গাজার মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় বিশ্বকে ‘জরুরি উদ্যোগ’ নিতে হবে: চীন

আরব ও মুসলিম অধ্যুষিত কয়েকটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। ছবি: এএফপি
আরব ও মুসলিম অধ্যুষিত কয়েকটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। ছবি: এএফপি

গাজার 'মানবিক বিপর্যয়' মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জরুরি উদ্যোগ নিতে হবে। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই আরব ও মুসলিম অধ্যুষিত দেশের কূটনীতিকদের এ কথা জানিয়েছেন।

আজ সোমবার বার্তাসংস্থা এএফপি এ তথ্য জানায়।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ), ইন্দোনেশিয়া, মিশর, সৌদি আরব ও জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা একটি সম্মেলনে যোগ দিতে এই সপ্তাহে বেইজিং সফর করছেন। চলমান ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘর্ষ নিরসন এই সম্মেলনের উদ্দেশ্য।

উদ্বোধনী বক্তব্যে ওয়াং অন্যান্য দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের উদ্দেশে বলেন, 'আসুন আমরা সবাই একত্রে কাজ করে গাজার পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটিয়ে যত দ্রুত সম্ভব মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনি।'

চীনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে ওয়াং ই ও অন্য নেতারা। ছবি: রয়টার্স
চীনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে ওয়াং ই ও অন্য নেতারা। ছবি: রয়টার্স

এই সভায় উপস্থিত ছিলেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুবরাজ ফায়সাল বিন ফারহান আল সাউদ, জর্ডানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি, মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শৌকরি, ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি, ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল-মালিকি ও ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) মহাসচিব হিসেইন ব্রাহিম তাহা।

ওয়াং বলেন, 'গাজায় মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।'

'গাজার পরিস্থিতি সমগ্র বিশ্বকে প্রভাবিত করেছে। এটি বিশ্ববাসীর ভালো ও মন্দের মাঝে পার্থক্য করার বোধকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে এবং মানবতাকে একেবারে তলানিতে নিয়ে গেছে', যোগ করেন তিনি।

বেইজিং এর শীর্ষ কূটনীতিক বলেন, 'আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জরুরি উদ্যোগ নিতে হবে। এই মর্মান্তিক ঘটনাগুলো যাতে আরও ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সে বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।'

৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামাসের হামলায় এক হাজার ২০০ মানুষ নিহত হয়। প্রায় ২৪০ ইসরায়েলি ও বিদেশী নাগরিককে জিম্মি করে হামাস। 

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হামাসকে নির্মূলের সংকল্প করে ইসরায়েল। প্রায় ৪৪ দিন ধরে চলছে গাজা উপত্যকায় ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের নিরবচ্ছিন্ন বিমান ও স্থল হামলা।

গাজার সরকার জানিয়েছে, এই প্রতিশোধমূলক হামলায় অন্তত ১৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। পশ্চিম তীরে হামাসের কোনো অস্তিত্ব না থাকলেও সেখানে থেমে নেই স্থল ও বিমান হামলা। ৭ অক্টোবরের পর থেকে সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন ২০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি। 

গত মাসে এই সংঘাত শুরুর পর থেকে চীনের কর্মকর্তারা যুদ্ধবিরতি ও পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে আনার আহ্বান জানিয়ে এসেছেন।

ঐতিহাসিক ভাবে চীন ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতিশীল। দেশটি এ অঞ্চলের দীর্ঘদিনের সংঘাত নিরসনে 'দুই-রাষ্ট্র' নীতিতে বিশ্বাস করে।

ওয়াং কূটনীতিকদের সোমবার জানান, 'আরব ও মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে চীনের সম্পর্ক ভাই ও বন্ধুর মতো'।

'আমরা আরব ও মুসলিম দেশগুলোর বৈধ অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার জন্য লড়েছি। আমরা সব সময়ই ফিলিস্তিনিদের বৈধ জাতীয় অধিকার-স্বার্থ রক্ষা ও পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে সমর্থন জানিয়েছি', যোগ করেন তিনি।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ও ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল-মালিকি। ছবি: রয়টার্স
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ও ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল-মালিকি। ছবি: রয়টার্স

তিনি বলেন, 'চীন এই সংঘাতে ন্যায়বিচার ও ন্যায্যতার পক্ষে থাকার অঙ্গীকার করছে।'

ওয়াং আরও জানান, এই সংঘাত শুরুর পর থেকেই বেইজিং 'সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চ্যানেলের মাধ্যমে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে এবং সবাইকে শান্তি ও আলোচনার পথ বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছে। কিন্তু একইসঙ্গে দেশটি বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেও অসংখ্য দেশকে শান্তি প্রতিষ্ঠার বৃহত্তর উদ্যোগে শামিল হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে'।

'আমরা আরব ও মুসলিম দেশের ভাই ও বোনদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যত দ্রুত সম্ভব গাজার যুদ্ধ নিরসনের জন্য কাজ করতে আগ্রহী', যোগ করেন ওয়াং।

 

Comments

The Daily Star  | English
AI-manipulated image of Shahbagh engineering students’ protest, DMP claims

Debunking DMP claim, frame by frame

The Daily Star photographer, who was present at the scene, described the incident as it unfolded

3h ago