লালমনিরহাটে আ. লীগ নেতার বিরুদ্ধে ৩ সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ
লালমনিরহাটে ৩ জন সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আজিজার মণ্ডল ও তার ছেলেদের বিরুদ্ধে।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের সাকোরপাড় এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় সাংবাদিকদের ক্যামেরাও ভাঙচুর করা হয়।
আজিজজার মন্ডল পঞ্চগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
আহত ৩ জন হলেন-দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার লালমনিরহাটের জেলা প্রতিনিধি আব্দুর রব সুজন, যমুনা টেলিভিশনের লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি আনিসুর রহমান ও এখন টেলিভিশনের লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি মাহফুজুল ইসলাম বকুল।
স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
আহত সাংবাদিকদের অভিযোগ, পঞ্চগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আজিজার মণ্ডলের ছেলে সুলতান মণ্ডল এক নারীকে তুলে নিয়ে গেছেন বলে খবর পেয়ে তারা ঘটনার তদন্তে যান। সেখানে গেলে আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজার মণ্ডল এবং তার ৩ ছেলে সুলতান মণ্ডল, সাহেদ মণ্ডল, শাহজাহান মণ্ডল ও তাদের সহযোগীরা তাদের ওপর হামলা করে।
এ সময় লাঠি ও লোহার রড দিয়ে তাদের পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়। এছাড়া যমুনা টেলিভিশনের সাংবাদিক আনিসুর রহমানের ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়।
আব্দুর রব সুজন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আজিজার মণ্ডলের ছেলে সুলতান মণ্ডল জোরপূর্বক একজনের স্ত্রীকে তুলে নিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় আমরা ওই এলাকায় সংবাদ সংগ্রহে গিয়েছিলাম। ঘটনার তদন্ত করার সময় তারা আমাদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়।'
অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা আজিজার মন্ডলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি সাংবাদিকদের মারধর করিনি। আমি সাংবাদিকদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছি।'
'আমার ছেলেরা যদি কোনো অন্যায় করে, তাহলে তাদের শাস্তি হবে,' বলেন তিনি।
লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ প্রশাসক অ্যাডভোকেট মতিয়র রহমান শুক্রবার রাতে হাসপাতালে আহত সাংবাদিকদের দেখতে যান।
তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ ঘটনায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আজিজার মণ্ডলের সংশ্লিষ্টতা থাকলে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।'
জানতে চাইলে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. ওয়াহিদা শুক্রবার রাত ৮টায় ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আহত সাংবাদিকদের মধ্যে আনিসুর রহমান বেশি আহত হয়েছেন। তার মাথা ফেটে গেছে ও বাম হাতে ফ্র্যাকচার হয়েছে। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন আছে। মাহফুজুল ইসলাম বকুল বাম হাতে আঘাত পেয়েছেন এবং আব্দুর রব সুজন শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন।'
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।'
'আমরা অভিযুক্তদের আটক ও ক্যামেরা উদ্ধারের চেষ্টা করছি,' বলেন তিনি।
Comments