ঈদযাত্রা: লোকোমোটিভ সংকটে কমেছে বিশেষ ট্রেন

লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) সংকটের কারণে চট্টগ্রাম থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচলকারী ঈদের বিশেষ ট্রেনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে জানিয়েছে, চট্টগ্রাম থেকে এ বছর ঈদ উপলক্ষে শুধুমাত্র একটি জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানো হবে শুধুমাত্র চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটে।
গত বছর ঈদে যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ সামলাতে চার জোড়া বিশেষ ট্রেন পরিচালিত হয়েছিল চট্টগ্রাম থেকে। সেগুলো হলো—চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ রুটে একটি, চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটে দুটি এবং চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে একটি।
এবার বিশেষ ট্রেনের সংখ্যা কমে যাওয়ায় ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের জন্য ব্যাপক দুর্ভোগের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটের নিয়মিত যাত্রী এবং রিয়াজউদ্দিন বাজারের ব্যবসায়ী সৈয়দুল আলম বলেন, 'ঈদে এই রুটে প্রচুর যাত্রী চলাচল করে। প্রতি বছর রেলওয়ে এই রুটে দুই জোড়া বিশেষ ট্রেন চালায়। কিন্তু শুনেছি এবার শুধু এক জোড়া ট্রেন চলবে। যদি তাই হয়, তাহলে এবারের ঈদযাত্রা অনেক কষ্টের হবে।'
বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিবহন বিভাগ জানিয়েছে, ঈদের সময় অতিরিক্ত ট্রেন চালানোর জন্য তারা যান্ত্রিক বিভাগ থেকে প্রয়োজনীয় লোকোমোটিভ চেয়েছিল, কিন্তু পাননি।
রেলওয়ের ডেপুটি চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট তারেক ইমরান বলেন, 'আমরা যান্ত্রিক বিভাগকে ঈদের সময় বাড়তি ট্রেন পরিচালনার জন্য ইঞ্জিন বরাদ্দ দিতে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের চাহিদা অনুযায়ী ইঞ্জিন সরবরাহ করতে পারেনি।'
'ইঞ্জিন সংকটের কারণে ঈদে বিশেষ ট্রেনের সংখ্যা কমিয়ে আনতে হচ্ছে, যা বিদ্যমান ট্রেনগুলোর ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে,' তিনি যোগ করেন।
রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী সাজিদ হাসান নির্ঝর বলেন, '৩০০০ সিরিজের বেশ কয়েকটি লোকোমোটিভ প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের অভাবে ওয়ার্কশপে পড়ে আছে। প্রতিদিনের নির্ধারিত ট্রেন চালানোর জন্য ৬৫টি ইঞ্জিন প্রয়োজন হলেও বর্তমানে কেবল ৫২-৫৫টি ইঞ্জিন সচল রয়েছে,' তিনি বলেন।
লোকোমোটিভ মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ কেনার ক্ষেত্রে বিলম্বের কারণ জানতে চাইলে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় স্টোর বিভাগের চিফ কন্ট্রোলার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, 'অর্থ মন্ত্রণালয় এখনও মেরামত কাজের জন্য প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ দেয়নি। ফলে স্টোর বিভাগ প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ সংগ্রহ করতে পারেনি।'
এই সংকট দ্রুত সমাধান করা না হলে ঈদের যাত্রায় দুর্ভোগ আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
Comments