কুম্ভ: কেমন যাবে ২০২৩ সাল
এক রাজা ছিলেন, কোনো এক নাম না জানা দেশে। তার হাতে সবসময় পরা থাকতো একটি আংটি। ভালো-মন্দ যাই ঘটতো, তিনি সবসময় আংটিটির দিকে তাকাতেন এবং স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতেন। একদিন তার এক পারিষদ জিজ্ঞেস করলেন, কী আছে সেই আংটিটিতে? যার কারণে ভালো সময়েও উত্তেজিত হন না রাজা, মুষড়ে পড়েন না বিপদেও?
স্মিত হেসে রাজা তাকে আংটিটি দেখালেন। তাতে লেখা– 'এই সময়ও কেটে যাবে'।
রাশিফল অনেকে বিশ্বাস করেন, অনেকে করেন না। বিশ্বাস-অবিশ্বাসের জায়গাটা একান্ত ব্যক্তিগত। শুধু আগ্রহী পাঠকদের জন্য অ্যাস্ট্রোসেইজ.কম ও টাইমস অব ইন্ডিয়ার ২০২৩ সালের রাশিফল থেকে দ্য ডেইলি স্টারের এই উপস্থাপনা
জানুয়ারি থেকেই সকালে হাঁটাচলা, একটুখানি ব্যায়ামের অভ্যাস করে ফেলুন। খাবার প্লেটে সুস্বাদু নয়, সুস্বাস্থ্যকর খাবার রাখুন– কেন না কুম্ভ রাশির জন্য অসুস্থতার আভাস আছে বছরের শুরুতেই।
শরীরের স্বাস্থ্য ঠিক না রাখতে পারলে পকেটের স্বাস্থ্যও একই সঙ্গে তাল মিলিয়ে কমতে পারে। তাই পকেট রক্ষায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।
ওষুধ কেনার টাকা আগেভাগেই স্বাস্থ্যকর খাবারের পেছনে ব্যয় করুন। তাহলে শরীর ও পকেট মিলে মনের আবহাওয়া গুমোট করতে পারেব না।
এত সব বিষণ্নতার মধ্যে পরিবারে কোনো শুভ কাজের আভাস আপনার মনকে ভুলিয়ে রাখতে পারে।
বছরের প্রথমেই প্রেমের স্ফুলিঙ্গ উড়ে যাবে কুম্ভের দিকে। তাতে জ্বলেপুড়ে ছারখার হবেন নাকি আলোকিত হয়ে উঠবেন, তা আপনার ওপরই নির্ভর করবে।
স্বাধীন সত্তার কুম্ভকে শিখতে হবে অন্যের ওপর ভরসা করাও। প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলতে বিশ্বাস হবে প্রথম ধাপ। কে না জানে, 'বিশ্বাসে মেলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর'।
কুম্ভেরও এ বছর বিশ্বাসে মিলবে প্রেম, এমনটা আশা করাই যায়। কুম্ভসঙ্গীরা কালিকাপ্রসাদের সুরে গেয়ে ফেলুন, 'ভালোবাসা করে আশা/ তোমার অতল জল শীতল করবে মরুভূমি'।
২০২৩ সালে কুম্ভের রাশিফল থেকে জানা যায়, ১৭ জানুয়ারি তারিখে শনি মকর রাশির গৃহ ত্যাগ করে এসে বসবে কুম্ভের আঙিনায়। সারা বছর এখানেই বাস করার পরিকল্পনা তার। শনিদেব কুম্ভ রাশির জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবেন।
ভালোবাসার মাস ফেব্রুয়ারি মিষ্টি সব সম্পর্কে মিষ্টতা বাড়িয়ে দেবে। আগের মাসের তেতো ভাব এ সময়ে কেটে যাবে। বন্ধুদের সঙ্গে হৈ-হুল্লোড় আর সঙ্গীর সঙ্গে মনোরম সময় কাটাতে প্রস্তুত থাকেন। কে বলে বিয়ের আগেই সব প্রেম ফুরিয়ে যায়? এমন ভ্রান্ত ধারণা নস্যাৎ করে দিতে কুম্ভ রাশির দম্পতিরাই যথেষ্ট।
মার্চে কিছুটা হোঁচট খাবেন কুম্ভ। বারবার মনে হবে, 'যায় দিন ভালো যায়'। তবে মনে রাখবেন সেই রাজার কাহিনী। খারাপ-ভালো, কোনো সময়ই দীর্ঘস্থায়ী হয় না। যেমন হয় না মানুষের জীবনকাল।
এপ্রিলেও গ্রহের ওঠা-নামা জারি থাকবে। মেষ রাশির তৃতীয় ঘরে রবিরাজ যাত্রা করবেন। সূর্যের সঙ্গে রাহুর মিলনের ফলে একটি সূর্য-রাহু গ্রহণের সৃষ্টি হবে, যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়বে কুম্ভ রাশির ভাগ্যে। অযাচিত ঝুঁকি নেওয়া থেকে বিরত থাকা শ্রেয়।
ধার-দেনা এড়িয়ে চলুন, নয়তো মে মাসের দিকে ঋণের ভারে নুয়ে পড়বে কুম্ভের কাঁধ। বিপক্ষদলকে হারিয়ে যাবার ভালো সুযোগ আসবে। ঠিক দানটা ফেলতে শিখুন।
বিবাহিত দম্পতির জন্য সাবধানবাণী– সঙ্গীকে ভুলেও অবহেলা করবেন না। নয়তো বিয়ের নকশা খোলনলচে পালটে যাবার সুযোগ আছে তেইশের জুনে।
এরই জের ধরে জুলাই মাসেও বিবাহিত জীবনে দুশ্চিন্তা বিরাজ করতে পারে। একে অন্যকে বুঝতে না পারলে ভুল বোঝাবুঝি দিন দিন বেড়েই চলবে। তাই বলে অন্য কোথাও মন দিয়ে বসবেন না। মনের খেয়াল রাখুন। কেন না এই মেঘ শিগগিরই কেটে যাবে। বছরের শেষ দিকে দাম্পত্যজীবনে সুখের স্পর্শ লাগতে পারে। সব শীতের শেষে বসন্ত আসুক না আসুক, কুম্ভের জীবনে বসন্তের আগমন খুব বেশি দূরে নয়।
রামায়ণের সেই ৬ মাস ঘুমিয়ে আর ৬ মাস জেগে থাকা কুম্ভকর্ণ কুম্ভ রাশির ছিলেন না যদিও, তবে কুম্ভ রাশির জাতকদের ভাগ্য আধো জাগরণ, আধো ঘুমেই থাকবেন সারাটা বছর। তবে ঘুম তাড়ানোর কৌশলও আপনার হাতেই। জাগিয়ে তুলতে পারলেই পাবেন সফলতা।
তাই নিজস্ব প্রজ্ঞা ও চেতনায় জেগে থাকতে চেষ্টা করুন, প্রিয় কুম্ভ।
গ্রন্থনা: অনিন্দিতা চৌধুরী
Comments