মহাস্থানগড় সবজি বাজার: গাড়িঘোড়া ঠিকই চলছে, দাম পাচ্ছে না কৃষক
এক সপ্তাহের ব্যবধানে বগুড়ার বড় পাইকারি বাজার মহাস্থানগড়ে সবজির দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে। কৃষকদের অভিযোগ, অবরোধ ও হরতালের দোহাই দিয়ে দাম কমিয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
আর ব্যবসায়ীরা বলছেন, হরতাল-অবরোধের কারণে নয় বরং, শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কিছুটা কমেছে।
আজ রোববার সকালে উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এই সবজি বাজারে গিয়ে দেখা যায় গত সপ্তাহের তুলনায় দাম কমেছে শীতকালীন শাকসবজির। আজ প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়, পটল ১৫ টাকায়, করলা ২৮-৩০ টাকায়, বাঁধাকপি প্রতিটি ২৮-৩০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়া (কাঁচা) ১২ টাকা, বরবটি ৮-১০ টাকা, পাতা পেঁয়াজ ৬০ টাকা, শিম ৩০-৩৫ টাকা, নতুন আলু ১৬০ টাকা, মুলা ১৩ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা। লাল শাক, পালং শাক, মুলা শাক বিক্রি হচ্ছে প্রতি আঁটি ৫-২০ টাকা দরে।
ব্যবসায়ী এবং কৃষকরা বলছেন ৮-১০ দিন আগেও বাজারে শাকসবজির দাম প্রায় দ্বিগুণ ছিল।
কৃষকদের অনেকে অভিযোগ করে বলেন, হরতাল ও অবরোধের দোহাই দিয়ে কমদামে সবজি কিনছেন ব্যবসায়ীরা। এতে ব্যবসায়ীরা লাভবান হলেও কৃষকরা মুনাফা করতে পারছেন না। দাম আরও কমলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
বগুড়া সদর উপজেলার বাঘোপাড়া এলাকার কৃষক মান্না প্রামাণিক বলেন, 'এক বিঘা জমিতে মুলা চাষ করতে খরচ হয় ৩৫-৪০ হাজার টাকা। ফলন হয় ৭০-৮০ মণ। মণপ্রতি মুলার দর ৫০০ টাকার নিচে নেমে গেলে কৃষকের লাভ বলে কিছু থাকে না।'
শিবগঞ্জ উপজেলার কৃষক আব্দুল মামুন বলেন, এক সপ্তাহ আগে ফুলকপি বিক্রি করেছি প্রতি মণ ১৭০০ টাকায়। আজকে ফুলকপি বিক্রি করলাম ৯০০ টাকা দরে। ফুলকপি চাষে খরচ অনেক বেশি। অনেক কীটনাশক লাগে। দাম এত কমে গেলে কৃষকের ক্ষতি হবে।
মামুন বলেন, 'অবরোধ হরতালের দোহাই দিয়ে ব্যবসায়ীরা কম দামে সবজি কিনছেন। অথচ গাড়িঘোড়া সব চলছে। শুধু কৃষক দাম পাচ্ছে না।'
সপ্তাহের ব্যবধানে দাম অর্ধেকে নেমে আসার কারণ জানতে চাইলে মহাস্থান কাঁচামাল আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতকাল আবহাওয়া খারাপ থাকায় দাম আরও কম ছিল। আজকে কিছুটা বেড়েছে।'
কাঁচাবাজারে হরতাল-অবরোধের প্রভাব জানতে চাইলে শফিকুল ইসলাম বলেন, 'বাজারে হরতাল-অবরোধের কোনো প্রভাব পড়েনি। সবজির গাড়ি তো চলছে। এখন পর্যন্ত সমস্যা হচ্ছে না। তবে গাড়ি প্রতি ভাড়া বেড়েছে চার-পাঁচ হাজার টাকা। অনেক চালক ভয়ে যেতে চাইছে না।'
Comments