৬ বছর পর ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কে আমিরাত
প্রতিবেশী ইরানের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাত কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল ৬ বছরেরও বেশি সময় আগে। তেহরানে সৌদি দূতাবাসে বিক্ষোভকারীদের হামলার প্রতিবাদে ছিন্ন করেছিল মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।
গতকাল রোববার সংযুক্ত আরব আমিরাতের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, ইরানে নিযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত সাইফ মোহাম্মদ আল জাবি খুব শিগগির তেহরানে ফিরে যাবেন।
এ প্রসঙ্গে আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের মাধ্যমে ২ দেশের এবং বৃহত্তর আঞ্চলিক স্বার্থ রক্ষা পাবে।
২০১৬ সালে সৌদি আরব জনপ্রিয় শিয়া নেতা নিমর আল-নিমরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করলে এর প্রতিবাদে তেহরানে বিক্ষোভকারীরা সৌদি দূতাবাসে হামলা চালায়।
এই হামলার প্রতিবাদে ইরান থেকে কূটনৈতিক কার্যক্রম গুটিয়ে নেয় আরব আমিরাত।
আরব আমিরাতের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহে আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আল নাহিয়ান ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমিরআবদোল্লাহিয়ান টেলিফোনে পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করেন।
এরপর আমিরাতের রাষ্ট্রদূতের তেহরানে যাওয়ার বিষয়টি আলোচনায় আসে।
বেশ কয়েক বছরের বৈরী সম্পর্কের পর আরব আমিরাত ২০১৯ সাল থেকে ইরানের সঙ্গে আবারো যোগাযোগ শুরু করে। গত বছর সৌদি আরবও আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে জোর দেয়।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো এমন সময়ে এ ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে যখন বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে তেহরানের ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তিকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা চলছে।
মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলো মনে করে, এই চুক্তিটি ত্রুটিপূর্ণ। কারণ, এতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্প বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলা ছিল না।
রিয়াদ ও আবুধাবি চায় তেহরান এ অঞ্চলে তার আগ্রাসী উদ্যোগ বন্ধ করুক। একইসঙ্গে, তারা ইরানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকেও মনোযোগ দিতে ইচ্ছুক।
ইরানের সঙ্গে আমিরাতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক প্রায় ১০০ বছরের পুরনো। দীর্ঘদিন ধরে অন্য দেশের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য আরব আমিরাতের ওপর নির্ভরশীল ইরান।
চলতি মাসের শুরুতে মধ্যপ্রাচ্যের অপর দেশ কুয়েত ২০১৬ সালের পর প্রথমবারের মতো ইরানে নতুন রাষ্ট্রদূতের নিয়োগ দিয়েছে।
আরব আমিরাত ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করার পর অন্যান্য দেশও ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে উদ্যোগ নেয়। যুক্তরাষ্ট্রের 'আব্রাহাম চুক্তি'র আওতায় বাহরাইন, সুদান ও মরক্কো ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে।
Comments