গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার ঠেকাতে হবে

দুর্বল নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও সহজলভ্যতার কারণে দীর্ঘসময় কোনো ওষুধের যথেচ্ছ ব্যবহার মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। অভিজ্ঞতা বলে, আমাদের দেশে অনেকেই নানান শারীরিক সমস্যায় সাধারণত ডাক্তারের পরামর্শ না নিয়েই ওষুধ খেয়ে থাকেন। এসব ওষুধের তালিকায় কয়েকদিন আগেও শীর্ষে ছিল অ্যান্টিবায়োটিক।
ছবি: সংগৃহীত

দুর্বল নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও সহজলভ্যতার কারণে দীর্ঘসময় কোনো ওষুধের যথেচ্ছ ব্যবহার মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। অভিজ্ঞতা বলে, আমাদের দেশে অনেকেই নানান শারীরিক সমস্যায় সাধারণত ডাক্তারের পরামর্শ না নিয়েই ওষুধ খেয়ে থাকেন। এসব ওষুধের তালিকায় কয়েকদিন আগেও শীর্ষে ছিল অ্যান্টিবায়োটিক।

সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ফার্মাকোলজিতে 'প্রোটন পাম্প ইনহিবিটরস (পিপিআই)' নামে দেশে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া ওষুধ নির্বিচারে ব্যবহার করা হচ্ছে। এটি পাকস্থলীতে অ্যাসিডের পরিমাণ কমাতে কাজ করে। সাধারণ ভাষায় একে বলে 'গ্যাসের ওষুধ'। এটি এখন চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া ওষুধের তালিকায় শীর্ষে।

সমাজের দরিদ্ররা গ্যাস্ট্রিক ও পেটের সমস্যায় বেশি আক্রান্ত হন, এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে যে ওষুধগুলো কাজে লাগে, তা দেশের যে কোনো এলাকাতেই যথেষ্ট সহজলভ্য। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে ডায়রিয়া পর্যন্ত পেটের যে কোনো রোগের জন্য সাধারণত মানুষ গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেয়ে থাকেন। দীর্ঘদিন এর ব্যবহার শরীরে অপূরণীয় ক্ষতি করতে পারে।

সম্প্রতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) পিপিআইয়ের অতিরিক্ত ব্যবহার নিয়ে সেমিনারে এ ধরনের ওষুধ সেবনের নেতিবাচক প্রভাবের বিষয়ে আলোচনা হয়। জানা যায় ভয়ঙ্কর তথ্য। গ্যাস্ট্রিক বা পাকস্থলীর ক্যানসারের প্রায় ৪৫ শতাংশ পিপিআইয়ের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে হয়ে থাকে।

দেশে প্রচলিত ৫ ধরনের পিপিআই ওষুধের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার জন্য চলতি মাসের শুরুতে রেবিপ্রাজলের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।

আমরা মনে করি, চিকিৎসকের পরামর্শপত্রের বাইরে ওষুধ বিক্রির ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপের সময় এসেছে। আমাদের জাতীয় ওষুধনীতিতে প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি নিষিদ্ধের কথা বলা আছে। কিন্তু, প্রতিদিনই এর লঙ্ঘন হচ্ছে।

যে ওষুধ খুব সাধারণ অসুখের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, তা অবশ্যই নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনতে হবে। বাস্তবতা হলো—দেশের সব মানুষের যথেষ্ট যোগ্যতাসম্পন্ন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার উপায় নেই। ফলে, তারা বিকল্প চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। তাদের এ দুর্দশার সমাধান করতে হবে।

এ ছাড়াও, দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারে ক্ষতি হয় এমন ওষুধ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে জনসচেতনতামূলক প্রচারণা শুরু করতে হবে। প্রত্যেককে এটা জানানো প্রয়োজন যে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেলে তা তাদেরকে ক্যানসারের মতো মারাত্মক রোগের ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

Horrors inside the Gaza genocide: Through a survivor’s eyes

This is an eye-witness account, the story of a Palestinian in Gaza, a human being, a 24-year-old medical student, his real human life of love and loss, and a human testimony of war crimes perpetrated by the Israeli government and the military in the deadliest campaign of bombings and mass killings in recent history.

23h ago