ইউক্রেনে যুক্তরাজ্যের চ্যালেঞ্জার ট্যাংক ধ্বংস করেছে রাশিয়া

এ সপ্তাহের শুরুতে প্রথম চ্যালেঞ্জার ট্যাংক ধ্বংসের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও দ্বিতীয়টির ব্যাপারে এখনো কিছু জানায়নি লন্ডন। এ বিষয়ে মন্তব্য চাওয়া হলেও তাদের কাছ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি।
যুক্তরাজ্যে নির্মিত অত্যাধুনিক ভারী ট্যাংক চ্যালেঞ্জার টু। ফাইল ছবি: এএফপি
যুক্তরাজ্যে নির্মিত অত্যাধুনিক ভারী ট্যাংক চ্যালেঞ্জার টু। ফাইল ছবি: এএফপি

ইউক্রেন যুদ্ধে অস্ত্র সহযোগিতার অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্য ইউক্রেনকে ১৪টি অত্যাধুনিক চ্যালেঞ্জার ট্যাংক দিয়েছিল। রাশিয়া এক সপ্তাহের মধ্যেই দুইটি চ্যালেঞ্জার ট্যাংক ধ্বংস করেছে বলে দাবি জানিয়েছে।

রুশ গণমাধ্যম তাস গতকাল শনিবার ঝাপোরিঝঝিয়া অঞ্চলের স্থানীয় নেতার বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে।

রুশ সমর্থিত সংগঠন 'উই আর টুগেদার উইথ রাশিয়া'র নেতা ভ্লাদিমির রোগভ বলেন, 'ট্যাংকটি অকার্যকর করতে রুশ করনেট ক্ষেপণাস্ত্রের একটি আঘাতই যথেষ্ট ছিল'।

রোগভ বলেন, 'ব্রিটিশ ট্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে যেকোনো সময়, যেকোনো উপায়ে হামলা চালানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।' দ্বিতীয় ট্যাংকটি রুশ বিমানবাহিনী ধ্বংস করেছে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।

রোগভ বলেন, 'ব্রিটিশদের সরবরাহ করা অস্ত্র ও সরঞ্জাম অন্য যেকোনো পশ্চিমা সহায়তার মতোই ভঙ্গুর'।

তবে কোন সূত্র থেকে এই তথ্য পেয়েছেন, তা জানাননি রোগভ।

এখনো কিয়েভ বা মস্কো ট্যাংক ধ্বংসের বিষয়টি নিয়ে কোন আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি।

এ সপ্তাহের শুরুতে প্রথম চ্যালেঞ্জার ট্যাংক ধ্বংসের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও দ্বিতীয়টির ব্যাপারে এখনো কিছু জানায়নি লন্ডন। এ বিষয়ে মন্তব্য চাওয়া হলেও তাদের কাছ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি।

যুক্তরাজ্যের অপর ট্যাংকটিও করনেট ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ধ্বংস হয়। করনেট সিসটেম হচ্ছে একধরনের ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, যা একজন মানুষ কাঁধে বহন করে যুদ্ধক্ষেত্রের যেকোনো জায়গায় নিয়ে যেতে পারেন। একইসঙ্গে এটিকে যানবাহনের সঙ্গেও সংযুক্ত করা যায়।

জেলেনস্কিকে ১৪টি চ্যালেঞ্জার ট্যাংক পাঠান রিশি সুনাক। ছবি: এএফপি
জেলেনস্কিকে ১৪টি চ্যালেঞ্জার ট্যাংক পাঠান রিশি সুনাক। ছবি: এএফপি

এই ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহারে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূর থেকেও বড় বড় ট্যাংক ও অন্যান্য সাঁজোয়া যান ধ্বংস করা সম্ভব।

বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করনেট ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে চ্যালেঞ্জার ট্যাংক ধ্বংসের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ট্যাংকটি পুরোপুরি জ্বলে গেছে।

সে সময় যুক্তরাজ্যের নবনিযুক্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্র্যান্ট শ্যাপস বলেন, একটি সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে 'উপকরণের ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকতে পারে' এবং লন্ডন এ বিষয়টি 'স্বীকার করছে'। তিনি সাংবাদিকদের আরও জানান, কিয়েভকে (কোনো ক্ষয়ক্ষতির ক্ষেত্রে) বদলি বা বাড়তি ট্যাংক পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা নেই যুক্তরাজ্যের।

করনেট সিস্টেমকে মানুষ কাঁধে বহন করে যুদ্ধক্ষেত্রের যেকোনো জায়গায় নিয়ে যেতে পারে। ছবি: সংগৃহীত
করনেট সিস্টেমকে মানুষ কাঁধে বহন করে যুদ্ধক্ষেত্রের যেকোনো জায়গায় নিয়ে যেতে পারে। ছবি: সংগৃহীত

এ বছরের শুরুতে পশ্চিমের দেশগুলো ইউক্রেনকে বড় আকারের সামরিক সহায়তার ঘোষণা দেয়, যার মধ্যে যুক্তরাজ্যের ১৪টি চ্যালেঞ্জার টু ট্যাংকও অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি ছিল জার্মানিতে নির্মিত লেপার্ড ২ ট্যাংক। রাশিয়ার বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা চালানোর জন্য এসব উপকরণ সরবরাহ করা হয়। অবশেষে জুনের শুরুতে এই হামলা শুরু করে কিয়েভ।

তবে যুদ্ধক্ষেত্রে তেমন কোনো সাফল্য দেখাতে পারেনি ইউক্রেনের বাহিনী। ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে এই তথাকথিত পালটা হামলায় কিয়েভে ৬৬ হাজার সেনা ও ৭ হাজার ৬০০ সামরিক উপকরণ হারিয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু এই তথ্য দেন।

 

Comments