চট্টগ্রাম বন্দরের হারবার মাস্টার, সিবিএ নেতাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

দুদকে তলব
চট্টগ্রাম বন্দরের হারবার মাস্টার, সিবিএ নেতাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

নিয়োগ বাণিজ্য, কর্মস্থলে প্রভাব, দুর্নীতি করে সম্পদ গড়াসহ আরও কয়েকটি অভিযোগে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার, সিবিএ নেতাসহ পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাদেরকে সশরীরে হাজির হয়ে নিজ, স্ত্রী, সন্তানদের জাতীয় পরিচয়পত্রসহ তাদের নামে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বিবরণী, দলিল ও প্রমাণাদি দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে দুদক।

ওই পাঁচজন হলেন—চট্টগ্রাম বন্দরের নৌ বিভাগের হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন জহিরুল ইসলাম, নৌ বিভাগের সহকারী জাহাজ পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন, সিবিএর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নায়েবুল ইসলাম ফটিক, নৌ বিভাগের প্রথম শ্রেণির মাস্টার ইব্রাহিম সেলিম ও ট্রাফিক বিভাগের ওয়ানস্টপ সার্ভিস সেন্টারের সহকারী পরিবহন পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম রনি।

জানা গেছে, নায়েবুল ইসলাম ফটিক কিছু দিন আগে নৌ বিভাগের লস্কর পদ থেকে পদোন্নতি পেয়েছেন এবং তিনি সরকারদলীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১১ বন্দর পতেঙ্গা আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এম এ লতিফের পক্ষে তিনি কাজ করেছেন। বিভিন্ন বিভাগে প্রভাব বিস্তারের পাশাপাশি বন্দরের ঠিকাদারি ব্যবসাসহ নানা ব্যবসায় তিনি জড়িত আছেন।

গত ১১ জানুয়ারি চট্টগ্রাম দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর উপ-পরিচালক মো. আতিকুল আলমের সই করা এক চিঠিতে তার কার্যালয়ে ২১ জানুয়ারির মধ্যে হাজির হয়ে কাগজপত্র জমা ও তাদের বক্তব্য দিতে বলা হয়েছে। চিঠির সূত্র ধরে তারা ২১ থেকে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত হাজির হয়ে তাদের দলিলপত্র দুদকে জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

তবে দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন তারা।

দুদকের উপ-পরিচালক মো. আতিকুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে তারা হাজির হয়ে কাগজ জমা দিয়ে তাদের বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করেছি। এর বেশি কিছু তদন্তের স্বার্থে বলতে পারবো না।'

দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে নৌ বিভাগের প্রথম শ্রেণির মাস্টার ইব্রাহিম সেলিম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি কাগজপত্র নিয়ে গত ২৫ জানুয়ারি দুদকে গিয়ে হাজিরা দিয়ে এসেছি। আমার বিরুদ্ধে কে বা কারা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ দিয়েছে, যা মিথ্যা। আমার চাকরি আছে আর ১১ মাস। দুদকের উনারা বলেছেন প্রয়োজনে আবার ডাকা হবে।'

তবে নিয়োগ বাণিজ্য, কর্মস্থলে প্রভাব, দুর্নীতি করে সম্পদের পাহাড় গড়াসহ নানান অভিযোগ অস্বীকার করে নায়েবুল ইসলাম ফটিক বলেছেন, 'নির্বাচনে নৌকার পক্ষে লড়ার কারণে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে আমাকে ফাঁসাতে এই অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।'

'আমার বিরুদ্ধে ব্যবসার অভিযোগ থাকলেও আমি ২০১৩ সালের আগে থেকে ব্যবসা করি। চাকরির পর আমি আমার লাইসেন্স আমমোক্তার নামা করে দিয়েছি। আমি এটা বিক্রি করে দিয়েছি', বলেন তিনি।

তবে প্রকাশ না করে বন্দরের একাধিক সিবিএ নেতা জানান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হলেও তিনি সাধারণ সম্পাদক হিসাবেই একছত্র আধিপত্য বিস্তার করছেন বন্দরে ভবন ও আশপাশের এলাকাতে। সাধারণ সম্পাদক মো. রফিউদ্দিন খান ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর থেকে অবসরোত্তর ছুটিতে গেছেন। এতে সিবিএর সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মো. নায়েবুল ইসলাম (ফটিক) দায়িত্ব পান সাধারণ সম্পাদকের। মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও সিবিএর নির্বাচন না হওয়ার সুযোগ নিচ্ছেন তিনি।

নায়েবুল ইসলাম বন্দর থানা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সাধারণ সম্পাদক এবং বন্দর থানা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি ইতোপূর্বে চট্টগ্রাম সিটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ছিলেন।

হারবার মাস্টার জহির ও রনির নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও তারা ধরেননি।

Comments

The Daily Star  | English

Heat stress jeopardises dairy industry

There are around 2.5 crore cows and 13 lakh to 14 lakh farmers in the country. Of the farmers, 3.5 lakh own large farms, according to the Dairy Farm Owners Association in Bangladesh.

1h ago