সংস্কারের ২ দিন পর উঠে গেছে সড়কের কার্পেটিং, তদন্তে দুদক

রাস্তা সংস্কারের কাজ শেষ হওয়ার ২ দিন পরেই কার্পেটিং উঠতে শুরু করে। সংস্কার কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। 
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার কুমড়িহাট বাজার-হাজীগঞ্জ সড়কের ৩ কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার ২ দিন পরেই কার্পেটিং উঠে যায়। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

রাস্তা সংস্কারের কাজ শেষ হওয়ার ২ দিন পরেই কার্পেটিং উঠতে শুরু করে। সংস্কার কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। 

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার কুমড়িহাট বাজার-হাজীগঞ্জ সড়ক সংস্কারে এ অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ৩ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের রংপুর জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালক আবু হেনা আশিকুর রহমানের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের একটি দল সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। দুদক দলের সঙ্গে সড়ক ও জনপথ বিভাগের একজন নির্বাহী প্রকৌশলী উপস্থিত ছিলেন। 

তারা সংস্কার হওয়া সড়কটিতে ব্যবহৃত পাথর ও বিটুমিনের নমুনা সংগ্রহ করেন। এ সময় লালমনিরহাট এলজিইডি'র প্রকৌশলীসহ ঠিকাদার উপস্থিত ছিলেন।

ছবি: সংগৃহীত

দুদকের রংপুর জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালক আবু হেনা আশিকুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা তদন্ত শুরু করি। ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয় লোকজনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। আমরা সড়কটিতে ব্যবহৃত পাথর ও বিটুমিনের নমুনা সংগ্রহ করেছি। সড়কটি ঘুরে দেখেছি।'

তিনি আরও বলেন, 'সংগ্রহ করা পাথর ও বিটুমিনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে শিগগিরই একটি প্রতিবেদন তৈরি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।'

এলজিইডি সূত্র জানায়, সরকারি বরাদ্দে পর্যায়ক্রমিক রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্পের আওতায় ৩ কিলোমিটার সড়কটি সংস্কার করা হয়। গত ২৫ এপ্রিল সড়কটির সংস্কার কাজ সম্পন্ন হয়। সংস্কার করতে মেসার্স কানন এন্টারপ্রাইজ নামে স্থানীয় এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এলজিইডির চুক্তি মূল্য ছিল ৭০ লাখ ৬৫ হাজার ১১৪ টাকা। কাজটির বাজেট মূল্য ছিল ৭৪ লাখ ৩৬ হাজার ৯৬৩ টাকা।

স্থানীয় বাসিন্দা মাহবুব খান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি গত ২৮ এপ্রিল দুদকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। দুদক দল সড়কটি সংস্কার কাজের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত করছে। 

তিনি আরও জানান, সড়কটি সংস্কারে নিম্নমানের পাথর ও বিটুমিন ব্যবহার করা হয়েছে। কাজ শেষ হওয়ার দুদিন পরেই কার্পেটিং উঠতে শুরু করে। সড়কটির অনেক স্থানে রোড কাটিং ছাড়াই কার্পেটিং করা হয়েছে। ২৫ মিলিমিটার কার্পেটিং করার কথা থাকলেও ২১-২২ মিলিমিটার কার্পেটিং করা হয়েছে।

তিনি বলেন, 'দুদক কর্তৃপক্ষ আমাদের নিশ্চিত করেছে যে এই অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।'

জয়নাল আবেদীন নামে আরেকজন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা সড়কটি সংস্কার কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির সাক্ষ্য দিয়েছি দুদক দলকে। আমাদের অনেক হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা ভীত হইনি। সাহস করে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছি।'

ঘটনাস্থলে উপস্থিত আদিতমারী উপজেলা এলজিইডি'র প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শাহ ওবায়দুর রহমান এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সড়কটি সংস্কারে অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে গত ২৭ এপ্রিল দ্য ডেইলি স্টার বাংলায় একটি সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল।
 

Comments