বাবার সঙ্গে ঢাকায় এসে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়া হলো না সাংবাদিক নাদিমের মেয়ের

গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষা ছিল
গোলাম রব্বানি নাদিম। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় গতকাল শুক্রবার জান্নাতের ভর্তি পরীক্ষা ছিল। বাবার সঙ্গে তার যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই পরীক্ষা দেওয়া হলো না মেয়ের। তার আগেই ওরা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। আমি এখন ছেলে-মেয়ে নিয়ে কোথায় যাবো? এখন আমি একা কীভাবে সামলাবো?

কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন সন্ত্রাসী হামলায় নিহত জামালপুরের বকশীগঞ্জের সাংবাদিক গোলাম রব্বানি নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম।

মনিরা বলেন, 'আমার স্বামীর বড় আশা ছিল মেয়েকে অর্থনীতি বিষয়ে অনার্সে পড়াবেন। ভর্তির জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষা ছিল গতকাল। বুধবার দুপুরে ময়মনসিংহের আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে মেয়েকে নিয়ে ইসলামী স্টাডিজ বিভাগে অনার্সে ভর্তি করিয়ে এসেছিলেন। এরপর রাতেই তার ওপর হামলা হয়। আমার মেয়ের স্বপ্ন পূরণ হলো না। বাবার অনুপস্থিতিতে এখন আমার মেয়েকে কীভাবে লেখাপড়া করাবো?'

সাংবাদিক নাদিম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান মনিরা।

সাংবাদিক নাদিমের শ্বশুর বীর মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, নাদিম আর মনিরার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে রিফাত বকশীগঞ্জ কলেজে ডিগ্রিতে লেখাপড়া করছেন। ছোট ছেলে পাপ্পু দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। মেয়ে রাবিলাতুজ জান্নাত ২০২২ সালে এইচএসসি পাস করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্সে ভর্তির জন্য চেষ্টা করছে সে।

তিনি বলেন, 'এখন এই অসহায় পরিবারটি কীভাবে চলবে আর আমার মেয়ে মনিরা কীভাবে ছেলে-মেয়েদের মানুষ করবে এটাই ভাবনা।'

গত বুধবার রাতে বকশীগঞ্জ বাজারের পাটহাটি এলাকায় হামলার শিকার হন বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জামালপুর জেলা প্রতিনিধি নাদিম। পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত ১০ জনকে আটক করেছে।

Comments