেলা জজ শারমিন নিগারের অপসারণ দাবি করছি, তাও তাদের বলেছি। এছাড়া বিচারক ফারুক আহমেদও যে চাকুরি বিধিমালা লঙ্ঘন করে ৩টি জরুরি মামলা গ্রহণ না করে আইনজীবীদের সঙ্গে অসঙ্গত আচরণ এবং ঢালাওভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সব আইনজীবীদের নিয়ে খারাপ মন্তব্য করেছেন—সেটাও অবহিত করা হয়েছে।'

এদিকে আজ বৃহস্পতিবারও আইনজীবীদের আদালত বর্জনের কর্মসূচি চলমান থাকবে জানিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানবীর ভূঁঞা বলেন, 'আইনজীবীদের দাবি অনুযায়ী জেলা জজসহ ২ বিচারক ও দুর্নীতিবাজ নাজিরকে অপসারণ না করা পর্যন্ত আদালত বর্জন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।'

শীতকালীন ছুটির আগে আদালতের শেষ কার্যদিবস ছিল গত ১ ডিসেম্বর। ওই দিন ৩টি মামলা না নেওয়ায় ১ জানুয়ারি থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জন করেন আইনজীবীরা।

এরপর ২ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর এজলাস চলাকালে বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের সঙ্গে আইনজীবীদের বাদানুবাদের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ৪ জানুয়ারি জেলা বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন আদালতের সব এজলাসের দরজা ও প্রধান ফটকে তালা দিয়ে এক দিনের কর্মবিরতি পালন করে।

এর প্রতিবাদে ৫ জানুয়ারি আইনজীবীরা সাধারণ সভা করে ৩ কার্যদিবসের কর্মবিরতির ডাক দেন। পরে এটি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

জেলা আইনজীবী সমিতির টানা আদালত বর্জন কর্মসূচির কারণে বিচারপ্রার্থী লোকজন চরম বিপাকে পড়েছেন।

গত সপ্তাহের বুধবার থেকে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা ৭ কার্যদিবস আদালতে বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ আছে। এতে প্রতিদিন অন্তত ১০ হাজারের বেশি বিচারপ্রার্থী সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

 

Comments

The Daily Star  | English

Reforms, justice must come before election: Nahid

He also said, "This generation promises a new democratic constitution for Bangladesh."

1h ago