আবু রেজা নদভি ও তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তি ৫ বছরে বেড়েছে ৩ গুণ
চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর আয় ৫ বছরে প্রায় সাড়ে ৩ গুণ বেড়েছে।
আবু রেজা নদভি এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য। তার অস্থাবর সম্পত্তিও গত ৫ বছরে ৩ গুণ বেড়েছে।
২০১৮ সালে তার নির্বাচনী হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, তার বার্ষিক আয় ছিল ৫২ লাখ ৭ হাজার ৮৭৭ টাকা। এবারের হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, তার বার্ষিক আয় এখন বেড়ে ১ কোটি ৮১ লাখ ৮৭ হাজার ৪৪১ টাকা।
২০১৮ সালের হলফনামায় তার অস্থাবর সম্পদ দেখানো ছিল ১ কোটি ৭৩ লাখ ৮৯ হাজার ১১৮ টাকা। ২০২৩ সালে আবু রেজার অস্থাবর সম্পত্তি বেড়ে ৫ কোটি ৯৭ লাখ ৬৭ হাজার ৬৬৫ টাকা হয়েছে।
শুধু তারই নয়, তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তিও গত ৫ বছরে সাড়ে ৩ গুণ বেড়েছে।
নির্বাচনী হলফনামায় আবু রেজা শিক্ষাগত যোগ্যতা এমএ, পিএইচডি উল্লেখ করেছেন এবং পেশা উল্লেখ করেছেন ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি চট্টগ্রামের (আইআইইউসি) অধ্যাপক ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান।
২০১৮ সালের হলফনামা অনুযায়ী, আবু রেজার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তি ছিল ১৯ লাখ ২৮ হাজার ৫৩৯ টাকা। ২০২৩ সালে যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৭ লাখ ৫৪ হাজার ২৯৫ টাকা।
হলফনামায় দেখা যায়, ৫ বছর আগে ২০১৮ সালে ব্যাংকে আবু রেজার জমা ছিল ৬৩ লাখ ৬২ হাজার ৯০১ টাকা। বর্তমানে ব্যাংকে তার নামে জমা আছে ১ কোটি ৬৪ লাখ ৯৬ হাজার ৩৪৪ টাকা।
পাঁচ বছর আগে ২০১৮ সালে যেখানে তার নামে ১১ লাখ ৩৮ হাজার ৪২৬ টাকার ডিপিএস এবং ১৪ লাখ ২২ হাজার ৭৯১ টাকার এফডিআর ছিল।
বর্তমানে তার ২ লাখ ৭২ হাজার ৯৯৪ টাকার ডিপিএস এবং ২ কোটি ২৮ লাখ ৮৭ হাজার ২২০ টাকার এফডিআর রয়েছে।
২০১৮ সালে আবু রেজার ৭৮ লাখ টাকা মূল্যের গাড়ি ছিল। ২০২৩ সালের হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেন, তার ৩টি গাড়ি আছে, যেগুলোর মোট দাম ১ কোটি ৮৮ লাখ ৫২ হাজার ১৬৬ টাকা।
২০১৮ সালের হলফনামা অনুযায়ী, আবু রেজার স্ত্রীর কাছে নগদ ৫ লাখ টাকা ছিল। ২০২৩ সালের হলফনামা অনুযায়ী, এখন তার স্ত্রীর কাছে নগদ ২০ লাখ ২১ হাজার ২৪৬ টাকা রয়েছে।
২০১৮ সালে তার স্ত্রীর ব্যাংকে জমা ছিল ৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। ২০২৩ সালে স্ত্রীর ব্যাংকে জমা আছে ১৩ লাখ ৪১ হাজার ৯৫ টাকা।
২০১৮ সালে নদভীর স্ত্রীর ১ লাখ ৩৪ হাজার ৭০০ টাকার ডিপিএস এবং ১ লাখ ৪৮ হাজার ৮৩৯ টাকার এফডিআর ছিল। ৫ বছর পর বর্তমানে স্ত্রীর ৭ লাখ ৯৮ হাজার ৭৮ টাকার ডিপিএস এবং ১৮ লাখ ৯৩ হাজার ৮৭৬ টাকার এফডিআর রয়েছে।
আবু রেজার আয়ের প্রধান উৎস আইআইইউসি থেকে সম্মানী ভাতা ১ কোটি ৩৭ লাখ ৬১ হাজার ৪৪২ টাকা এবং সংসদ সদস্য হিসেবে সম্মানী ২৩ লাখ ১৫ হাজার ৭০৭ টাকা।
এলাকায় উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন সম্পর্কে তিনি বলেন, নদীভাঙন রোধে বাধ নির্মাণ, সেতু নির্মাণ, রাস্তাঘাট, নির্মাণসহ ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়ন করেছেন।
আবু রেজা ২০১৪ ও ২০১৮ সালে টানা দুই মেয়াদে একই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
যোগাযোগ করা হলে আবু রেজা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তিনি তার আয়কর ফাইল অনুযায়ী হলফনামায় সবকিছু উল্লেখ করেছেন। তিনি কোনো তথ্য গোপন করেননি।
তিনি বলেন, 'এতে কোনো ভুল তথ্য নেই। আইআইইউসি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান হিসেবে আমি সম্মানী পাই। এছাড়া সংসদ সদস্য হিসেবে আমি সম্মানী পাই। আমি প্রতি বছর বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদান করি এবং এর জন্য সম্মানী পাই।'
স্ত্রীর সম্পদ সম্পর্কে জানতে চাইলে আবু রেজা বলেন, 'আমার স্ত্রী আইআইইউসির প্রতিষ্ঠাতার কন্যা এবং এ কারণে তিনি আইআইইউসি বোর্ড অফ ট্রাস্টিজেরও একজন সদস্য। তিনি আইআইইউসি থেকে সম্মানী পান।'
তিনি বলেন, 'আমার স্ত্রী আইআইইউসির কিছু দায়িত্ব পালন করেন এবং এজন্য তিনি সম্মানী পান।'
Comments