যেভাবে বঙ্গবন্ধু উদ্যান ভাগাভাগি হয়েছে বিএনপি ও প্রশাসনের মধ্যে

বঙ্গবন্ধু উদ্যানের একপাশে বিএনপির মঞ্চ ও অপরপাশে প্রশাসনের অনুষ্ঠানের জন্য মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে। মাঠের বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল ও কলেজ প্রান্তে প্রসাশনের অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি চলছে। মাঠের বিপরীত পাশে। সমাবেশের জন্য মঞ্চ তৈরি করছে বিএনপি। (কালো দাগটি দিয়ে বিএনপি ও প্রশাসনের অংশ বোঝানে হয়েছে। মাঠে এমন কোনো দাগ নেই।) ২ নভেম্বর ২০২২। ছবি: টিটু দাস/স্টার

বরিশালে বিএনপির সমাবেশ আগামী ৫ নভেম্বর। বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানের একাংশে সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছে বিএনপি।

ইতোমধ্যে বিএনপির পক্ষ থেকে মাঠের একপাশে সমাবেশের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। অন্যদিকে বাকি অংশে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাজগোজ করা হচ্ছে।

আগামী ৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের জুম মিটিং রয়েছে। এ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে ডেকোরেশনের কাজ করছে প্রশাসন।

আজ বুধবার দুপুর ২টায় সরেজমিনে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু উদ্যানের একপাশে বিএনপির মঞ্চ ও অপরপাশে প্রশাসনের অনুষ্ঠানের জন্য মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে। মাঠের বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল ও কলেজ প্রান্তে প্রসাশনের অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি চলছে। মাঠের বিপরীত পাশে সমাবেশের জন্য মঞ্চ তৈরি করছে বিএনপি।

বিএনপির নেতৃস্থানীয় একটি সূত্র জানায়, তাদেরকে স্থায়ী মঞ্চ ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি। স্থায়ী মঞ্চ থেকে ২০০ ফুট দূরে তাদেরকে মঞ্চ তৈরি করতে বলা হয়েছে। এর ফলে বঙ্গবন্ধু উদ্যানের প্রায় অর্ধেক চলে গেছে প্রশাসনের অনুষ্ঠানের অংশে। মাঠের বাকি অর্ধেক অংশে দক্ষিণমুখী করে তারা ৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২৫ ফুট প্রস্থের মঞ্চ তৈরি করছেন।

বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক বলেন, 'প্রশাসন তাদের অনুষ্ঠানের কথা বলে আমাদেরকে বেল পার্কের আংশিক বরাদ্দ দিয়েছে। এর ফলে আমাদেরকে নতুন জায়গায় মঞ্চ তৈরি করতে হচ্ছে। আমাদের মঞ্চটা উন্মুক্ত এলাকা থেকে ভেতরে সরে গেছে।'

'এ সবই আমাদেরকে বাধা দেওয়ার জন্য করা হচ্ছে বলে মনে করছি', যোগ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, 'এভাবে বাধা দিয়ে জনতার জোয়ার ঠেকানো যাবে না। মানুষ যেকোনো মূল্যে আসবে, তারা এসব বাধা মানবে না।'

মাঠে কোনো সংঘাত সৃষ্টি হতে পারে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমাদের একমাত্র লক্ষ্য সমাবেশ। সেখানে কোনো বাধা দেওয়া হলে আমরা মানব না। তবে আমরা মনে করি শুধু বঙ্গবন্ধু উদ্যান নয়, এর আশেপাশে, এমনকি রাস্তাঘাটও সমাবেশে আসা মানুষে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। শুধু এই আলাদা মঞ্চ করে বিভক্তি তৈরি করা সম্ভব না। যতোই বাধা আসুক, মানুষ আসবেই, অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে লাখো মানুষ সমাবেশে আসবেই।'

স্থানীয় বিএনপি নেতারা মনে করছেন, প্রশাসন আলাদা মঞ্চ করায় বিএনপির সমাবেশ মঞ্চ চোখে পড়বে না। বিএনপিকে সমাবেশের জন্য আলাদা গেট ব্যবহার করতে হচ্ছে। এর সবই করা হচ্ছে সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতে।

বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীমউদ্দীন হায়দার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, '৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বরিশালের সরকারি কর্মকর্তাদের বৈঠকের কারণে আমাদের আলাদা প্যান্ডেল করতে হয়েছে। বিএনপি সেটা মেনে নিয়েই আলাদা মঞ্চ তৈরি করছে। আমরা মনে করি, সবকিছু শান্তিপূর্ণ ভাবেই চলবে। বিএনপির তরফ থেকেও এমনটাই জানানো হয়েছে।'

বরিশালের বিভাগীয় পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিএনপি যদি সবক্ষেত্রে আইন মেনে চলে, তাহলে পুলিশও তাদেরকে সহযোগিতা করবে। আশা করি তারা তাদের দায়িত্ব পালন করবে এবং আমাদেরকে আমাদের দায়িত্ব পালন করতে দেবে।'

তিনি আরও বলেন, 'আমি তাদেরকে বলেছি, আপনারা রংপুরে সমাবেশ করেছেন কোনো সমস্যা হয়নি, এখানে কেন হবে?'

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

5h ago