চট্টগ্রামে সমাবেশের আগে বিএনপি নেতাদের বাড়িতে রাতভর পুলিশি অভিযান

চট্টগ্রামে পোলো গ্রাউন্ডে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে নেতাকর্মীদের ঢল। ছবি: রাজীব রায়হান/স্টার

চট্টগ্রামে আজ বুধবার বিভাগীয় সমাবেশের আগে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাড়িতে পুলিশ মঙ্গলবার রাতভর অভিযান ও তল্লাশি চালিয়েছে বলে নেতারা অভিযোগ করেছেন।

ইউনিফর্ম ও সাদা পোশাকে পুলিশ এসব অভিযান চালিয়েছে বলে দাবি করেন তারা।

অভিযানে পুলিশ অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ জানান, যারা বাড়িতে ছিলেন না তারা গ্রেপ্তার হওয়া থেকে বেঁচে গেছেন।

এছাড়া, বন্দরনগরী ও উপকণ্ঠের বিভিন্ন আবাসিক হোটেলেও রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। হোটেলগুলোতে বিভাগীয় মহাসমাবেশে অংশ নিতে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত বিএনপি নেতাকর্মীরা রুম বুক করেছিলেন বলে বিএনপি দলীয় সূত্র জানায়।

সূত্র জানায়, দলীয় নেতাকর্মীদের বাড়িতে রাতভর পুলিশি অভিযানের বিষয়ে দলের নেতারা গ্রেপ্তারের আশঙ্কার কথা জানিয়ে মঙ্গলবার রাতে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাকর্মীদের বাড়িতে না থাকার নির্দেশ দেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির এক নেতা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, এ নির্দেশের পর মঙ্গলবার রাতে অনেক নেতাকর্মী নিজ বাড়িতে ছিলেন না এবং তারা গ্রেপ্তার হওয়া থেকে বেঁচে গেছেন।

যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক ইদ্রিস আলী ডেইলি স্টারকে জানান, মঙ্গলবার রাতে নগরীর প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডে বিএনপির সভাপতি, সেক্রেটারি ও অন্যান্য দায়িত্বশীল নেতাদের বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি চালায়।

পাহাড়তলী এলাকায় মহানগর যুবদলের সহসভাপতি দিদারুল ফেরদৌসের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'পাহাড়তলী এলাকায় বিএনপির দুই নেতা হাবিবুর রহমান ও আজিজ চৌধুরীর বাড়িতেও পুলিশ অভিযান চালায়।'

'রাতে তারা বাড়িতে না থাকায় গ্রেপ্তার এড়াতে সক্ষম হন,' যোগ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, 'অভিযান চলাকালে পুলিশ অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশের অভিযানের উদ্দেশ্য ছিল পরিষ্কার। তারা চেয়েছে যেন আমাদের আজ বুধবারের সমাবেশ যেন সফল না হয়।'

'কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য সফল হয়নি। সমস্ত প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে সমাবেশকে সফল করতে কয়েক লাখ মানুষ সমাবেশে এসেছেন,' বলেন তিনি।

চট্টগ্রাম নগর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক আবুল হাশেম বক্কর ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রশাসন ও সরকারি দলের লোকেরা চেয়েছিল আমাদের সমাবেশ পণ্ড করতে। সেজন্য তারা প্রতি পদে পদে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে।'

'পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়িতে রাতভর অভিযান চালিয়েছে' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'আজকের সমাবেশে আসার পথে নেতাকর্মীদের গাড়ি ভাঙচুর করেছে সরকারি দলের কর্মীরা। সমাবেশে আসার পথে আমাদের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন জায়গায় মারধরও করা হয়েছে।'

'কিন্তু এত কিছু করেও তারা সমাবেশ বানচাল করতে পারেনি। আজ এই মহাসমাবেশ জনতার মহাসমুদ্রে পরিণত হয়েছে,' বলেন তিনি।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পলাতক অপরাধী ও বিভিন্ন মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ মঙ্গলবার রাতে নগরীতে নিয়মিত অভিযান চালিয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা আবাসিক হোটেল ও বিএনপি নেতাদের বাড়িতে অভিযান চালাতে যাব কেন? বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে কোনো অভিযান চালানো হয়নি।'

'বিএনপির সমাবেশ যেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য আমরা কাজ করছি,' যোগ করেন তিনি।

জ্বালানি তেল ও নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, দলীয় কর্মসূচিতে গুলি করে নেতা-কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদ এবং নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে বিভাগীয় (দলের সাংগঠনিক বিভাগ) পর্যায়ে আজ বুধবার সমাবেশ করছে বিএনপি।

 

Comments

The Daily Star  | English

No clear roadmap for investment

The budget for FY26 has drawn strong criticism from business leaders who say it lacks a clear roadmap for improving the investment climate, bolstering industrial competitiveness, and implementing overdue reforms in the banking sector.

15h ago