কুষ্টিয়া আইনজীবী সমিতির নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলা-ভাঙচুর

কুষ্টিয়া
ছবি: আনিস মণ্ডল/ স্টার

কুষ্টিয়া আইনজীবী সমিতির নির্বাচনী প্রচার ক্যাম্পে অর্ধশতাধিক দৃর্বৃত্ত হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। এ সময় ভিডিও করতে যাওয়া এক শিক্ষানবীশ আইনজীবীকে কাঠ ছুড়ে মেরে জখম করে তারা। এ ছাড়া ভিডিও করেছেন সন্দেহে এক নারী আইনজীবীর মোবাইল ফোন তল্লাশি করে তাকে লাঞ্ছিত করে হামলাকারীরা।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার পর আদালত প্রাঙ্গণে অবস্থিত ক্যাম্পে এসব ঘটনা ঘটে। এ সময় ৩-৪টি ক্যাম্পের অর্ধশতাধিক চেয়ার টেবিল ভাঙচুর ও নির্বাচনী প্রচারের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হয়।

হামলাকারীরা আদালতের কেউ নয়, সবাই বহিরাগত বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা।

নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ও সাধারণ আইনজীবীরা বলছেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী জাতীয়তাবাদী আইনজীবীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের ফলে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।

নির্বাচনে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দেখা হচ্ছে কুষ্টিয়া আদালতের জিপি ও নির্বাচনে সভাপতি পদপ্রার্থী মো. মাহাতাব উদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আইনজীবী শাতিল মাহমুদকে।

সভাপতি পদপ্রার্থী মো. মাহাতাব উদ্দিন বলেন, 'বিগত ফ্যাসিবাদীদের আমলে আমি চারবার নির্বাচন করেছি, কিন্তু কোনোদিন এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। ফ্যাসিবাদের বিদায়ের পর যারা এমন ঘটনা ঘটাতে পারে, তাদের হাতে ক্ষমতা গেলে যে ভালো কিছু হবে না, তা সহজেই অনুমান করা যায়।'

কারা হামলা চালাতে পারেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে মাহাতাব বলেন, 'বিগত স্বৈরাচারের আমলে গায়েবি মামলার কিছু আসামি হাজিরা দিতে এসে হামলায় অংশ নিয়েছেন। শুনেছি হামলার সময় ‍যুবদলের নামে স্লোগানও দেওয়া হয়েছে।'

কুষ্টিয়া
হামলায় আহত আইনজীবী। ছবি: আনিস মণ্ডল/ স্টার

নির্বাচনের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আইনজীবী শাতিল মাহমুদ বলেন, 'যারা নির্বাচনকে ভয় পায়, তারাই স্থানীয় সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ভয়ভীতি দেখানো ও নির্বাচন বানচালের উদ্দেশ্যে এই হামলা চালিয়েছে।'

বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পাওয়া সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী আব্দুল মজিদ বলেন, 'ফ্যাসিস্টদের দোসর অনেকেই চাচ্ছেন না নির্বাচন হোক, এ জন্য তারা হামলার ঘটনা ঘটাতে পারেন। হামলার সময় আদালতে থাকায় এর বেশি কিছু আমার জানা নেই।'

এদিকে যুবদলের নামে হামলাকারীরা স্লোগান দিয়েছে— সভাপতি পদপ্রার্থী মো. মাহাতাব উদ্দিনের এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ বলেন, 'আজকে যুবদলের কিছু নেতাকর্মীর হাজিরা ছিল। কিন্তু তারা কোনো হামলা করতে ওখানে গেছে বলে জানি না।'

এদিকে ওই ঘটনা ভিডিও করতে গিয়ে হামলায় জখম হয়েছেন শিক্ষানবীশ আইনজীবী মুজিবুল। তিনি বর্তমানে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার সঙ্গে থাকা অন্যরা জানান, হামলার সময় মোবাইল ফোনে ভিডিও করছিলেন মুজিবুল। এ সময় হামলাকারী দলের ভেতর থেকে কাঠের টুকরা ছুঁড়ে মারা হয় মুজিবুলের উদ্দেশে।

এছাড়া আরেক শিক্ষানবীশ আইনজীবী রুনা পারভীন নিজ কক্ষে লাঞ্ছিত হয়েছেন। ঘটনাস্থলের সঙ্গে লাগোয়া তার চেম্বার।

রুনা পারভীন বলেন, 'আমি জানালার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। এ সময় কয়েকজন হামলাকারী আমার দিকে তেড়ে এসে দাবি করে আমি ভিডিও করছি। পরে তারা আমার ফোন নিয়ে তল্লাশি করে। রুমের দরজা বন্ধ থাকায় তারা জানালা দিয়েই লাঠি ঢুকিয়ে আমাকে মারধরের চেষ্টা করে।'

এসব বিষয়ে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হামলার বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো অভিযোগ এখনো পাইনি। আমরা তদন্ত করে দেখছি।'

Comments

The Daily Star  | English
education in Bangladesh

As a nation, we are not focused on education

We have had so many reform commissions, but none on education, reflecting our own sense of priority.

16h ago